মহারাজা সৌরভকে ‘সরি’ বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, স্বীকার প্রাক্তন পাকিস্তানি তারকার
শুভব্রত মুখার্জি: ২২ গজে ভারত বনাম পাকিস্তানের তুল্যমূল্য লড়াই কারও অজানা নয়। তবে মাঠের বাইরে দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সাম্প্রতিককালে বিরাট-বাবরের একাধিক ছবি সেইসব বারবার সামনে তুলে এনেছে। এমন আবহেই এক অজানা কাহিনি শুনিয়েছেন প্রাক্তন তারকা স্পিনার সাকলিন মুস্তাক। বর্তমান বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্বন্ধে তার বেশ ভুল ধারণা ছিল! যা ভেঙে যায় একটা ঘটনার পরে। এরপর নিজেই লজ্জায় পরে গিয়েছিলেন সাকলিন। সৌরভকে ‘সরি’ পর্যন্ত বলেছিলেন বলে খোলসা করলেন সাকলিন।
সাকলিন জানিয়েছেন তিনি ভাবতেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বুঝি খুব নাক উঁচু স্বভাবের। তবে ২০০৩-০৪ মরশুমে ভারতের পাকিস্তান সফরের সময়কালে এই ধারণা ভেঙে যায় তার। দু কাপ কফি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিয়েছিলেন এই দুই তারকা। সেই কথাই স্পোর্টসক্রীড়াকে জানিয়েছেন তিনি। সাকলেন বলেন ‘এমন কিছু মানুষ রয়েছে যাদের সঙ্গে তোমার কথা বলতে বা আলাপ আলোচনা করতে একেবারেই ভালো লাগবে না। আমি যখন খেলতাম তখন সৌরভ সম্বন্ধে প্রথমে আমার এই ধারণাটাই ছিল। ও ভারতের অধিনায়ক ছিল। নিঃসন্দেহে একজন কিংবদন্তি ছিল। তবে আমাদের যখন দেখা হয়েছে শুধুমাত্র ‘হাই’, ‘হ্যালোর’ বাইরে কোনও কথা হয়নি। আমার তখন মনে হয়েছিল ও বেশ অহংকারী মানুষ।’
তিনি আরও যোগ করেন ‘২০০৩-০৪ সালে আমার হাঁটুর অপারেশন হয়। সৌরভ ওই ট্যুরে এসেছিল। সচিন তেন্ডুলকরও ছিলেন ওই দলে। ওর কনুইতে চোট ছিল ওই সময়। আমি ভারতের বিরুদ্ধে একটা সাইড ম্যাচে খেলছিলাম। রিহ্যাবের পরে ওটাই আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। আমাকে সাসেক্সের হয়ে কাউন্টিও খেলতে হয়েছে।’
এরপরেই সৌরভ প্রসঙ্গে আসেন সাকলেন, জানান ‘বিশ্বাস করুন সৌরভ দু-কাপ কফি নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। দুইদলের ড্রেসিংরুমের ছাদ একটাই ছিল। মাঝে একটা ছোট্ট দেওয়াল ছিল। ফলে এদিক থেকে ওদিক যেতে গেলে ছোট পাঁচিল ডেঙাতে হত অথবা পিছন দিয়েও আসা যেত। হাতে দুটো কফি কাপ নিয়ে ও (সৌরভ) ছোট পাঁচিল ডিঙিয়ে এসেছিল। আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। আমি এতে অবাক হয়ে যাই। ভাবছিলাম এটা কি করছে ও?’
সাকলিন বলেন ‘এই ঘটনা সৌরভের সম্বন্ধে আমার ধারণা বদলে দেয়। ওর বিষয়ে ভুল ধারণা থাকায় আমি লজ্জা পেয়েছিলাম। এত ভালো মানুষকে আমি কীকরে ভুল বুঝলাম! এর আগে আমার ওর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। আমার মনে হয়েছিল ওর ইগো রয়েছে। আলোচনার সময় ও আমার হাঁটুর চোট সম্বন্ধে জানতে চায়। আমাকে উৎসাহ দেয়। ক্রিকেট এবং জীবন দর্শন নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়। ও যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি ওকে বলি ‘সরি সৌরভ ভাই’। আমার তোমার বিষয়ে ভুল ভাবনা ছিল। এই মিটিংটা সব বদলে দিয়েছে। আমি মানুষ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থক হয়ে যাই। খেলোয়াড় হিসেবে ওর যা কৃতিত্ব যত বলব কম বলা হবে।’
For all the latest Sports News Click Here