‘যা দেখি সেটা কতটা সত্যি? প্রশ্ন আছে’ পঞ্চায়েত ভোটে মৃত্যুমিছিল নিয়ে মত অদিতির
বছরের শুরুতেই কেবল নয়, গানে গানে গোটা বর্ষ যাপনের পরিকল্পনা অদিতি মুন্সির। বারো গানে বর্ষ যাপন শুরু করেছেন সারেগামাপা খ্যাত গায়িকা। তাঁর কীর্তনের সুরে মুগ্ধ গোটা বাংলা। কিন্তু হঠাৎ এই বারো গানে বর্ষ যাপনের ভাবনা কেন? রাজনীতি, প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব সামলে গানের রওয়াজে সমস্যা হয় না? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি HT বাংলাকে।
হঠাৎ বারো গানে বর্ষ যাপন কেন?
অদিতি: এটা আমার নিউ ইয়ার রেজোলিউশন বলতে পারেন। এতদিন সিঙ্গল সিঙ্গল কাজ করেছি। তাও আমি ভীষণই কম মিউজিক ভিডিয়ো করেছি। সেই জন্য ঠিক করি প্রতি মাসে একটা করে গান মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। কিন্তু কী গান গাইব? এই প্রশ্ন মাথায় আসতেই ঠিক করি আধ্যাত্মিক গানই করব, কিন্তু অন্য ভাবে। আমার ভাবনার সঙ্গে এখন যাঁরা টলিউডে মিউজিক নিয়ে দারুণ ভালো কাজ করছেন তাঁদের ভাবনা মিশিয়ে অরিজিন্যাল আধ্যাত্মিক গান বানাব। এই ভাবনা মাথায় আসার পরই আমরা একে একে কলকাতার গুণী শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরাও ভীষণ উৎসাহ দেখান। তারপরই কাজটা হল আর কী। তবে…
কী?
অদিতি: প্রতিটা হাউজ, সংস্থাই তাদের গোটা বছরের সিরিজ বা সিনেমার তালিকা প্রকাশ করে দেয়। আমি একজন ব্যক্তি হয়ে কেন পারব না, সেই ভাবনাটাও একই সঙ্গে মাথায় আসে। ঠিক করি আমি একজন ইন্ডিভিজুয়্যাল হয়েও এই চেষ্টা করব। গানে গানে তো আমাদের বর্ষ যাপন হয়, সেটাকেই গোটা বছর ধরে উদযাপন করা হবে। জানতাম অনেক প্রতিকূলতা পেরোতে হবে তবুও চেষ্টা করতে চেয়েছিলাম।
কী কী প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন?
অদিতি: এত কম সময়ে এতগুলো অরিজিন্যাল গান তৈরি করা সহজ নয়। তার সঙ্গে ভিডিয়ো বানানো তো আছেই। আমরা আমাদের প্রতিটা ভিডিয়োতে আলাদা টাচ দিতে চেয়েছি। আধ্যাত্মিক গান মানেই যে ঈশ্বরের সামনে বসে গাইতে হবে এমনটা নয়। আমরা একটু অন্য রকম কিছু করার চেষ্টা করেছি, যাতে প্রতিটা ভিডিয়ো একে অন্যের থেকে আলাদা হয়। তারপর এখন বর্ষা চলছে, এরপর পুজো আসবে। সবারই ব্যস্ততা বাড়বে। আর এখন তো বৃষ্টির মধ্যে শুট করাটাও একটু সমস্যার। ফলে সবটা গুছিয়ে ঠিক ভাবে করাটাই যেন একটা চ্যালেঞ্জ। আর আমরা যেহেতু বারো গানে বর্ষ যাপন করছি তাই বলেছি প্রতি মাসের ১২ তারিখ একটা করে গান মুক্তি পাবে। তো সেখানেও একটা কথা রাখার বিষয় থাকে।
শ্রোতাদের থেকে সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
অদিতি: ভীষণ ভালো। ভাবিনি মানুষের কাছে এতটা পৌঁছতে পারব। সবাই খুব প্রশংসা করছে। আজকাল সবাই আধুনিক গান, সিঙ্গল শুনতে পছন্দ করেন, কিন্তু আধ্যাত্মিক গান তাও অরিজিন্যাল খুব একটা শোনা যায় না।
কীর্তন বাংলার গান হয়েও ভীষণ অবহেলিত, তবুও এমন একটা টপিক নিয়ে কাজ করতে ভয় লাগেনি?
