মাটিতেই ড্রপ খাওয়ার পরে ক্যাচ ধরেছে সিরাজ- পাডিক্কালের আউট নিয়ে সোচ্চার নেটপাড়া
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের দেওয়া ১৭২ রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে-তেই ল্যাজেগোবরে দশা হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালসের। ছয় ওভার শেষে মাত্র ২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে থাকে রয়্যালস। আর এর পর মাত্র ৫৯ রানে অল আউট হয়ে যায় তারা। ঘরের মাঠে পিঙ্ক আর্মির ব্যাটিং অর্ডার যেন একেবারে তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়ে। ১১২ রানে ম্যাচটি হেরে বসে থাকে রাজস্থান। যা নিয়ে নেট পাড়া জুড়ে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। তবে এর মাঝেই বিতর্ক বেঁধেছে মহম্মদ সিরাজের একটি ক্যাচ নিয়ে।
দেবদত্ত পাডিক্কালের একটি ক্যাচ নেন সিরাজ। সেই ক্যাচটি দেখে মনে হচ্ছিল, মাটিতে বল ড্রপ করার পর ক্যাচ নিয়েছেন সিরাজ। কিন্তু তাতেও আউট হয়ে যান পাডিক্কাল। ঘটনাটি পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে। ব্রেসওয়েলের বলে পাডিক্কাল এটিকে শক্তিশালী ভাবে ফ্লিক করেন। তবে একমাত্র সমস্যা হল, তিনি এটিকে মিড-উইকেটে সিরাজের দিকে ক্যাচ ক্যাচ তুলে দেন। ক্যাচটি অনেক নীচুতে ছিল। সিরাজ সেটি বেশ কসরত করে ধরে ফেলেন। তবে প্রশ্ন হল, ক্যাচটি কি ড্র খেয়েছে? থার্ড আম্পায়ারের কাছে সিদ্ধান্ত গেলে, তিনি কয়েক বার রিপ্লে দেখার পর সিদ্ধান্ত দেন যে, সিরাজের আঙুল বলের নিচে ছিল। ড্রপ খায়নি বল। যে কারণে ৪ বলে ৪ করে আউট হন পাডিক্কাল।
আরও পড়ুন: ১৪ বছর আগে ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধেই লজ্জার নজির গড়েছিল রাজস্থান, ফিরে এল সেই কালো দিনের স্মৃতি
যা নিয়ে অবশ্য নেটপাড়ায় তৈরি হয়েছে বিতর্ক। অনেকেরই মতে, এটি কোন ভাবেই ক্যাচ ছিল না। আবার অনেকে দাবি তুলেছেন, এটি গটআপ ম্যাচ। কেউকেউ সিরাজকে একেবারে ধুইয়ে দিয়েছে নেটপাড়া। কেউ আবার আম্পায়ারকে তুলোধোনা করেছেন।
এ দিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আরসিবি। আইপিএলের শেষ প্রান্তে চলে এসেও তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতার ছবিটা পাল্টায়নি। গোটা প্রতিযোগিতা ধরে বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু’প্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দলের বেশির ভাগ রান তুলেছেন। রবিবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচেও অবশ্য কোহলি ফ্লপ হলেন। রান করলেন ম্যাক্সি এবং ফ্যাফ। বিরাট ১৯ বলে ১৮ করে সাজঘরে ফিরলে, দলের হাল ধরেন ফ্যাফ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা ৬৯ রান যোগ করেন। ৪৪ বলে ৫৫ করে আউট হন ফ্যাফ। আর ৩৩ বলে ৫৪ করেন ম্যাক্সি। বাকি শেষ পাতে মিষ্টি দইয়ের মতো ছিল অনুজ রাওয়াতের ইনিংস। তিনি ১১ বলে ২৯ রান করে আরসিবি-র স্কোর নিয়ে যান ৫ উইকেটে ১৭১ রানে। যা নিঃসন্দেহে প্রতিযোগীতামূলক একটি স্কোর। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরের পৌঁছাননি। মহিপাল লোমরোর (২ বলে ১), দীনেশ কার্তিক (২ বলে ০), ব্রেসওয়েলরা (৯ বলে ৯) চূড়ান্ত হতাশ করেন। রাজস্থানের কেএম আসিফ এবং অ্যাডাম জাম্পা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১টি উইকেট নিয়েছেন সন্দীপ শর্মা। দু’জনই রান করলেন। বাকিরা সবাই ব্যর্থ।
আরও পড়ুন: RCB-র হয়ে ২৫০ ম্যাচ খেলে অনন্য রেকর্ড কোহলির, নজিরের দিনেই অবশ্য ব্যর্থ কিং
জবাবে ব্যাট করতে নেমে থরথর করে কাঁপছিল রাজস্থানের ব্যাটিং অর্ডার। একের পর এক উইকেট তারা হারাতে থাকে। পাওয়াপ প্লে-তেও মাত্র ২৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ০-০-৪-১০-৪- এটা আসলে আরআর-এর প্রথম পাঁচ ব্যাটারের রান। ব্যতিক্রম বলতে শিমরন হেতমায়েরের ১৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটি। আর জো রুট ১০ করেছেন। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছানো তো দূরের কথা, এর বাইরে ৫ রানও কেউ করতে পারেননি। মাত্র ১০.৩ ওভারে খড়কুটোর মতো ভেসে যায় রাজস্থান। ৫৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।
আরসিবি-র বোলারদের দাপটেই ১১২ রানে হেরে প্লে-অফের লড়াই মারাত্মক জটিল করে ফেলল রাজস্থান। ওয়েন পার্নেল তিন উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন ব্রেসওয়েল এবং কর্ণ শর্মা।
রাজস্থানের এখনও সামান্য আশা বেঁচে থাকলেও, সেই পথ বড় দুরুহ। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে উঠে এল আরসিবি। রাজস্থান একই ম্যাচে একই পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেল ছয়ে। আগের ম্যাচে ইডেনে কলকাতাকে হারিয়ে যে রানরেট সংগ্রহ করেছিল রাজস্থান, এ দিন বিশাল ব্যবধানে হেরে তার সবটাই জলে দিল।
For all the latest Sports News Click Here