‘ভেবেছিলাম আমায় পাত্তা দেবেন না’, ইরফানের সঙ্গে কাজ করতে ভয় পেয়েছিলেন দীপিকা!
৭ জানুয়ারি জন্মদিন ছিল ইরফান খানের। হ্যাঁ, জন্মদিনই বললাম, কারণ যে মানুষ তাঁর কাজ, তাঁর শিল্পের মাধ্যমে ভীষণভাবে আমাদের মধ্যে থেকে গিয়েছেন তাঁর মৃত্যুর পর জন্মদিনটা আচমকাই জন্মবার্ষিকীতে পরিণত হতে পারে না। তিনি গোটা ভারতের অন্যতম সেরা অভিনেতা ছিলেন। বলিউডের একাধিক বিগ বাজেট ছবিতে কাজ করে গিয়েছেন নিঃশব্দে। কখনও কোনও কাজ নিয়ে হইচই করেননি। ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পিকু’ ছবিতে তাঁকে দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে দেখা যায়। আর অভিনেতার জন্মদিনে এবার সেই ছবির কথাই স্মরণ করলেন দীপিকা।
অভিনেত্রী জানান তিনি ভীষণ নার্ভাস ছিলেন ইরফান খানের সঙ্গে কাজ করতে হবে ভেবে। তিনি ভেবেছিলেন অভিনেতা হয়তো তাঁকে খাটো চোখে দেখবেন। এই ছবিতেই তাঁরা প্রথমবারের জন্য জুটি বাঁধেন এবং স্ক্রিন শেয়ার করেন। ছবিটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে। এর মধ্যে আছে তিনটি ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড। এই ছবির জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে অমিতাভ বচ্চন পুরস্কার পান, জুঁই চতুরবেদি সেরা অরিজিন্যাল স্ক্রিনপ্লের জন্য পুরস্কার পান এবং একই সঙ্গে তিনি সেরা ডায়লগের পুরস্কারও পান।
ইরফানকে নয় কী ভাবতেন দীপিকা, এবং তিনি আদতে কেমন ছিলেন সেটা তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ২০১৬ সালে অভিনেত্রী জানান, ‘আমি ভেবেছিলাম তিনি হয়তো ভীষণ গম্ভীর এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন অভিনেতা, মানুষ। তাঁর সমস্ত কিছুই হয়তো ভীষণ গুরুগম্ভীর। হ্যাঁ, অবশ্য আমার এই ভাবনার নেপথ্যে মিডিয়ার হাত রয়েছে। কিন্তু আমি তাঁকে নিয়ে সত্যি এমনটা ভাবতাম। আমি তো ভেবেছিলাম ছবির সেটে তিনি হয়তো আমার সঙ্গে কথা বলবেন না, পাত্তা দেবেন না। এমনকি আমায় হয়তো একটু খাটো নজরে দেখবেন। আমি যেহেতু মূলত বাণিজ্যিক ছবি করে থাকি তাই হয়তো নিচু নজরেই দেখবেন। কিন্তু তিনি ভীষণ আলাদা ছিলেন। খুব অন্যরকম।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনি ভীষণ মজার মানুষ ছিলেন। আর আমাদের দুজনের মধ্যে যে বিষয়টায় সব থেকে বেশি মিল ছিল সেটা হল, আমরা দুজনেই ভীষণ লাজুক। উনি খুব কম কথা বলতেন। কিন্তু যখনই কিছু বলতেন, সেটা খুব মজার হতো। আমার মনে হয় ওঁর কমিক সেন্স দুর্দান্ত। আর ওঁর গুণ, অভিনয়ের দক্ষতা নিয়ে কিছু বলাই যায় না। ওটা অবর্ণনীয়।’
পরবর্তীকালে ইরফান খান দীপিকার অত্যন্ত পছন্দের এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। তিনি অভিনেত্রীর প্রথম হলিউড ছবি, ‘এক্সএক্সএক্স: রিটার্ন অব জ্যান্ডার কেজ’-এর প্রমোশনাল ইভেন্টে উপস্থিত ছিলেন। ২০২০ সালে যখন অভিনেতা চলে যান তখন দীপিকা একটি শূন্য স্ট্যাটাস পোস্ট করেছিলেন ইনস্টাগ্রামে, সেখানে কেবল একটি হৃদয় ভাঙার ইমোজি ছিল।
পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছিলেন ইরফান। শুধু তাই নয়, তিনি জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন। এছাড়া তিনি এমন একাধিক ছবির অংশ ছিলেন যা সমালোচকদের থেকে দারুন প্রশংসা পেয়েছে, এর মধ্যে আছে অস্কার জয়ী ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ এবং ‘লাইফ অব পাই’। এছাড়া বিশেষভাবে প্রশংসা পেয়েছিল যে ছবিগুলো তার মধ্যে আছে ‘সালাম বম্বে’, ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’, ‘মাকবুল’, ‘পান সিং তোমার’, ‘দ্য লাঞ্চবক্স’, ‘হিন্দি মিডিয়াম’, ইত্যাদি।
For all the latest entertainment News Click Here