ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহ সহ একাধিক অভিযোগ আনা হল চার্জশিটে- রিপোর্ট
তারকা কুস্তিগীরদের প্রতিবাদের জেরে শেষ পর্যন্ত তৎপর হয় ভারত সরকার থেকে শুরু করে পুলিশ। কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রধান এবং বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ছয় কুস্তিগীরের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে চার্জশিট তৈরি করে ফেলেছে দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশের তৈরি করা চার্জশিট অনুযায়ী, ব্রিজভূষণ যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত। এখনও পর্যন্ত তদন্ত করার ভিত্তিতে ব্রিজভূষণের সঙ্গে যৌন হেনস্থা, শ্লীলতাহানি এবং স্টক করার সংযোগ পাওয়া গিয়েছে বলেই চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে। এমন কী ১৩ জুন আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, ব্রিজভূষণ বারংবার শ্লীলতাহানি করেছেন।
দিল্লি পুলিশ রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট পেশ করেছে, সেখানে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ (ভীতি প্রদর্শন), ৩৫৪ (একজন মহিলার শ্লীলতাহানি), ৩৫৪ এ (যৌন হয়রানি), এবং ৩৫৪ ডি (স্টকিং) ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ধারাগুলির মধ্যে আবার ৩৫৪ জামিন অযোগ্য।
ব্রিজভূষণ এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, তদন্তকারীরা প্রায় ১০৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন, যার মধ্যে কোচ, রেফারি, কুস্তিগীর মিলিয়ে মোট ১৫ জন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন। তবে ব্রিজভূষণ নিজের দাবিতে অনড়। তাঁর পাল্টা দাবি, তিনি অভিযোগকারী কুস্তিগীরদের সঙ্গে কখনও দেখা করা তো দূরের কথা, তাঁর কাছে সেই কুস্তিগীরদের ফোন নম্বরও নেই।
পুলিশের চার্জশিট অনুযায়ী ব্রিজভূষণ ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ করেছেন, এমনই দাবি করা হয়েছে। অথচ সরকারের গঠন করা কমিটি কিন্তু এপ্রিলে ক্রীড়ামন্ত্রককে দেওয়া নিজেদের রিপোর্টে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা কোনও রকম অভিযোগকেই আমল দেয়নি। প্রসঙ্গত, কুস্তিগীরদের অভিযোগের ভিত্তিতেই সরকারের তরফে মেরি কমের নেতৃত্বাধীন ছয় দলের একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই কমিটি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে চলছে তীব্র বিতর্ক। টানা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া, বিনেশ ফোগাটের মতো তারকা কুস্তিগীররা। দিল্লির যন্তরমন্তরে তাঁরা তীব্র প্রতিবাদে সামিল হন। প্রত্যেকেরই দাবি ছিল, ব্রিজভূষণের কঠোর শাস্তির। প্রায় দুই মাস ধরে সেই বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলে। অবশেষে গত মাসের শেষের দিকে গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ ও ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক হয় কুস্তিগীরদের। সেই বৈঠকে তদন্তের আশ্বাস পাওয়ার পরেই সাক্ষীরা নিজেদের প্রতিবাদ তুলে নেন। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি পুলিশ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। সেই এফআইআরের ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত। এবং পুলিশ চার্জশিট তৈরি করে।
For all the latest Sports News Click Here