‘প্রযোজক ঝাঁপিয়ে পড়ে আমার জামা খোলার চেষ্টা করেন’, বিস্ফোরক ইন্দ্রাণী হালদার
বলিউড ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে কাস্টিং কাউচের শিকার হয়েছিলেন ‘শ্রীময়ী’। প্রকাশ্যে প্রথমবার জীবনের এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার। মিটু নিয়ে এবার সরব তিনি।
বাংলা টেলিভিশন তথা সিনেমার অন্যতম সফল অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার। পঞ্চাশের গণ্ডি পেরিয়েও দাপটের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। শুধু বাংলাতেই নয়, হিন্দি টেলিভিশনেও সফল ইন্দ্রাণী হালদার। বেশ কিছু হিন্দি চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন তিনি। এবার গায়ে কাঁটা দেওয়া অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন সবার প্রিয় মামণিদি।
বর্তমান কাস্টিং কাউট, মি টু এই শব্দগুলির সঙ্গে সকলেই পরিচিত। ২০১৮ সাল থেকে সারা বিশ্বে জুড় শুরু হল মিটু মুভমেন্ট (Me Too Movement) মাথাচাড়া দিয়েছে। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে শামিল হলে ইন্দ্রাণী হালদার জানান আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে এক প্রযোজকের কুনজর পড়েছিল তাঁর উপর (Indrani Halder MeToo)। বরাত জোরে সেই যাত্রায় বেঁচে যান কুড়ি কোঠায় সদ্য পাওয়া দেওয়া অভিনেত্রী।
উন্মেষ নামক একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজের জীবনের এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইন্দ্রাণী হালদার। অভিনেত্রী বলেন, ‘তখন আমার ২০ বছর বয়স বম্বে গিয়েছিলাম একটা ছবি করতে, একদম জীবনের প্রথমদিকের ছবি। সেই সময় আমি এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই।’ অভিনেত্রী জানান, তাঁকে সকালের ফ্লাইটে মুম্বইয়ে ডাকা হয়, অভিনেত্রীর বাবার টিকিট কাটা হয় বিকালের। কোনও দামী হোটেলে না রেখে লিঙ্কিং রোডের এক সাধারণ হোটেলের রুম দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শুরুতেই খটকা লাগে তাঁর, এরপর প্রযোজক আচমকা ফোন করে জানান, তিনি দেখা করতে আসবেন। ঘাবড়ে গিয়েছিল অল্পবয়সী ইন্দ্রাণী। রুমে এসে মুম্বইয়ের সেই নামী প্রযোজক সুযোগ বুঝে খারাপ প্রস্তাব দেন অভিনেত্রী। রীতিমত শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন।
ইন্দ্রাণী হালদার জানান, ‘আমি বারবার করে বলেছিলাম এটা করবেন না প্লিজ। আমি এভাবে কখনও কাজ পাই নি পেতে চাইও না।’ প্রযোজক পালটা বলেন, ‘তুম বাঙালি লড়কি তুমকো হাম বড়া হিরোইন বানাগেয়া, বড়া বড়া হিরোইন হামারে কদমোমে রহতা হ্যায়’। (তুমি বাঙালি হিরোইন,তোমাকে আমি অনেক বড় অভিনেত্রী তৈরি করব বলিউডের, অনেক নামীদামী হিরোইনরা আমার পায়ের তলায় থাকে)। দৃঢ় কন্ঠে নায়িকা বলেন, ‘হতে পারে বড় বড় হিরোইন আপনার পায়ের তলায়। কিন্তু আমি এভাবে কাজ করিনি, আমাকে কলকাতা থেকে ডেকে এনে কাজ দিয়েছেন কোনও সমঝোতা বা কম্প্রোমাইজ আমি করব না।’
এরপর মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকতে থাকেন ইন্দ্রাণী, আর বলেন, ‘ভগবান, আজ কি আমি ধর্ষণের শিকার হব!’ প্রযোজক তখন নিজের জামাকাপড় খুলতে শুরু করেছেন, ওমনি তাঁর ফোন বেজে উঠে। ফোনটি করেছিলেন ওই প্রযোজকের স্ত্রী। ইশারায় ইন্দ্রাণীকে চুপ করে থাকতে বলছিলেন প্রযোজক, দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেন নায়িকা। জোরে জোরে কাশতে শুরু করেন। কাশির আওয়াজ ফোনের ওপারে পৌঁছেছিল। স্ত্রীকে নিজের সঠিক অবস্থান জানাতে একপ্রকার বাধ্যই হন প্রযোজক। এরপর হোটেল রুম থেকে চলে যান প্রযোজক, শুধু বলে যান- ‘তুমহারা কুছ নেহি হোগা, তুম বেকার হো একদম’।
তবে জোর গলায় ইন্দ্রাণী হালদার জানান, ‘সেদিন উনি আমার কনফিডেন্সটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমি কোনওদিন কম্প্রোমাইজ করে হিরোইন হতে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি’। অভিনেত্রী বলেন, ‘ওই প্রযোজকের নামটা নিলাম না কারণ উনি আর বেঁচে নেই। তবে পরবর্তীকালে যখনই ওঁনার মুখোমুখি হয়েছি উনি কোনওদিন চোখ তুলে আমার দিকে তাকাতে পারেননি’।
ছবি বা প্রযোজকের নাম না নিলেও ইন্দ্রাণী জানান, ওই ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন বাঙালি।
For all the latest entertainment News Click Here