‘বাজিগর’ বেঙ্গালুরু, ‘মেশিন’ ATK মোহনবাগান- কোন পথে কারা পথে পৌঁছাল?
আজ আইএসএল ফাইনালে গোয়ার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে এটিকে মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু এফসি। সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে খেলা শুরু হবে। দুই দলের মধ্যে যে দলই ধারেভারে এগিয়ে থাকুক না কেন, ফাইনালে কোনও পরিসংখ্যানই যে কাজে লাগে না তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।
সেদিক থেকে দেখতে গেলে এটিকে মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু এফসি আইএসএলে যতবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে বেশিবার জিতেছে মোহনবাগান। তবে সেই পরিসংখ্যান এই কাজে লাগাতে পারেন কিনা প্রীতম কোটালরা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে এবারের টুর্নামেন্ট একটা সময় পরপর ম্যাচ হেরে প্লেঅফের টিকিট পাওয়া কার্যত কঠিন হয়ে পড়ে জুয়ান ফেরান্দোদের দলের। ঠিক যেমনটা ‘মেশিন’-র হয়। চলতে-চলতে আচমকা খারাপ হয়ে যায়। তারপর ফের ঘুরে দাঁড়ায়।
তবে শেষের দিকে পরপর বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতে নেয় তারা। ফলে প্লে-অফের জায়গা পাকা করে নেয় কলকাতার এই ক্লাব। এবারের মরশুমে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি জুয়ান ফেরান্দোর দলের। বাগানের প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়ন এফসি। আর সেই ম্যাচে হারতে হয় বাগানকে। চেন্নাইয়নের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হারতে হয় তাদেরকে। প্রথম ম্যাচেই এমন হার স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ করে সমর্থকদের।
দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় ফেরান্দোর দল। কেরল ব্লাস্টার্সকে ৫-২ গোলে হারিয়ে দুর্দান্ত কামব্যাক করে তারা। সেই সঙ্গে ডার্বিতে নামার আগে অক্সিজেন ফিরে পায় মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গকে ২-০ গোলে হারিয়ে পালতোলা নৌকা এগিয়ে যায়। ঠিক পরের ম্যাচেই মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে ২-২ ড্র করে তারা। নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধেও তিন পয়েন্ট পকেটে তুলে নেন প্রীতমরা। কিন্তু জয়ের রাস্তার ফের একবার থমকে যায় নৌকা। গোয়ার বিরুদ্ধে ৩ গোলে হার। স্বাভাবিক ভাবেই চাপে পড়ে যায় সবুজ মেরুন।
এরপর নর্থইস্ট, জামশেদপুর এবং গোয়াকে হারিয়ে প্লেঅফের স্বপ্ন দেখতে থাকেন বাগান। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় মুম্বই। ১-০ গোলে হার এবং পরের ম্যাচে চেন্নাইয়নের বিরুদ্ধে গোল শূন্য ড্র। ক্রমশ বাড়তে থাকে চাপ। ওড়িশার বিরুদ্ধে জিতলেও ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরুর কাছে হারতে হয়। তবে হায়দরাবাদ, কেরল ব্লাস্টার্স এবং ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে কার্যত প্লেঅফ নিশ্চিত করে তারা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ওড়িশাকে ২-০ গোলে হারিয়ে পাকাপাকি ভাবে সেমিতে জায়গা পাকা করে বাগান। তবে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে দুইটি লেগের ম্যাচেই গোল করতে পারেনি দুই দল। টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালে জায়গা করে এটিকে মোহনবাগান।
অন্যদিকে বেঙ্গালুরু এফসি নর্থ ইস্টকে হারিয়ে এবারের অভিযান শুরু করার ঠিক পরের ম্যাচেই চেন্নাইয়নের সঙ্গে ড্র করতে হয় সুনীল ছেত্রীর দলকে। সেখানেই থেমে থাকেনি তারা। হায়দরাবাদ, ওড়িশা, ইস্টবেঙ্গল এবং মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে পরপর চার ম্যাচে হারের মুখ দেখতে হয় বেঙ্গালুরুকে। পরপর ম্যাচ হেরে বেশ চাপে পড়ে যান সুনীলরা।
গোয়ার বিরুদ্ধে জয়ের মুখ দেখলেও পরিস্থিত একটু বদল হয়নি। হায়দরাবাদ এবং ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হারের পর নকআউট থেকে তাদের অনেকেই বাদ দিয়ে দেয়। পরপর ম্যাচ হারের পয়েন্ট টেবিলে অনেকটাই পিছিয়ে থাকে তারা। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে পরিস্থিত বদলাতে শুরু করে। এরপর টানা ৮ ম্যাচে জয়ের পর সেমিতে জায়গা করে নেয় ‘বাজিগর’ বেঙ্গালুরু। সুনীলদের এমন পারফরম্যান্সে অনেকেই অবাক। এইভাবে কামব্যাক করবে, তা কেউ ভাবতেই পারেনি। সেমিতেও প্রথম লেগে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে এগিয়ে থাকে বেঙ্গালুরু। তবে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ২ গোল করে সমান সমান করে মুম্বই। কিন্তু টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতে নেন সুনীলরা। বেঙ্গালুরুর এই ধারাবাহিকতা বেশ চিন্তায় রাখছে বাগান শিবিরকে। এখন এটাই দেখার শনিবার কোন শহরে এবারের আইএসএল ট্রফি যায়।
For all the latest Sports News Click Here