মুম্বই এসে চালাতেন হাতে টানা গাড়ি, বিলি করতেন সংবাদপত্র! এখন আয় বছরে ২৫ লাখ
ভাগ্যের চাকা কখন বদলে যায় বলা যায় না। কথাতেই আছে, পরিশ্রম করে যাও, ফলের আশা করো না। একথা, বাস্তবে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যারা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেলেব্রিটি ফোটোগ্রাফার মুন্না ঠাকুরও। তাঁর ২৫ বছরের সুদীর্ঘ কেরিয়ারে মুন্না অমিতাভ, সলমনদের ক্যামেরাবন্দি করেছেন। কিন্তু শুনলে হয়তো অবাক হবেন, এই মুন্নাই মুম্বইয়ের সেলেবদের বাড়িতে রোজ খবরের কাগজ দিতেন। মুম্বইতে আসার পর পেট চালানোর জন্য কিছুদিন হাতে টানা গাড়িও চালিয়েছেন। এখন তিনি ফোটোগ্রাফি জগতের বিশিষ্ট নাম। ইনস্টাগ্রামে তার অনুগামীদের মধ্যে রয়েছে টাইগার শ্রফ থেকে তাপসী পান্নুরা। তবে নিজের অতীত ভোলেননি। তাই তো ইনস্টা বায়ো-তে নিজের পরিচয় দিয়ে লিখেছেন- ‘Rotigrapher to photographer’।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে মহারাষ্ট্রে আকোলা থেকে মুম্বই আসেন মুন্না। সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন, নিজের জার্নি নিয়ে। সংবাদপত্র ফিরি করা থেকে কীভাবে হল ফোটোগ্রাফির সূত্রপাত, তাও উঠে এল মুন্নার কথায়।
‘একদম প্রথম দিকে হাতে টানা গাড়ি চালাতাম। এরপর সংবাদপত্রের হকার হিসেবে ফোটোগ্রাফি স্টুডিয়োগুলিতে পার্টটাইম কাজ করতাম। ছবি পৌঁছে দিতাম, পাসপোর্ট সাইজ ফোটো তুলে দিতাম। বিলাল খান নামের একজন আমাকে ক্যামেরা ব্যবহার করা শিখিয়েছিলেন। আমি অর্জুন রামপালের বাড়িতেও খবরের কাগজ দিতাম। ওর বাড়ির চাকরকেই প্রথম বলি আমি শ্যুট করতে চাই। ও সেই কথা বলে অর্জুনকে। উনি (অর্জুন রামপাল) আমার আগের কাজ দেখতে চান, কিন্তু দেখানোর মতো কিছুই ছিল না আমার। আমি তখন বলি ছবিগুলো ভালো না এলে, আমি রোলগুলো ডিলিট করে দেব। উনি রাজি হন। এভাবেই আমার কেরিয়ার শুরু হয়। একজন সুপারমডেলকে পাওয়া নিসন্দেহে আমার কেরিয়ারে অনেক বড় সাহায্য করেছিল।’, জানান মুন্না।
মুন্না জানান, কেরিয়ারের শুরুর দিকে কোনওদিন টাকা নিয়ে ভাবেননি। বরং ভাবতেন কীভাবে নিজের প্রোফাইল আরও বাড়ানো যায়। অর্জুনের সঙ্গে কাজের পর যান জন আব্রাহামের কাছে। তারপর বিপাশা বসু। একে একে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, লারা দত্ত, দিয়া মির্জা, শ্রদ্ধা কাপুর, সোনাক্ষীদের সঙ্গে কাজ করে ফেলেন।
মুন্না কিন্তু ক্লাস সেভেন পাস। সে অর্থে করেননি ফোটোগ্রাফির কোনও কোর্সও। কীভাবে শিখলেন নানা টেকনিক্যাল দিকগুলি? মুন্না জানান, তাঁর জন্য ব্যাপারটা ছিল হয় করো নয় মর। কাজ করতে করতেই কাজ শিখেছেন। নিজের ভুল থেকে শিখেছেন। এক ভুল কোনওদিন রিপিট করেননি।
২৫ টাকা পকেটে নিয়ে মুম্বই এসেছিলেন, এখন বছরে আয় করেন ২৫-৩০ লাখ টাকা। সলমন খান, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। মুন্নার কথায়, ‘আমার প্রতিটা শ্যুট আমার কাছে বিশেষ। আমার কপাল ভালো আমাকে কখনও ছবি তুলে তা মুছে দিতে হয়নি, আমার তারকা ক্লায়েন্টটের তা ভালো লেগেছে। আমি প্রতিবার আরও ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি। তবে নিজের শিকড় ভুলিনি। সেই তখন যাদের বাড়িতে খবরের কাগজ দিতাম, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। প্রথম জীবনে যারা আমাকে সাহায্য করেছেন, তাঁদের সঙ্গে এখনও কথা হয় নিয়মিত। আমি কিছু ভুলিনি। আমার ফোটোগ্রাফির চোখ বদলেছে। আমি নিজে বদলাইনি।’
For all the latest entertainment News Click Here