ভেঙেছে পোস্তা ফ্লাইওভার, কীভাবে ছন্দে ফিরল শহর? বলবে পাভেলের ‘কলকাতা চলন্তিকা’
তিলোত্তমার বুকে হেঁটে হেঁটে নাকি তাঁর পরিচালনা শুরু। আগাগোরাই ছবি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন পরিচালক পাভেল। তাঁর বাছাই গল্প এবং দৃষ্টিভঙ্গি পর্দায় দর্শকদের টানে। ফের এক নতুন ছবি দর্শকদের উপহার দিতে চলেছেন পরিচালক। নতুন প্রজেক্ট ‘কলকাতা চলন্তিকা’। বিগত কয়েক বছর আগে ভেঙে শহরে পড়েছিল পোস্ত ফ্লাইওভার। এই ফ্লাইওভার ভেঙে পড়ার প্রেক্ষাপটে ছবিটা তৈরি করা হচ্ছে।
ছবির চিত্রনাট্য এবং সংলাপ লেখা পাভেলের। গল্প লিখেছেন অধ্যাপিকা স্বাতী বিশ্বাস এবং পাভেল। ছবি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে পাভেল জানিয়েছেন, ‘আমায় যখন অনেকে জিজ্ঞেস করেন, আমি কী ভাবে ডিরেক্টর হলাম, আমি সাধারণত উত্তর দিই রাস্তায় হেঁটে হেঁটে। দিনের পর দিন রাস্তায় হাঁটতাম। পোস্টার দেখতাম সিনেমার। শুধু পোস্টার দেখা তো আর শেষ হয় না। বোধহয় কলকাতার প্রায় সমস্ত রাস্তাকে হেঁটেছি। আমি এই শহরটাকে ভালোবাসি, এটা বোধহয় আন্ডার স্টেটমেন্ট হয়ে যাবে। এই শহরটা আমাকে ভালোবাসে। এই শহরটা যেন আমাকে আগলে রাখে। আমার আর এই কলকাতার প্রেম কাহিনি হচ্ছে কলকাতা চলন্তিকা’।
বরাবরই সত্যি ঘটনা অবলম্বনে ছবি তৈরি করতে ভালোবাসেন পাভেল। পরিচালকের কথায়, ‘পরিচালক হিসেবে আমাকে বরাবরই সেই ঘটনাগুলো টানে যেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে আমাদেরকে প্রভাবিত করে। দেশপ্রিয় পার্ক দুর্গাপুজো ব্যান (‘অসুর’ সিনেমা এই নিয়ে) বা পোস্তা ফ্লাই ওভার ভেঙে পড়া এগুলোর ডকুমেন্টেশন করা আমি মনে করি পরিচালক হিসেবে আমার দায়িত্ব’।
পাভেল আরও জানিয়েছেন, যদিও এই ছবি কার কার দোষে ফ্লাইওবার ভাঙল, কী কী কারণে ভাঙল, সেইটা নিয়ে নয়। বরং ভেঙে যাওয়া ফ্লাইওভার থেকে কীভাবে নতুন রাস্তা তৈরি হচ্ছে জীবনে সেই নিয়েই ছবি কলকাতা চলন্তিকা। সারা দেশে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে চলেছে যা আমাদের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও মানুষ ঘুরে দাঁড়ায়। এখানেও কী ভাবে জীবন আবার স্রোতে ফিরছে, তা নিয়েই এই ছবি।
পরিচালকের কথায়, ‘যে দিন পোস্তা ফ্লাইওভার ভেঙে পড়ে আমার এক কাকা শোভাবাজার চত্বরে ছিলেন। তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা প্রায় বেরিয়ে পড়েছিলাম যাব বলে। তারপর ওর ফোন আসে। বাড়ি ফিরে আসেন। আমার বান্ধবী দেবাঞ্জনার বাড়ি পোস্তা ফ্লাইওভারের কাছে। ও বলে, আজও নাকি রাতের দিকে ওরা বিভিন্ন আওয়াজ, আর্তনাদ শুনতে পায়। হয়তো কল্পনা মনে হবে। কিন্তু যারা সে দিন ফেরেনি তাদের আর্তনাদগুলো, তাঁদের চিৎকারগুলো ওইখানে না থাকলেও, তাঁদের বাড়িতে; এই শহরের বুকে আছে’।
বেহালা, জোকা, পার্কস্ট্রীট, নিমতলা, হাওয়া ব্রিজ থেকে শুরু করে গোটা শহর জুড়ে রিয়েল লোকেশনে ছবির শ্যুটিং হয়েছে বলে জানান পরিচালক। ছবিতে অপরাজিতা আঢ্যকে এক পুলিশ কনস্টেবলের চরিত্রে দেখা যাবে। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করছেন শঙ্কর দেবনাথ, খরাজ মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত, তোতোন, বিশ্বরূপ বিশ্বাস, অমলকান্তি দাস, অনির্বাণ চক্রবর্তী (প্রফেসর শিবাজী মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রে), কিরণ দত্ত (বং গাই-এক আইটি কর্মীর চরিত্রে দেখা যাবে), শতাব্দী চক্রবর্তী, সৌরভ দাস(ছবিতে ওর চরিত্রের নাম বাইচুং), ঈশা সাহা, দিতিপ্রিয়া রায় (ভবানীপুরের টমবয়ের চরিত্র)।
ছবিটি মুক্তি পাবে ‘বাবা ভূতনাথ এন্টারটেনমেন্ট’এর ব্যানারে। প্রযোজক হিসাবে রয়েছেন শতদ্র চক্রবর্তী। এর আগে পরিচালক পাভেলের প্রতিটা ছবিতে ছিল নতুন চমক। বলাইবাহুল্য বাংলা সিনেমাপ্রেমিরা আরও একটা নতুন ভালো ছবি উপহার পেতে চলেছেন।
For all the latest entertainment News Click Here