‘ভবিষ্যতে শুধু গানকে পেশা করা কঠিন! ইউটিউবে তো শুধু ‘ভিউ’-এর উপর গানের বিচার হয়’
মুক্তির আগে থেকেই নানান কারণে আলোচনায় উঠে এসেছে দেবালয় ভট্টাচার্যের ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’। আলোচনাও যেমন হয়েছে, সমালোচনাও হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিতর্কও। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ আলোচনায় থাকার কারণ, ওয়েব সিরিজ থেকে তাঁর গাওয়া গান বাদ নিয়ে সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর ক্ষোভ প্রকাশ। যদিও তাঁর ভুল ভেঙে পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন বাদ দেওয় হয়নি, গানটি ওয়েব সিরিজের দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে। সে না হয় হল, এবার সাম্প্রতিক সঙ্গীতের জগতের নানান বিষয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের মতামত জানিয়েছেন জয়তী চক্রবর্তী।
বর্তমানে সঙ্গীতের দুনিয়ায় একে অপরের প্রতি বিশ্বাস হারানোর প্রসঙ্গ উঠলে শিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর সাফ জানান, তিনি বিশ্বাস হারাতে নারাজ। কারণ, গান বিষয়টাই তাঁর কাছে বিশ্বাসের। তাঁর কথায়, রবীন্দ্রসঙ্গীত হোক কিংবা অন্য কোনও গান, বিশ্বাস হারালে গানের কথা হৃদয়কে স্পর্শ করে না। বিশ্বাস ছাড়া কিছুই হয় না বলে মন্তব্য করেন জয়তী।
আরো পড়ুন-‘মিথ্যাচার!’ জয়তী চক্রবর্তীর অভিযোগে দেবালয়ের জবাব ‘এটা ভুল বোঝাবুঝি…’
শিল্পীদের উপার্জন প্রসঙ্গে জয়তী চক্রবর্তী বলেন, কখনও এককালীন টাকা দেওয়া হয়, কখনও আবার রয়্যালটি। জানান, এখনও তিনি HMV-র থেকে ৩৩২ টাকা রয়্যালটি পান। যেটা অতীত থেকেই হয়ে আসছে বলে জানান। আবার কোনও ইউটিউব চ্যানেলের জন্য গান করে এককালীন টাকাও পেয়েছেন বলে জানান শিল্পী। তাঁর কথায়, এককালীন টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে, কারণ, গানটি আদৌ কতটা মানুষের কাছে পৌঁছবে, তা জানা থাকে না। গানটি সাফল্য পেলে শিল্পীকে আগের টাকা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। লাভবান হন, যিনি গান গাওয়াচ্ছেন। আবার উল্টোটাও ঘটে। গান সাফল্য না পেলে যিনি গাওয়াচ্ছেন তাঁকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই বর্তমানে শিল্পীর উপার্জনের রাস্তাটা কঠিন বলেই মনে করেন জয়তী। তাঁর কথায়, এছাড়া সঙ্গীতশিল্পীর উপার্জনের ভরসা অনুষ্ঠান। তাঁর কথায়, রয়্যালটি পাওয়া সম্মানজনক হলেও অনেক শিল্পীই এককালীন টাকা চান। কারণ গান বাজনার প্রতি আর সেই বিশ্বাস কাজ করছে না, আর এটাই বাস্তব।
জয়তী চক্রবর্তী কথায়, তাঁরা তাও অনেকটা পথ পার করে এসেছেন, তবে ভবিষ্যতে শুধুই গানবাজনাকে পেশা করে সংসার চালানোটা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে কিছুটা হলেও হয়ত কঠিন হবে। হয়ত চাকরি করে পাশাপাশি গানবাজনা করবেন অনেকে। তবে যাঁরা শুধু গান-বাজনার উপর নির্ভরশীল, তাঁদের জন্য এটা অনেকটাই ঝুঁকির।
ডিজিটাল দুনিয়ার গানবাজনা প্রসঙ্গে জয়তী চক্রবর্তী বলেন, আজকাল ভিউ দিয়ে গানের বিচার হয়, তাই অর্থ আসে ঠিকই তবে যার যতটা পাওয়ার সেই হিসাবে হয়ত আসে না। জয়তীর কথায় কপিরাইটও অনেকসময় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকক্ষেত্রে রিমেক করলেও সেভাবে তাই টাকা পাওয়া যায় না। জয়তী বলেন, লোকজন আজকাল রিলস বানিয়ে, শর্ট ভিডিয়ো বানিয়ে ইউটিউবে তুলছেন, কিংবা বাড়িতে কি বোর্ড বাজিয়েও ভিডিয়ো পোস্ট করছেন। সঙ্গীতশিল্পীর কথায়, এটার জন্য শিল্পীসত্ত্বা নয়, লাগে বুদ্ধিমত্তা।
For all the latest entertainment News Click Here