রাহুলের নিশানায় ব্যোমকেশ-দেব! ‘মানিক-ঋতুর বেলায় আঁতেল বাঙালি চুপ কেন’ পালটা রাণা
দেব হচ্ছেন ব্যোমকেশ। এখবর তো এখন পুরনো। গত ২৮ জানুয়ারি টালিগঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ১৭ বছ পূর্ণ করেছেন দেব অধিকারী। আর সেই শুভক্ষণেই তিনি নিজের ব্যোমকেশ সাজার কথা ঘোষণা করেন। একথা জানার পরই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ব্যক্তিগত মেসেজে শুভেচ্ছা বার্তার বন্যা বয়ে যায়। তবে দেবের ব্যোমকেশ সাজায় খুশি নন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ব্যোমকেশ দেব’কে নিয়ে রাহুলের গলায় ছিল কিছুটা তীর্যক সুর।
অভিনেতা, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘খুশবন্ত সিংয়ের জোক : দুটো পাঞ্জাবি দাবা খেলছে, আর বাঙালির জোক : দেব ব্যোমকেশ।’ রাহুলের এই মন্তব্যে যে বিদ্রুপ রয়েছে, তা বুঝতে হয়ত কারোরই অসুবিধা হয় না।
রাহুলের এই ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যে দেব নিজে মুখ না খুললেও পাল্টা তোপ দাগেন প্রযোজক রাণা সরকার। ‘দেব ব্যোমকেশ ও আঁতেল বাঙালির হাহাকার’ শিরোনাম দিয়ে রাণা ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, সত্যজিৎ রায় ঋতুপর্ণ ঘোষও দুটি খাজা মানের ব্যোমকেশ বানিয়েছেন। চিড়িয়াখানায় মানিকবাবু উত্তমকুমারের ক্যারিশম্যাটিক স্ক্রিন প্রেজেন্সকে ব্যবহার করে দর্শকদের তবু স্বস্তি দিয়েছেন। রাণার প্রশ্ন ঋতুপর্ণ ঘোষ যখন সুজয় ঘোষকে ব্যোমকেশ বানালেন, তখন আঁতেল বাঙালি কেন টু-শব্দ করেননি? তাঁর কথায় ওই দুটি ব্যোমকেশ গোত্রীয় সিনেমা হলেও শিল্প নয়। রানার কথায়, টেলিভিশনে ব্যোমকেশ নিয়ে তিনিই বেশি কাজ করেছেন, তবে বাঙালি যেভাবে ব্যোমকেশকে চান, তা আঁতেল ফিল্মি বন্ধুরা বুঝতে পারেননা। রাণার কথায়, অরিন্দম শীলের বানানো ব্যোমকেশ নিয়ে সিনেমাগুলিই সর্বশ্রেষ্ঠ। অ়ঞ্জন দত্তের ব্যোমকেশ নিয়ে রাণা সরকার বলেছেন, একটা দুটো বাদ দিলে বাকিগুলোতে ফাঁকিবাজির ছাপ রয়েছে। তাঁর মতে সৃজতও দুর্গ রহস্য বানাতে পারেননি। রাণা সরকার মনে করেন ব্যোমকেশ হিসাবে বাঙালি আবির চট্টোপাধ্যায়কেই দেখতে চান।
এখানেই শেষ নয়, ওয়েব প্ল্যাটফর্মে ব্যোমকেশ সিরিজ নিয়ে কারোর নাম না করে রাণা বলেন, ‘অভিনয়ে আপনি নাসিরুদ্দিন শাহ হতে পারেন, পাবলিক ইমেজে আপনি মেয়েদের বুকে আলোড়ন তুলতে পারেন, কিন্তু ওই যে ব্যোমকেশের যে আদর্শ চেহারা বাঙালি কল্পনা করে সেটা শুধু আবিরেরই আছে’। তবে রাণা তাঁর মন্তব্যে কারোর নাম না করলেও তিনি যে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কথা বলেছেন বুঝে নিতে অসুবিধা হয়নি নেট নাগরিকদের।
দেবের ব্যোমকেশ হওয়া নিয়ে লোকজনের কটাক্ষ প্রসঙ্গে রাণা সরকার লিখেছেন, ‘এমতবস্থায় দেব ব্যোমকেশের চরিত্র করবে বলে কিছু লোকের বুক ফেটে যাচ্ছে, সেই কষ্টে দুছিলিম তামাক বেশি খাচ্ছে, দক্ষিণের কলোনি পাড়া বা সুব্রত সেনের ষ্টুডিওতে শরদিন্দু পলিটব্যুরোর মিটিং বসছে। দেব ব্যোমকেশ ? শরদিন্দু জানলে কী করতেন ? দেব ব্যোমকেশ হলে জনজাগরন ঘটাতে হবে , revolution knocking at my door, যুবতীর কাছে টেক্সট যাচ্ছে ‘আরেব্বাল কি সব্বনাশ দেব ব্যোমকেশ হচ্ছে, ফাঁকা আছিস আয় লেনিন বোঝাবো।’
রাণার কথায়, ‘দেব আপ্রাণ পরিশ্রম করে ব্যোমকেশ চরিত্র রূপায়িত করার চেষ্টা করবে, দুর্গ রহস্য সর্বকালের সর্বোচ্চ বক্স অফিস গ্রসার হবে, এবং দেবকে ব্যোমকেশ হিসেবে সুজয় ঘোষ, উত্তমকুমার এবং গরিবের আল পাচিনো ওটিটি সুপারস্টারের থেকে অনেক বেশি ভালো লাগবে বড় পর্দায়। আঁতেল বাঙালি হাহাকার করুক, বিপ্লব আসুক না আসুক আপামর বাঙালি দর্শক ব্যোমকেশ দেখবে, বাংলা সাহিত্যের সম্পদ শরদিন্দুর অমর সৃষ্টিকে সর্ব বৃহৎ দর্শকের কাছে পৌঁছে দেবে দেব ।’ এভাবেই নিজের দীর্ঘ পোস্টে ব্যোমকেশ দেবের জয়জয়কার করেছেন রাণা।
তবে যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই দেব আপাতত নিরবেই মুচকি হাসছেন। এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও মন্তব্যেরই জবাব দেননি।
For all the latest entertainment News Click Here