বিদেশে অনির্বাণের প্রাণে বাংলার পরশ এনেছিলেন ‘মিসেস চ্যাটার্জি’ রানি
আজ থেকে প্রায় ২ বছর আগে, বিধানসভা ভোটের সময় অনির্বাণ ভট্টাচার্য তাঁর দেশের বাড়ি মেদিনীপুরে যাচ্ছিলেন। তখনই মায়ানগরি থেকে তাঁর কাছে আচমকাই একটা ফোন আসে। জানানো হয় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান পরিচালক অসীমা ছিব্বার। সেদিন তাঁকে দামিনী বসু বলেছিলেন কথা বলে ঠিক করে নিতে সবটা। এরপর, অসীমা নিজেই তাঁকে ফোন করেন। বলেন, ‘একটা ছবি করছি, তোমায় গল্পটা শোনাতে চাই।’ জুম কলে তখন সেই গল্প শোনান পরিচালক। এরপরের পরিণাম কী সেটা এখন আমরা সবাই বড়পর্দায় দেখতে পাচ্ছি।
অভিনেতা জানান পরিচালক যখন তাঁকে এই ছবির গল্প শোনাচ্ছিলেন তখন তাঁর মনে পড়ে যে এই ঘটনা তাঁর জানা। খবরের কাগজে পড়েছিলেন তিনি। সেই গল্পই এবার পর্দায় উঠে আসবে, ফলে সেটা যে আলাদা হবেই সেটা বলাই বাহুল্য। কিন্তু অসীমা তাঁকে ছবি নিয়ে কী বলেছিলেন ঠিক? অভিনেতার কথায়, ‘চিত্রনাট্য পড়া শেষ করেই অসীমা আমায় বলেন এই ছবিতে স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করলে খুব খুশি হবো আমি।’ এমন অফার পেয়ে কেমন লেগেছিল অভিনেতার? তিনি এবিপি আনন্দকে জানান, ‘প্রথমে একটু অবাক হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল রানি মুখোপাধ্যায় অভিনয় করবেন অথচ আমার অডিশন চাইছেন না!’
এরপর করোনার জন্য কাজ খানিকটা পিছিয়ে যায়। শুরু হয় শ্যুটিং। যাঁরা ছবি দেখেছেন তাঁরা জানেন এই ছবির অধিকাংশ শ্যুটিং হয়েছে বিদেশে, মূলত অনির্বাণের অংশটা। সেটা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? এই বিষয়ে তিনি সেই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি জানতাম ছবির অধিকাংশই শ্যুট হবে বিদেশে। করোনার জন্য সময় পিছিয়ে গেলেও জুম কলে রিহার্সাল চলত পরিচালক এবং লেখকের সঙ্গে। এরপর মুম্বই যাই লুক সেটের জন্য। তারপর অগস্ট মাসে আমরা এস্তোনিয়ায় যাই। যে বাড়িতে শ্যুটিং হয় সেটাকে চ্যাটার্জি বাড়ি হিসেবে সাজানো হয়। রিহার্সাল চলে। একদম সেটেই রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়। যেদিন দেখা তারপর দিনই ওঁর স্বামীর চরিত্রে আমায় অভিনয় করতে হবে। একে বিদেশি শহর, নতুন ইউনিট, নতুন আলো, সবটা মিলিয়ে হয়তো আমি খানিকটা ঘেঁটে যেতে পারতাম। কিন্তু আমার শিক্ষকরা আমার যে ভিত তৈরি করেছেন সেটার সাহায্যে আমি যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারি। তখন নিজেকে বোঝাই। আর পরদিন থেকে অভিনয় শুরু করি।’
আর রানি মুখোপাধ্যায়? তাঁর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ? এই বিষয়ে অভিনেতা বলেন, ‘আমি সেদিন সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়েছিলাম। রানি ঢুকেই প্রথম প্রশ্ন করলেন অনির্বাণ কোথায়? যেন কতদিনের চেনা। এরপর আমি হ্যালো বলতেই উনি বললেন আমি খুব খুশি যে তুমি কাজটা করছ। চলো আমরা একসঙ্গে খুব ভালো করে কাজটা করব।’ এরপর অভিনেতা তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শ্বাশতী দি, বোধি দা, সৌম্য সবাই ছিল। কিন্তু ওদের শ্যুটিং আগেই হয়ে গিয়েছিল। আমি টানা ছিলাম। তাই ওই ৪৬ দিনের শ্যুটিংয়ে আমার একমাত্র বাংলা বলার সঙ্গী ছিলেন রানি।’
For all the latest entertainment News Click Here