মৃণাল সেনের স্ত্রীকে লেখা হৃত্বিক ঘটক পত্মীর চিঠি প্রকাশ্যে, কী লিখেছিলেন?
‘পুরানো সেই দিনের কথা…’। হৃত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, বাংলার কিংবদন্তি এই দুই পরিচালকদের নাম পুরনো সেই দিন, যাঁকে বলে কিনা বাংলার সিনেমার দুনিয়ার স্বর্ণযুগ, সেই সেময়ের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে। এই দুই পরিচালকের পরিবারের একে অপরের সঙ্গে বেশ সখ্যতা ছিল। যে সখ্যতা ছিল আত্মীয়তার মতোই। তারই এক টুকরো উদাহরণ উঠে এল মৃণাল পুত্র কুণাল সেনের হাত ধরে।
২৬মে ফেসবুকের পাতায় একটি পুরনো চিঠি শেয়ার করেছেন কুণাল সেন। যেটি কিনা হৃত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা। মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনকে সেই চিঠি লিখেছিলেন সুরমা দেবী। মৃণাল পুত্র কুণাল সেন লিখেছেন, ‘আমার মার একটা পুরোনো ব্যাগ ঘাঁটতে গিয়ে একটা ছেঁড়া চিঠি হাতে এলো। চিঠিটা ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা, আমার মাকে। মা যত্ন করে নিজের ব্যাগে রেখে দিয়েছিলেন। ঠিক কবে লেখা আমার জানা নেই। ভাবলাম হয়তো অন্যদের দেখতে ভালো লাগবে।’
হলুদ হয়ে আসা চিঠির পাতাতেই স্পষ্ট তাঁর প্রাচীনত্ব। উপরে বড় বড় করে লেখা হৃত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের নাম। পাশে লেখা তাঁদের চেতলার বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নম্বর। মৃণাল সেনের জন্মদিন উপলক্ষে সেই চিঠি পাঠিয়েছিলেন সুরমা ঘটক। শুরুতেই লেখা, ‘গীতা আজ মৃণাল সেনের জন্মদিন। আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন মৃণালবাবুকে জানাচ্ছি। মৃণাল বাবুরা একটা যুগের প্রতীক। একটা স্বপ্ন নিয়ে কাঁধে একটা ঝোলা নিয়ে রওনা হয়েছিলেন জীবনের পথে। এরপর সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ইতিহাসের পাতায় মৃণাল সেনের নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে ও থাকবে। সত্যিজিৎ রায়ের পর হৃত্বিত ও মৃণাল এই দুটি শব্দ সবসময় একসঙ্গেই উচ্চারিত হয়।’
পুরনো ঘটনা টেনে সুরমা ঘটক আরও লিখেছেন, ‘মৃণালবাবু আমার প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল। মনে পড়ে আমাকে শশ্মান থেকে হাত ধরে উনি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ছিলে তুমি, অনুপকুমার, পরে বেলা, নৃপেন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি। সেদিন আমাকে উদ্ধার করে দিয়েছিলে।’ কথা প্রসঙ্গে আরও একটি পুরনো ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন সুরমা ঘটক। লিখেছেন, ‘আমি চাকরি পেয়ে যোগদানের আগের দিন ছিল ধর্মঘট। মৃণাল সেন ফোন করে স্কুলে জানিয়ে দেন আমি পরদিন সকালে ট্রেনে গিয়ে ১২টার মধ্যে যোগদান করব। একটা যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু কাজের মধ্যেই মানুষ বেঁচে আছে, আন্তরিক ভালোবাসা তোমাকে।’ চিঠির শেষে সুরমার বদলে ‘ইতি লক্ষ্মী’ বলে শেষ করেছেন সুরমা ঘটক।
কুণাল সেন চিঠিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পরই আবেগে ভেসেছেন দুই পরিচালকের অনুরাগীরা। তাঁদের কথায়, ‘এই চিঠি সময়ের দলিল’। কেউ আবার লিখেছেন, ‘অমূল্য সম্পদ’, এমনই নানান মন্তব্য উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৪ মে ছিল মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী।
For all the latest entertainment News Click Here