পেলের পরে চলে গেলেন আরও এক কিংবদন্তি ফুটবলার, ইতালির হয়ে খেলেছেন দুটি বিশ্বকাপ
৫৮ বছর বয়সে মৃত্যু হল ইতালির হয়ে দু’বার বিশ্বকাপের দলে থাকা সদস্য জিয়ানলুকা ভিয়ালির। শরীরে ক্যানসার ফিরে আসার কারণে গত মাসের মাঝামাঝি সরে দাঁড়িয়েছিলেন ইতালির সহকারী কোচের দায়িত্ব থেকে। কথা দিয়েছিলেন, রোগ সারিয়ে দ্রুত ফিরে আসবেন। সেই কথা রাখতে পারলেন না জিয়ানলুকা ভিয়ালি। শুক্রবার মৃত্যু হল ইতালির প্রাক্তন ফুটবলারের। সে দেশের ক্লাব সাম্পাদোরিয়ার তরফে এই খবর জানানো হয়েছে। ১৯৮৬ এবং ১৯৯০ সালে ইতালির বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন… নিজের মন্তব্য না বলে প্রশ্ন করুন-সাংবাদিককে ঝাড় দিলেন পাক বোলিং কোচ শন টেট
২০১৭ সালে ভিয়ালির অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার ধরা পড়েছিল, কিন্তু পরে ২০২১ সালে তার পুনরায় রোগ নির্ণয় করা হয়েছিল। ডিসেম্বরে, তিনি তার স্বাস্থ্যের দিকে মনোনিবেশ করার জন্য ইতালিয় জাতীয় দল থেকে অস্থায়ী অবসর ঘোষণা করেছিলেন। ভিয়ালি ইতালির হয়ে ৫৯টি ম্যাচ খেলেছেন এবং ১৯৯৬ সালে চেলসিতে যোগ দেওয়ার আগে এবং ১৯৯৮ সালে প্লেয়ার ম্যানেজার হওয়ার আগে জুভেন্টাসের সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিলেন।
২০২১-এ ইউরো কাপ জিতেছিল ইতালি। সেই দলের কোচ রবার্তো মানচিনিকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর কোচিং স্টাফের সদস্য ছিলেন ভিয়ালি। সেই বছরেরই শেষের দিকে ক্যানসার ফেরার পরেও তিনি ছিলেন অদম্য। জানিয়েছিলেন, লড়াই শেষ হয়নি। বলেছিলেন, ‘টিউমার এখনও রয়েছে অনাহূত অতিথির মতোই। আপাতত শরীরের দিকে নজর দিচ্ছি। আমি লড়াই চালিয়ে যেতে চাই। আরও অনেক বছর ফুটবলের হয়ে কাজ করতে চাই।’
আরও পড়ুন… IND vs SL Records: হারলেও সূর্য ও অক্ষরের হাত ধরে একাধিক রেকর্ড ভারতের, ব্যক্তিগত নজির বাঁ-হাতিরও
ইতালির সিরি এ-র ক্লাব সাম্পাদোরিয়া এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘তুমি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছ। আমরাও তোমাকে অনেক কিছু দিয়েছি। আমাদের মধ্যে অফুরান ভালোবাসা ছিল। এমন একটা বন্ধন, যা কোনও ভাবেই তোমার মৃত্যুর সঙ্গে শেষ হয়ে যাবে না। আমরা তোমাকে ভালোবেসে এবং শ্রদ্ধা জানিয়েই যাব। কারণ তুমি জানো, তুমি পেলের থেকেও ভালো। যা কিছুই হোক না কেন, আমাদের বন্ধন কোনও দিনও ভাঙবে না।’ ইতালির আর এক ক্লাব উদিনেসে লিখেছে, ‘মাঠ এবং মাঠের বাইরে একজন দারুণ মানুষ, চ্যাম্পিয়ন এবং লড়াকু। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলে গেলে। তবে তোমাকে আমরা কোনও দিন ভুলব না।’
ইতালির প্রাক্তন ফুটবলার ভিয়ালি চেলসির হয়ে ৮৭ ম্যাচে ৪০ গোল করেছেন। তার আগে ইতালির ঘরোয়া লিগে সাম্পাদোরিয়া এবং জুভেন্টাসের হয়ে খেলেছেন। দু’টি দলের হয়েই লিগ জিতেছেন। জুভেন্টাসের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগও জিতেছেন। সাম্পাদোরিয়ায় তাঁর সঙ্গে খেলতেন এখনকার ইতালি দলের কোচ মানচিনিও। দু’জনে মিলে বহু গোল করেছেন। সাম্পাদোরিয়া ১৯৯২ সালে তৎকালীন ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে উঠলেও হারে বার্সেলোনার কাছে। দেশের হয়ে ৫৯ ম্যাচে ১৬টি গোল রয়েছে ভিয়ালির। কিন্তু ক্লাবের ছন্দ কোনও দিনই দেশের হয়ে দেখাতে পারেননি তিনি। ১৯৮৬ এবং ১৯৯০ সালে ইতালির বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন তিনি।
ভিয়ালি জুভেন্টাসে যাওয়ার আগে ক্রেমোনিস এবং সাম্পডোরিয়ার হয়ে খেলেছিলেন। চেলসির প্রাক্তন স্ট্রাইকার এবং ম্যানেজার জিয়ানলুকা ভিয়ালি ৫৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। সাম্পডোরিয়ার সঙ্গে আট মরশুম সিরি এ শিরোপা এবং ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ জেতার পর তিনি ১২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিশ্ব রেকর্ড অর্থ নিয়ে ১৯৯২ সালে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছিলেন। ভিয়ালি প্রথম ইতালিয়ান ছিলেন যিনি প্রিমিয়ার লিগের দল পরিচালনা করেন। মরশুমের শেষে রুড গুলিটের কাছ থেকে দায়িত্ব নেন, লিগ কাপ, উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ এবং উয়েফা সুপার কাপে ব্লুজদের জয়ের পথ দেখানোর আগে। তিনি ২০০০ এফএ কাপ ফাইনাল এবং চ্যারিটি শিল্ডেও চেলসিকে জয়ের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২০১৭-এ অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসার ধরা পড়েছিল ভিয়ালির। তিন বছর পরে জানানো হয়, আর কোনও বিপদের সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এক বছর পরেই ফিরে আসে ক্যানসার। গত ডিসেম্বরে যখন ভিয়ালির ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন শরীরের দিকে নজর দেওয়ার কারণেই ফুটবল সংক্রান্ত কোনও কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে চাননি তিনি। সেই বিরতিও বাঁচাতে পারল না তাঁকে।
For all the latest Sports News Click Here