বেহালার খুদে ভক্তকে ট্রেনিং দিতে নিজের খরচে মুম্বই উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সচিন
পাঁচ বছরের খুদে শেখ শাহিদের স্বপ্ন সচিন তেন্ডুলকরের মতো বড় ক্রিকেটার হওয়ার। লিটল মাস্টারের বড় ভক্ত শাহিদ। সে নিজেও একেবারে ক্রিকেট অন্তপ্রাণ। সারা দিনই ব্যাট নিয়ে পড়ে থাকে। শাহিদের মনে একটি বড় ইচ্ছে ছিল, সচিনের সঙ্গে দেখা করার। সেই ইচ্ছেই পূরণ করে দিলেন স্বয়ং মাস্টার ব্লাস্টার।
সচিন নিজের খরচে মুম্বই উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন খুদে ভক্ত ও তার বাবা-মাকে। নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে তেন্ডুলকর মিডলসেক্স গ্লোবাল অ্যাকাডেমির নেটে শাহিদকে অনুশীলনও করান তিনি।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের নেটে মন দিয়ে প্রথমে শাহিদের ব্যাটিং দেখেন সচিন। তার পরে নিজেই দেখিয়ে দেন ব্যাট ধরার ও বল মারার নানা কৌশল। ছোট্ট শহিদের খেলা দেখে দারুণ খুশি হন সচিন। উচ্ছ্বসিত শাহিদের বাবা শেখ শামশের বলেন, ‘আমাদের একটাই স্বপ্ন ছিল, সচিন স্যর একবার অন্তত কাছ থেকে শাহিদের খেলা যেন দেখেন। অবশেষে তা পূরণ হয়েছে।’ হঠাৎ করে সচিন কেন বেহালার খুদেকে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন?
এর পিছনে রয়েছে বেশ মজার গল্প। ঘটনাটি বছর আড়াই আগের। ডায়পার পরেই বাড়ির ছাদে ব্যাট হাতে সাবলীল ভাবে খেলে চলেছিল আড়াই বছরের শেখ শাহিদ। এই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার পরেই মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। বিস্ময় শিশুর প্রতিভায় মুগ্ধ হন বিরাট কোহলি, কেভিন পিটারসেনের মতো তারকারাও। তাকে দেখতে বেহালার মুচিপাড়ায় চলে এসেছিলেন অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি স্টিভ ওয়া। তবে শহিদের মন যে তাতে ভরেনি। সে একবার সচিনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল।
কী ভাবে যোগাযোগ হল মাস্টার ব্লাস্টারের সঙ্গে? শামশের বলেছেন, ‘গণমাধ্যমে সচিন স্যরকে ট্যাগ করে অস্ট্রেলিয়ার ফক্স চ্যানেল শহিদের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল। এর পরেই ক্রিকেট ঈশ্বরের ম্যানেজার আমাকে ফোন করে বলেন, সচিন স্যার শহিদের খেলা দেখেছেন। ওকে পাঁচ-সাত দিনের জন্য মুম্বইয়ে ডেকেছেন অনুশীলন করাবেন বলে। আমি যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, কেউ হয়তো মজা করছেন।’
তবে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে শহিদের। ২০ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার হাত ধরে নবি মুম্বইয়ে পৌঁছয় শহিদ। পরের দিন মাঠে সচিনের সঙ্গে দেখা হয় শহিদের। শাহিদকে দেখে কী বলেছিলেন সচিন? আপ্লুত শামশের বলেন, ‘সচিন স্যর বারবার বলে দিয়েছেন, ওর উপরে যেন কোনও চাপ না দেওয়া হয়। শাহিদকে মনের আনন্দে ক্রিকেট খেলতে দিতে বলেছেন। আমার ছেলের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলেছেন।নিজের স্বাক্ষর করা ব্যাট উপহার দিয়েছেন। মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদও করেন।’
আর ছোট্ট শহিদও ভগবানের দেখা পেয়ে উচ্ছ্বসিত। সে বলেছে, ‘সচিন স্যর জিজ্ঞেস করেছিলেন চার না ছয়, কী মারতে ভালবাস তুমি? আমি বলেছিলাম, চার মারতে ভালবাসি। শুনে খুব হেসেছিলেন।’
For all the latest Sports News Click Here