অদিতি: ভয় তো করেই, কিন্তু একজন শিল্পী হিসেবে নিজের একটা পয়েন্ট অব ভিউ বা প্রিন্সিপল থাকা দরকার। আমি আমার গানটাকে মানুষের কাছে সম্মানের সঙ্গে পৌঁছে দিতে চেয়েছি। কখনই এটা চাইনি যে আমি আমার মতো গেয়ে গেলাম আর গানের মতো একদিকে থাকল। ভয় থাকলেও কখনও জেদ ছাড়িনি। প্রতিকূলতা আসবেই কিন্তু ইচ্ছে কতটা আসল সেটাই হল কথা।
সারেগামাপা বা এই ধরনের শোগুলোর হাত ধরেই কি আবার কীর্তনের চর্চা ফিরছে বলে মনে করেন?
অদিতি: একশোবার। আমাকে যখন প্রথম বলা হয়েছিল যে এমন একটা মঞ্চে আমায় কীর্তন গাইতে হবে আমি সত্যিই ভেবেছিলাম যে আমি বেশিদূর এগোতেই পারব না। কারণ তার আগে এই কনসেপ্টটাই ছিল না যে মূল স্টেজে, এমন শোতে কেউ কীর্তন গাইতে পারেন। তাই অফার পাওয়ার পর ভয় লাগলেও হাল ছাড়িনি। কালিকাদা, অভিজিৎদা এঁরা অনেক সাহায্য করেছিলেন। আমি যখন ২০১৫ সালে চ্যালেঞ্জটা নিই আমার কাছে তখন কোনও রেফারেন্স ছিল না, রোডম্যাপ ছিল না। এখন সব শোতেই এই সাবজেক্টটাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়।
আরও পড়ুন: ভুল স্বীকারে লজ্জা নেই’, পুনর্নির্বাচনের ফেক রেজাল্ট শেয়ার নিয়ে বললেন সৌরভ পালোধী
আরও পড়ুন: ‘জনসংযোগ হারাচ্ছে বাংলা ছবি’, কেন এমনটা মনে করেন ‘আজকের সাজাহান’-এর সুব্রত ওরফে ঋদ্ধি
কীর্তন আবার চর্চায় ফিরলেও নতুন প্রজন্ম কী আগ্রহবোধ করছে এই জ্যঁরের প্রতি?
অদিতি: একদম। আমার তো নিজেরই আকাদেমি আছে। নতুনরা অনেকেই তার সঙ্গে যুক্ত। এই বিষয়টা নিয়ে তাঁদের ভীষণই উৎসাহ আছে।
আপনার নিজের কবে আগ্রহ জন্মাল কীর্তনের প্রতি?
অদিতি: মাধ্যমিকের সময়। আমার অ্যাডিশনাল মিউজিক ছিল। তখনই আমার প্রথম পদাবলী কীর্তনের সঙ্গে আলাপ। তখনই দেখলাম এই ধরনের গান আমায় খুব টানছে, গাইতে ভালো লাগছে, সবাইকে শোনাতে ভালো লাগছে।
একদিকে রাজনীতি, আরেকদিকে সংসার, সঙ্গে আকাদেমি, নিজের রেওয়াজের সময় পান?
অদিতি: নিশ্চয়। দিনে ২৪ ঘণ্টা, অনেক সময়। ক্লান্ত লাগে কখনও। কিন্তু রেওয়াজ করি। কারণ গান থাকলে সব থাকবে।
ভোটের সময় যে মৃত্যুমিছিলের সাক্ষী থাকল বাংলা সেটা নিয়ে আপনার কী মত?
অদিতি: রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বলছি আমরা যে দেখি বা দেখতে পাচ্ছি সেটা কতটা সত্যি কতটা মিথ্যে? আমার কিন্তু একটা বড় প্রশ্ন আছে।
For all the latest entertainment News Click Here