‘মুখোশধারীদের মোকাবিলার সেরা উপায় নিজে একটা মুখোশ পরে নেওয়া’: অনির্বাণ
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পরবর্তী লকডাউন পেরিয়ে চলতি মাসেই খুলেছে সিনেমা হল। বৃহস্পতিবার বড় পর্দায় মুক্তি পেল অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ‘মুখোশ’। ‘বিবাহ অভিযান’-এর পর ফের বিরসা দাশগুপ্তের পরিচালনায় অনির্বাণ, তবে এবার পুরোদস্তুর রহস্য-রোমাঞ্চের বেড়াজালে জড়ানো ছবিতে। ‘মুখোশ’ নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার মুখোমুখি অনির্বাণ ভট্টাচার্য।
অপরাধীদের মন বুঝবেন ক্রিমিনোলজিস্ট অনির্বাণ
আমি যেহেতু ওয়েব সিরিজে ব্যোমকেশের চরিত্রে অভিনয় করি, ফলত মূল শব্দটা যদি গোয়েন্দা ধরেনি, তাহলে এই ছবিতে আমার চরিত্রটা (কিংশুক) গোয়েন্দার কাছাকাছি একটা চরিত্র কিন্তু গোয়েন্দা নয়- সেইটা করতে খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। এই যে চরিত্রটা কিংশুক- সে পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে সাহায্য করে। কিংশুক দুঁদে গোয়েন্দা নয়, কিন্তু তাঁর কাজটা তদন্ত করা- এই যে সূক্ষ্ম তফাত সেটা এক্সপ্লোর করতে পেরে ভালো লাগছে। এটা একটা আলাদা ইন্টারেস্টের জন্ম দিয়েছে।
বিবাহ অভিযানের পর ফের একসঙ্গে বিরসা-অনির্বাণ
ছবির শ্যুটিং ছাড়াও বিরসাদা-র সঙ্গে গল্প হয়,আড্ডা হয়। ছবির করতে গেলে এই ভাইব ম্যাচ করবার একটা ব্যাপার আছে..আমরা যেটা ওয়েব লেনথ বলি আর কী! অন্য সিনেমা নিয়েও বিরসাদার সঙ্গে আমার আলোচনা হয়। এইরকম মানুষের সঙ্গে কাজ করতে গেলে, সে যেরকম কাজই হোক না কেন- সেটা মোটামুটি এনজয় করবার মতো প্রসেস। ছবি শুরুর আগে সেটা বিরসাদা সবসময় আলোচনা করেন ছবির ব্যাপারে তাঁর চিন্তা কী হতে চলেছে, শুধু আমার চরিত্র নিয়ে নয়, ছবির লুক অ্যান্ড ফিল নিয়ে বিরসাদা আলোচনা করেন। সেটা একটা উপরি পাওনা।
‘অনজাম পাথিরা’র অফিসিয়্যাল রিমেক মুখোশ, তবে অনির্বাণ সেই ছবি দেখেননি
আমি ‘অনজাম পাথিরা’ দেখিনি। নানা স্তরের রিমেক হয়, যেমন ধরুন ফরেস্ট গাম্প বলে একটা হলিউড ছবির রিমেক করছেন আমির খান, লাল সিং চড্ডা। আবার এমনও রিমেক হয় যা একদম তথাকথিত দক্ষিণী ছবি থেকে তুলে নেওয়া, যেটাকে আমরা কমার্শিয়াল রিমেক ছবি বলি। আবার এমন রিমেকও হয় যেটা রাজ চক্রবর্তী করতেন, যেটা দেখলে আপনার মনে হবে নৈহাটী বা কাঁচরাপাড়ার গল্প। একটা ইন্ডাস্ট্রিতে সব ধরণের ছবিই প্রয়োজন। সেই অর্থে মৌলিক বলে তো পৃথিবীতে কিছু নেই। সিনেমার ১১০ বছরের বেশি ইতিহাসে সব ধরণের আইডিয়া এক্সপ্লোর করা হয়ে গিয়েছে। একটা ইন্ডাস্ট্রিতে অরিজিন্যাল ভাবনা নিয়ে ছবি হচ্ছে, অন্য ভালো ছবিরও রিমেক হচ্ছে। এখন অবশ্য নানান ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাঙালি দর্শকও অন্য ভাষার ছবি দেখে নেয়। অন্য ভাষার ভালো ছবি যদি বাংলায় রিমেক হয়, তা নিয়ে অভিনেতা হিসাবে আমার কোনও ছুতমার্গ নেই।
‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’-তে রাহুল বোসের সঙ্গে প্রথম কাজ
এই সিরিজে একদম একটা অন্যরকম একটা কাস্টের সঙ্গে কাজ করলাম। আতর আলির অনেকটা অংশই রাহুল বোস (নিরুপম চন্দ)-এর সঙ্গে, ফলত আমি অনেক কিছু শিখতে পারলাম, অভিনেতা হিসাবে এই আদান-প্রদানটা জরুরি। আমি অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে থিয়েটারে প্রচুর কাজ করেছি, এই সিরিজ আর মুখোশ ছবিতে পর্দায় কাজ করলাম পরপর। দারুণ অভিজ্ঞতা সব মিলিয়ে।
মুখোশধারী মানুষদের মোকাবিলার সেরা দাওয়াই
মুখোশ পড়া মানুষের সঙ্গে এঁটে উঠবার সেরা অস্ত্র হল নিজে মুখোশ পরে নেওয়া। যখন দেখে মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে, ইনি বাইরে একরকম বলছেন, ভিতরে একরকম। তখন সেরা উপায় হল নিজেও একইরকম পজিশন নিয়ে নেওয়া। আমি ভিতরে যা ভাবছি সেটা বাইরে প্রকাশ না করা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধুই কাজ সংক্রান্ত আলোচনা
দেখুন, আমার ক্ষেত্রে কাজ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলবার প্রয়োজন তৈরি হয় না। আজকের শোবিজের দুনিয়ায় কাজের তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকাটা জরুরি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলবার তাগিদ আমি কোনওদিন অনুভব করি না। জীবনে অসংখ্য ঘটনা ঘটতে থাকে, সাধারণ মানুষ সেগুলো নিয়ে যেভাবে চলে আমিও সেভাবেই চলা পছন্দ করি।
করোনাকাল কী শেখালো?
করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম লকডাউনের সময় একটু বেশি লেখালেখি করেছি, টুকটাক ছবি এঁকেছি, বন্ধুরা মিলে গান-টান গেয়েছি। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরবর্তী লকডাউনটা একদম লেস প্রোডাকটিভ ছিল। সারভাইভাল নিয়ে একটু চিন্তায় ছিলাম। কাজে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে।
‘মুখোশ’ নিয়ে দর্শকদের বার্তা-
আমি আনজাম পাথিরা দেখেনি তবে যা শুনেছি এটা পাতা টু পাতা রিমেক নয়। ফ্রেম টু ফ্রেম কপি করা হয়নি, যাঁরা আনজাম পাথিয়া দেখেছেন তাঁদের জন্যও একটা নতুন অভিজ্ঞতা হবে, গল্পটা নতুন করে সাজানো এইটুকু বলব। যাঁরা দেখেননি তাঁদের জন্য তো সম্পূর্ণ নতুন একটা ছবি হতে চলেছে ‘মুখোশ’।
For all the latest entertainment News Click Here