পূর্ণ দৈর্ঘ্যের নির্বাক ছবি, ‘জুতো’র ভাবনা কীভাবে এল সৌরিশের মাথায়

চেনা ছকের বাইরে এ যেন এক অন্য গল্প। যে ছবিতে কোনও সংলাপ নেই, অথচ এমন কিছু মানুষের কথা মাথায় রেখে তৈরি, যা সংলাপ না বলেও মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে। স্বাধীনভাবে পরিচালিত এই নির্বাক চলচ্চিত্র। নাম ‘জুতো’। ফিচার ফিল্ম পরিচালনায় নবাগত সৌরিশ দে। ছবিতে দুই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভাস্কর দত্ত এবং চলন্তিকা গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজের কমলা রঙের জুতোর প্রতি অগাধ ভালোবাসা এক ব্যক্তির। জুতোর ঘোরেই তাঁর দিন কাটে। জুতো পরিষ্কারের সময় প্রেমিকার ফোন এলেও দেখার সময় নেই তাঁর। এমনকি বিরক্ত হয়ে বার বার উপেক্ষা করে সেই ফোন। একদিন হঠাৎই জুতোটা ছিঁড়ে যায়। এরপর? গল্পের শেষেও রয়েছে মজার ট্যুইস্ট। আদ্যোপান্ত মজার মোড়কে তৈরি নির্বাক চলচ্চিত্র ‘জুতো’। 

বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই ধরনের ছবি বানানোর কথা মাথায় কী করে এল? হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে সৌরিশ দে জানিয়েছেন, ‘আসলে ছোট থেকে অনেক শর্ট ফিল্ম বানিয়েছি। তখন থেকেই নির্বাক শর্টফিল্ম বানাতে ভালো লাগত। কারণ বিষয়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয় আমার। সংলাপ না বলে একটা মানুষের মনে দাগ কাটা, সংলাপ বলে বোঝানোর থেকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং।’

২০১৬ সালের শেষের দিকে এই ফিচার ফিল্মের স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু করেন সৌরিশ। তাঁর কথায়, ‘সেই সময় সলমন খানের একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ একটা উন্মাদনা চলছিল। ঠিক সেই সময় এক প্রেক্ষাগৃহের সামনে দুই মূক-বধির ব্যক্তিকে দেখতে পাই। এক কোণায় দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে আকারে-ইঙ্গিতে আলোচনায় ব্যস্ত তাঁরা। কিন্তু ওই পোস্টার বা সলমনের ছবি সম্পর্কে ওঁদের কোনও উত্তেজনাই ছিল না। আমার মনে দাগ কাটে। মনে হয়েছিল ওঁরা হয়তো এই বিষয়টাকে বা মিউজিকগুলি উপভোগ করে না বা করতে পারে না। তাই ছবিটি নিয়ে হয়তো তাঁদের কোনও উত্তেজনাও ছিল না।’

‘জুতো’র প্রেস কনফারেন্সের ছবি
‘জুতো’র প্রেস কনফারেন্সের ছবি
‘জুতো’র প্রেস কনফারেন্সের ছবি
‘জুতো’র প্রেস কনফারেন্সের ছবি

‘তখনই মনে আসল, আমি যেমন নির্বাক শর্টফিল্ম বানাই ছবিটি যদি তেমন হয়, তাহলে হয়তো ওঁরা ভিজ্যুয়াল দেখে উপভোগ করতে পারবে এবং সেই ভিজ্যুয়ালই একটা গল্প বলে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে এই ভাবনার সূত্রপাত।’

ছবির নাম ‘জুতো’ কেন? সৌরিশ জানিয়েছেন, ‘জুতো ভাবনাটা আসলে স্ক্রিপ্ট লিখতে লিখতে এসেছে। কারণ জুতো নিয়ে অনেক মানুষের অবসেশন খেয়াল করেছি। মজার বিষয় হল আমারও কিন্তু একসময় ছিল। কিন্তু ছবিতে যতটা দেখানো হয়েছে এতটাও ছিল না। সেই নিয়েই আমার মাথায় একটা ধারনা আসে, জুতো নিয়ে যদি কোনও মানুষের অবসেশন থাকে, তাহলে সেটা কী হতে পারে। এই পুরো ছবিতে হিসেব মতো জুতোটাকে আসল চরিত্র ধরা যেতে পারে। সেইটা নিয়ে একটা মানুষের একদিনের জার্নি। সেইটা দেখাতে গিয়ে, স্ক্রিপ্টটা লিখতে লিখতে মনে হয়েছে, জুতো-ই যথাযথ নাম হতে পারে।’

আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নজরুল তীর্থে দেখানো হবে ‘জুতো’। ৫০ জন মূক-বধির ব্যক্তিদের জন্য ছবি দেখানোর বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৮০ মিনিটের পূর্ণ দৈর্ঘ্যের এই নির্বাক ছবি সর্বসাধারণের কাছে আনতে চেয়েছিলেন সৌরিশ। চারপাশে বানিজ্যিক এবং ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত ছবির ভিড়ের মাঝে সাদামাটা কাস্ট নিয়ে ‘জুতো’র টিম, যা এই বাজারেও একটা অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ তাঁদের কাছে। তবে এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলির ছবি দেখে আনন্দ পাওয়াটাও আসল বলে মনে করেন সৌরিশ।

 

For all the latest entertainment News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.