প্রয়াত সত্যজিতের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ প্রযোজক সুরেশ জিন্দল, বয়স হয়েছিল ৮০ বছর
৮০ বছর বয়সে চলে গেলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ ছবির প্রযোজক সুরেশ জিন্দল। দীর্ঘ রোগভোগের পর বৃহস্পতিবার প্রয়াত হন বর্ষীয়ান ফিল্মমেকার। দীর্ঘ একমাস ধরে দিল্লির এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। তবু শেষরক্ষা হল না। একের পর এক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ছিল সুরেশ জিন্দলের। শুক্রবার দিল্লির লোধি শ্মশানঘাটে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে, খবর পরিবার সূত্রে।
হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সমান্তরাল ধারার ছবির বিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন সুরেশ জিন্দল। ‘রজনীগন্ধা’ (১৯৭৪), ‘কথা’ (১৯৮২) এবং সত্যজিৎ রায়ের একমাত্র হিন্দি ছবি ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’র (১৯৭৭) মতো ছবির প্রযোজক ছিলেন তিনি। অস্কার জয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বইও লিখেছিলেন। বইটির নাম ‘মাই অ্যাডভেঞ্চার্স উইথ সত্যজিৎ রায়: মেকিং অফ শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’। সত্তরের দশকে নতুন প্রযোজকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুরেশ জিন্দল, সত্যজিতের মতো প্রথিতযশা পরিচালকের সঙ্গে কাজের সুখস্মৃতি এই বইয়ের পাতায় কলমবন্দি করেছিলেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো সিনেমা নিয়ে তাঁর জীবনদর্শন বদলে দিয়েছিল বলে জানান সুরেশ।
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা, তারপর মার্কিন মুলুকে চাকরি। কিন্তু সিনেমার পোকা কোনওদিন পিছু ছাড়েনি তাঁর। মনি কৌলের ‘নওকর কি কমিজ’, পামেলা ব্রুকের ‘ট্রেন টু পাকিস্তান’-এর মতো ছবি প্রযোজনার সঙ্গে জড়িয়ে থেকেছেন তিনি। অস্কার জয়ী ছবি ‘গান্ধী’ (১৯৮২)-র সঙ্গেও জড়িয়ে সুরেশ জিন্দলের নাম। আক্ষরিক অর্থ তিনি ছিলেন হিন্দি ছবির ‘গেম চেঞ্জার’।
দিল্লিতে একাই বসবাস করতেন বর্ষীয়ান প্রযোজক। কোনওদিনই নিজেকে বলিউডের একজন হিসাবে পরিচয় দেননি। আক্ষরিক অর্থে তিনি ছিলেন ‘আউটসাইডার’। পরিচালক সঞ্জয় লীল বনশালি এবং রোহিত শেট্টি বহুবার ‘কথা’ ছবির স্বস্ত্ব কেনবার চেষ্টা করেছিলেন সুরেশ জিন্দলের কাছ থেকে, কিন্তু প্রত্যেকবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁদের।
সুরেশ জিন্দলের মৃত্যু নিয়ে পরিবারের তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘আমাদের হৃদয়ে আজীবন থাকবেন… সুরেশ জিন্দল। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তাঁর মৃত্যুর খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি। আগামিকাল লোধি শ্মশানঘাটে দুপুর ২টোয় ওঁনার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে’।
For all the latest entertainment News Click Here