‘ভুল’ করে নিয়মিত যৌন হেনস্থা, নামজাদা নাট্যব্যক্তিত্বের নামে অভিযোগ ছাত্রীর
১২ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে নাটক শিখতে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব রাজা ভট্টাচার্যের কাছে। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে নাটকের ক্লাসে গিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী তাঁর সেই স্বপ্ন অচিরেই ভাঙে। তাঁর সহজ সরল কিশোরী মনের সুযোগ নিয়ে নিয়মিত সেই ব্যক্তি তাঁকে যৌন হেনস্থা করতে থাকেন বলে অভিযোগ করেন।
বর্তমানে এই কিশোরী যুবতী। ১৮ -এ পা দিয়েছেন, পূর্ণবয়স্কা, সাবালক। গত ৬ বছর আগে যে যন্ত্রণার শিকার হয়েছিলেন তিনি এবার সেই বিষয়ে মুখ খুললেন ফেসবুকে।
এই যুবতী রবিবার তাঁর ফেসবুকের পাতায় জানান তিনি ২০১৭ সালে ১২ বছর বয়সে ‘ব্ল্যাঙ্ক ভার্স’ নামক নাটকের দলে ভর্তি হন রাজা ভট্টাচার্যের কাজে নাটক শিখবেন বলে। কিন্তু গিয়ে মুখোমুখি হন সম্পূর্ণ অন্য ঘটনার। এই যুবতীর কথায়, ‘ক্লাসের অন্ধকার কোনায় নিয়ে গিয়ে আমায় নিয়মিত জড়িয়ে ধরতেন, চুমু খেতেন। বাবা মায়েদের সামনে আমাদের বলতেন ওঁর মাথা টিপে দিতে। মাথা টিপতে গেলে আমাদের বুকে পেটে ওঁর মাথা ঘষতেন। তখন বুঝতাম না। আর বাড়ির লোকের সামনে এমন ভান করতেন যেন আমাদের কত স্নেহ করেন।’
এরপর তিনি আরও বড় এবং বিস্ফোরক অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতি শনিবার ক্লাসের আধ ঘণ্টা আগে আমায় ক্লাসে ডাকতেন। গেলে আমার সারা গায়ে বিশ্রী ভাবে হাত বোলাতেন। কখনও কখনও নিজের ঠোঁট আমার মুখে ডুবিয়ে দিতেন। গোটা বিষয় নিয়ে কখনও তাঁর মুখে কোনও অপরাধবোধ দেখিনি। এমন ভাব করতেন যেন আমি সম্মতি জানিয়েছি এসবের জন্য।’
তিনি একই সঙ্গে তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘প্রথমদিন বাবা আমায় ক্লাসে ছাড়তে গিয়েছিল। তারপর থেকে উনি আমায় বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন। আমি প্রথম না বুঝেই রাজি হই। রাস্তার অন্ধকার জায়গায় বাইক দাঁড় করিয়ে অসভ্যতা করতেন। পরে বুঝতে শুরু করি যখন বিরক্ত লাগত। ঘেন্না করতে শুরু করে ওঁকে। কিন্তু কখনও সাহস করে বলতে পারিনি। ওঁর কলকাতায় অনেক জানা শোনা। ভেবেছিলাম কেউ বিশ্বাস করবে না। কিন্তু আর নয়। টানা ৪ বছর তারপর থেকে অনেক অত্যাচার সয়েছি। ২০২০ সালে আমি ক্লাস ছেড়ে দিই। এবার মুখ খুললাম।’
অভিযোগকারিণী জানান তাঁরা প্রথম ক্লাসে গিয়ে রাজা ভট্টাচার্যের মুখোমুখি হন। জানান এবার তাঁর আসল মুখ সবার সামনে নিয়ে আসবেন মুখোশ খুলে। তখন তিনি হাতে পায়ে ধরেন যাতে এই ঘটনা না ঘটান সেই যুবতী। যদিও তাতে বিশেষ পাত্তা দেননি তিনি। নিজে যে আতঙ্ক, বিভীষিকার মধ্যে দিয়ে গেছেন যাতে আর কাউকে সেটার শিকার না হতে হয় তার জন্য সমস্ত স্ক্রিনশট সহ ফেসবুকে পোস্ট করেন।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই ছি ছি পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। সাধারণ নাগরিকরা তো বটেই নাট্য ব্যক্তিত্ব এবং সিনেমা, সিরিয়ালের অভিনেতারাও সরব হয়েছেন ঘটনার প্রতিবাদে। মেয়েবেলা ধারাবাহিকে মৌয়ের মশাই ওরফে অভিজিৎ সরকার লেখেন, ‘শাস্তি হবে না। নিশ্চিন্ত থাকুন। দুদিন সোশাল মিডিয়ায় বাক্তাল্লা চলবে। তারপর বঙ্গ রঙ্গসমাজ গলায় মালা দিয়ে বরণ করে নেবে। এর আগের তিনজনের ক্ষেত্রে তাই-ই হয়েছে।’ বিমল চক্রবর্তী, গুলশানারা খাতুন সরব হন এই বিষয়ে।
For all the latest entertainment News Click Here