বইমেলায় গানবাজনার অনুমতি ছিল না, শিল্পীদের ‘মুশকিল আসান’-এর ভূমিকায় সৃজিত
তিনি কিছু করলেও খবর, না করলেও সেটিও খবর। কথা হচ্ছে জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়-কে নিয়ে। সদ্য শেষ হওয়া ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার শেষ দিন মেলা প্রাঙ্গণে সস্ত্রীক হাজির হয়েছিল সৃজিত। মেলার মধ্যেই তখন ছোট্ট একটুকরো জায়গায় নিজেদের মতো করে থার্ড স্টেজ নামে একটি স্ট্রিট মিউজিক ব্যান্ড গানবাজনা করছিল। ব্যান্ডের সদস্য তিন-চারজন তরুণ। তাঁদের কারও হাতে ভায়োলিন কারও বা হাতে গিটার। সেই মনমাতানো সুর শুনে ধীরে ধীরে তাঁদের ঘিরে ভিড় বাড়াতে থাকে শ্রোতার দল। এবং ভিড় বাড়তে দেখেই থার্ড স্টেজ-কে গানবাজনা বন্ধ করে দিতে বলেন মাঠে উপস্থিত গিল্ড কর্মকর্তারা। জানান জে এমনভাবে মেলায় গান করার নিয়ম নেই। প্রথমে অবাক হলেও পরিস্থিতির নড়চড় হওয়ার আশা নেই দেখে মন ভেঙে যায় ওই তরুণ-শিল্পীদের। তল্পিতল্পা গুটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছেন তাঁরা, এমন সময় মঞ্চে উপস্থিত হন সৃজিত।
স্পষ্ট করে বললে, থার্ড স্টেজ নামের ওই ব্যান্ডের ‘মুশকিল আসান’ হয়ে হাজির হন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। নিজের উদ্যোগে গিল্ডের কর্মীদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে তরুণদের আবার গানবাজনা করার সুযোগ করে দেন তিনি। কীভাবে এই ব্যাপারটিকে সম্ভব করলেন তা ফেসবুকে নিজেদের পেজে লিখে শেয়ার করেছে থার্ড স্টেজ নামের ওই ব্যান্ডের সদস্যরা।
‘সৃজিতদা’-কে কুর্ণিশ জানিয়ে থার্ড স্টেজ লিখেছে,‘গান করলেই জমে যাচ্ছিলো ভিড়! আটকানো যাচ্ছিলো না কোনোভাবেই! শিল্পপ্রেমী পুলিশও ভিড় নিয়ন্ত্রকের বদলে মনোযোগী শ্রোতা হওয়াতে , ক্রমশ চারদিকে বেষ্টনী গড়ে উঠছিলো মানুষের।ফলত বইমেলার গিল্ডের লোকজন বারবার তাড়িয়ে ফিরছিলেন থার্ড স্টেজকে! এরকমই গিল্ডের লোকজনের সঙ্গে এক কথাকাটির মুহূর্তে হঠাৎ দেখি স্বয়ং পরিচালক সৃজিত মুখার্জি আমাদের সামনে! হেসে হাতটা বাড়িয়ে দিলেন ভদ্রলোক, তারপর ব্যাপার বুঝে আমাদের চুপ করতে বলে গিল্ডের লোকজনকে যেন একা হাতে বুঝে নিলেন! উনি তাদেরকে কিছু বোঝাচ্ছিলেন আর আমরা আশ্বাস পেয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম পরের গানের। কিছু কিছু ছেঁড়া ছেঁড়া কথা কানে আসছিল, ‘ ওরা তো গান করছে…করতে দিন ‘না…অনেক জায়গাতেই করে ওরা’…’ কী সুন্দর একটা অ্যাম্বিয়েন্স ওরা বানাচ্ছে এখানে! This is why I’m proud of my city .
ভদ্রলোকের কথায় কি যে ছিলো গিল্ডের লোকের সুর হঠাৎ কড়ি থেকে কোমলে বদলে গেলো! নিজেরাই আমাদের একটি জায়গা বেছে দিলেন বাস্কিং করার জন্য! সৃজিতদা না থাকলে হয়তো পরের গানগুলো শোনানো হতো না সেদিন’
পোস্টে এই লেখার সঙ্গে একটি ছোট্ট ভিডিয়ো জুড়েছেন তাঁরা। সেখানে দেখা যাচ্ছে হাত নাড়িয়ে গিল্ডের কর্মীদের কিছু বোঝাচ্ছেন ‘অটোগ্রাফ’-এর পরিচালক। সৃজিত নিজেও ফেসবুকে থার্ড স্টেজে করা ওই পোস্টটি শেয়ার করেছেন।
প্রসঙ্গত, গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেছেন, ব্যাপারটি তাঁর ঠিক জানা নেই। তবে মেলায় গানবাজনা করার জন্য তো নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা ছিল। তবে মেলায় যে কেউ কেউ নিজেদের মতো করে গান বাজনা করেন সে তো জানা কথাই। কয়েকজন মিলে জড়ো হয়েও গান-কবিতা এবং সুরে মাতেন। তবে অযথা ভিড় করতে দেওয়া তো যায় না।
For all the latest entertainment News Click Here