রেইনবো ফ্লিকে দুরন্ত গোল ভিনিসিয়াসের, তবু অ্যাডভান্টেজে সিটি, ড্র করে চাপে রিয়াল
মঙ্গলবার রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি এবং রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগ অবশ্য শেষ হল ১-১ ড্র হয়ে। ঘরের মাঠে জিততে না পারায় কিছুটা অস্বস্তিতে থাকল পড়ে গেলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনসেলোত্তি। বিশেষ করে এগিয়ে গিয়েও লিড ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল, সেটাই বড় অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উল্টোদিকে রিয়ালের ঘরের মাঠে ড্র করে ফেরাটা নিঃসন্দেহে বড় অক্সিজেন ম্যান সিটির কাছে। দ্বিতীয় লেগে নিজেদের ঘরের মাঠে ইতিহাদে ঝড় তোলার অপেক্ষায় থাকবে ম্যান সিটি।
রিয়াল অবশ্য চেনা ছন্দে ছিল না। বরং ম্যান সিটির দাপটই ছিল বেশি। ৫৬ শতাংশ বলের দখল রেখেছিল সিটি। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১০টি শটের ছ’টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, রিয়াল ১৩টি শটের মধ্যে সাতটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। দুই দলের গোলকিপার যদি বেশ কিছু ভালো সেভ না করতেন, তবে হয়তো গল্পটা অন্য হতে পারত।
ম্যাচের শুরুতে আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায়া কেভিন ডি’ব্রুইন চাপে ফেলে কুর্তোয়াকে। তবে কুর্তোয়াও কম যান না। নিজের স্টাইলে বল বাঁচিয়ে নেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর রড্রির দূরপাল্লার শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ দক্ষতায় বাঁচান তিনি। এর পরেও বেশ কিছু ভালো সেভ করেছেন কুর্তোয়া। তবে ২০ মিনিটের মধ্যে সিটির যত আক্রমণ ছিল করা হয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকে প্রথমার্ধে আর জ্বলে উঠতে পারেনি ম্যাঞ্চেস্টার সিটি।
বরং ১৮ মিনিটের পর থেকে ধীরে ধীরে খেলায় ফেরে রিয়াল। করিম বেঞ্জেমা ভিনিসিয়াস জুনিয়রের মেলবন্ধনে আক্রমণে উঠতে শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ। ৩৬তম মিনিটে তাঁর ফলও পায় স্প্যানিশ ক্লাবটি। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শট জালে জড়ান ভিনিসিয়াস। লুকা মদ্রিচের কাছ থেকে বল পেয়ে তারকা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে পাস দিয়েছিলেন এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। এর পর ফাঁকা জায়গা করে নিয়ে সুযোগ বুঝে ভিনিসিয়াস যে শট নেন, সেটা থামানোর সাধ্য ছিল না তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থ এডারসনের। রেইনবো ফ্লিকে চোখধাঁধানো গোল। প্রথমার্ধে খেলার ফল ছিল ১-০ রিয়ালের পক্ষে।
তবে হাল ছাড়েনি সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে গোলশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন ডি’ব্রুইনরা। তবে রিয়ালও কাউন্টার অ্যাটাকে উঠছিল। তবে তারা বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজেদের গোল ধরে রাখতে। যে কারণে তারা কিছুটা ডিফেন্সিভও হয়ে পড়ে।
সেই সুযোগে ৬৭তম মিনিটে ডি’ব্রুইন গোলশোধ করেন। ডি-বক্সের বাইরে থেকেই জোরালো শটে ১-১ করেন ডি’ব্রুইন। গুন্দোয়ানের কাছ থেকে বল পেয়ে সোজা জালে জড়ান তিনি। কোনও ভুল করেননি।
শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত ফের রিয়ালের আধিপত্য থাকলেও গোলের দেখা মেলেনি তাদের। অসাধারণ নৈপুণ্যে লস ব্লাঙ্কোদের আক্ষেপ বাড়ান এদারসন। জার্মান মিডফিল্ডার ক্রুসের ক্রসে ৭৮তম মিনিটে বেনজেমার হেড ফিরিয়ে দেন তিনি। বদলি নামা আহেলিয়া চুয়ামেনির নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে নেওয়া দূরপাল্লার জোরালো শটও ফাঁকি দিতে পারেনি তাকে।
গত মরশুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতেও মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল আর সিটি। সেই মরশুমে সিটিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল রিয়াল। এমন কী তারা সে বার শিরোপাও জিতেছিল। ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে তাই রিয়ালের বিরুদ্ধে বদলা নিতে মরিয়া থাকবে ম্যান সিটি। আগামী ১৮ মে ফের মুখোমুখি হবে দুই দল।
For all the latest Sports News Click Here