‘রূপঙ্করের মতোই যশের বিচার করুন’, ‘কালো ছেলে’ বিতর্কে সুজয়-জয়জিতের নিশানায় যশ
‘চিনে বাদাম’ ছবি মুক্তি পেতে চলেছে আগামী ১০ই জুন। তবে ছবি মুক্তির মাত্র দিন কয়েক আগেই একটি মাত্র টুইট বার্তা দিয়ে এই প্রোজেক্ট থেকে সবরকম সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন ছবির নায়ক যশ দাশগুপ্ত। কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, ‘ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্স’-এর কারণে এই সিদ্ধান্ত। যদিও নায়কের এই টুইট থেকে কার্যত আকাশ থেকে পড়েছেন ছবির নায়িকা তথা প্রযোজক এনা সাহা। এবং পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক।
রূপঙ্কর বাগচির পর এবার যশ দাশগুপ্তকে নিয়ে সরগরম টলিপাড়া। একের পর এক ব্যক্তিত্ব মুখ খুললেন যশ দাশগুপ্তর বিরুদ্ধে। শুরুটা করেন প্রযোজক রাণা সরকার, এরপর যশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ও জয়জিত বন্দ্যোপাধ্য়ায়রা। কেন্দ্রে যশের একটি মন্তব্য। আসলে যশের প্রোজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ানো সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরিচালক এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘ছবিতে কারুর (পড়ুন যশের) কালো ছেলের নাচ যদি পছন্দ না হয় তাহলে আমি কি করতে পারি।’
যশ ‘চিনে বাদাম’ প্রোজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঠিক আগের দিন (গত শনিবার) মুক্তি পেয়েছিল এই ছবির টাইটেল ট্র্যাক। সেখানেই নাচতে দেখা গিয়েছে এক ‘কালো’ যুবককে। সেই নিয়েই নাকি আপত্তি যশের। পরিচালক মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকেও জানান, যশ টাইটেল ট্র্যাক দেখবার পর প্রশ্ন করেছিলেন, ‘হুজ দ্যাট ব্ল্যাক গাই?’ কেন তাঁকে এই ছবির টাইটেল ট্র্যাকে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্নও ‘সোয়েটার’ পরিচালকের কাছে রাখেন যশ।
যশের এই মন্তব্যকে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক’ বলেই মনে করছে নেটপাড়া। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুজয়প্রসাদ চট্টোপাদ্য়ায়। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘ছবির একটি দৃশ্যে ‘কালো লোক’কে ব্যবহার করায় নাকি যশ দাশগুপ্ত প্রচারে অংশ নেননি! এই আচরণকে কি সৃজনশীল সমস্যা বলা যায়?’ এখানেই থেমে না থেকে সংযোজন, ‘আমি আশা করি #নেটিজেনরা তাঁর প্রতি রূপঙ্করের মতোই বিচার করবেন।’ বিনোদন জগতের সকলকে এই নিয়ে একজোট হওয়ার ডাকও দেন তিনি।
যদিও সুজয়ের এই মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানান পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘তোমাকে একজন সচেতন মানুষ ভাবতাম এক সময়… আগে অনেক কিছু পড়ে অবাক হয়েছি, আজ হতবাক হলাম তাই লিখছি…নেটিজেনরা রূপঙ্করের মতো ন্যায়বিচার করবে। সিরিয়াসলি!!! প্রথমত এতে প্রমান হয় রূপঙ্করের সঙ্গে যা ঘটছে তার মানে তা তুমি সমর্থন কর, রূপঙ্কর বাজে বকেছে তাই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই নেই, তার জন্যও লোকে যেটা করছে সেটা অত্যন্ত অসভ্যতার পরিচয়। আর তুমি রূপঙ্কেরর সঙ্গে যশের তুলনা টেনে নিজের ব্যক্তিগত অপছন্দ চাপিয়ে দিচ্ছো এবং পাবলিককে উস্কানি দিচ্ছও যশকে বয়কট করার জন্য।’
সুজয় প্রসাদ একা নন, যশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অভিনেতা জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, ‘যশও নেই প্রতিপত্তিও নেই। হায় রে নায়ক। তাঁর আবার কালো ছেলেকে নিয়ে বড় সমস্যা!’ গোটা বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের তরফে বারবার যশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও উত্তর মেলেনি। গত শুক্রবার পর্যন্ত ‘চিনে বাদাম’-এর প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন যশ। আচমকা হলটা কী! পরিচিতমহলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে যশ জানিয়েছেন, পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থা তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত অপেশাদার আচরণ করেছে। ছবির কোনও প্রমোশান্যাল ভিডিয়ো তাঁকে দেখানোর প্রয়োজন বোধ করেনি। এমনকী মুক্তির তারিখ বা সময় পর্যন্ত জানানোর দরকার মনে করেনি। ছবির প্রচার কৌশল নিয়েও খুশি ছিলেন না যশ। তাই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত।
এতকিছুর পরেও যশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এখনও সমস্যা মিটিয়ে নিতে আগ্রহী প্রযোজক এনা সাহা। জারেক এন্টারটেনমেন্টের পরবর্তী ছবির নায়কও যশ। পরিচালনায় সেই শিলাদিত্য মৌলিক। তবে এই বিতর্কের পর ‘মাস্টার মশাই আপনি কিচ্ছু দেখেননি’র ভবিষ্যত কী তাও অজানা!
For all the latest entertainment News Click Here