পর্দার ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র কাহিনি কতটা সত্যি? ধর্মান্তরিত মেয়ে জানালেন কোন কথা
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই ধরনের মতামতই রয়েছে। কেউ কেউ গল্পটিকে অপপ্রচার ও মিথ্যা বলছেন। একই সঙ্গে নির্মাতাদের দাবি, ছবিটি সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত। এদিকে ধর্মান্তরের জালে আটকে পড়া কেরালার এক মেয়ের ঘটনাও সামনে এসেছে।
শ্রুতি নামের সেই মেয়ে জানিয়েছেন কীভাবে তিনি রহমত নামে পরিচয় পেয়েছেন। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ফিল্মটি সম্পর্কে তিনি কী মনে করেন এবং এতে কতটা সত্যি রয়েছে, তাও বলেছেন তিনি।
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটি নিয়ে টানা উত্তেজনা এবং আলোচনা চলছেই। টিজার প্রকাশের পর থেকেই বিতর্কের মুখে পড়ে ছবিটি। ট্রেলর প্রকাশের পর এর বিতর্কিত বিষয়বস্তু কিছুটা সরিয়েও ফেলা হয়েছে। তার পরেও দক্ষিণের অনেক রাজ্যেই মুক্তি পায়নি এই ছবি।
অনেকে এটাকে তাঁদের ধর্মের অবমাননা আখ্যা দিয়ে সিনেমাটির প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞার দাবিও করেছেন। এদিকে এক সংবাদমাধ্যমে ধর্মান্তরের ফাঁদে আটকে পড়া এক মেয়ের গল্প উঠে এসেছে। ছবিতে যা দেখানো হয়েছে, তা নিখুঁত বলে মনে করেন তিনি।
(আরও পড়ুন: ‘পর্দায় হিন্দু সন্ন্যাসীদের ধর্ষক হিসাবেও তুলে ধরা হয়, তার বেলা?’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মুক্তি আটকালো না হাইকোর্ট)
এই মেয়েটি বলেছেন, তিনি কেরালার কাসারগোদে থাকতেন। তিনি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কলেজে পড়ার সময়ে অর্থাৎ স্নাতকস্তরে তাঁর অধিকাংশ বন্ধুই ছিলে অন্য ধর্মের। তাঁরা তাঁকে ইসলাম সম্পর্কে এত কিছু বলেন যে, তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি জানান, তার বন্ধুরা ইসলামের নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করতেন। হিন্দু ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করতেন। যদিও তিনি নিজে তাঁর ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না।
ফলে প্রশ্নের উত্তর পেতে, তিনি টিভিতে জয় হনুমান এবং ওম নমঃ শিবায়ের মতো সিরিয়াল দেখতে শুরু করেন। তিনি এগুলি থেকে যা জানতেন, শুধুমাত্র তার উপর নির্ভর করেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতেন। যেগুলি সম্পর্কে জানা ছিল না, তেমন প্রশ্নের মুখোমুখি হলে চুপ করে থাকতেন। তিনি বলেন, তাঁর সহপাঠীরা এর খুব ভালো সুযোগ নিয়েছিলেন।
এই মেয়েটি বলেন, তাঁর বন্ধুরা বলতেন, পর্দা প্রথা মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য। তাঁরা তাঁদের মতামত এমনভাবে ব্যাখ্যা করতেন, যাতে মনে হয় তাঁরা সঠিক কথাই বলছেন। শুনে শ্রুতির ভালো লাগতে শুরু করে। তিনি আগ্রহ পেয়ে যান। তাঁর দাবি, তাঁর সেই সব বন্ধুরা হিন্দুদের উৎসব নিয়ে মজা করতেন। তাঁরা নাকি বলতেন, হিন্দুদের উৎসবে ছেলেরা ভুলভাবে মেয়েদের স্পর্শ করার সুযোগ নেয়।
(আরও পড়ুন: ‘ঘৃণার জেরে দমবন্ধ লাগবে…’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ টিমকে সর্তক বাণী বিবেকের)
শ্রুতিকে দেওয়া হয় জাকির নায়কের বক্তৃতার প্যামফ্লেট, বই, সিডি। তিনি ইসলামী ধর্মীয় নেতাদের বক্তৃতা শুনতে শুরু করেন। তখন তাঁর ভালোই লাগে বলে তিনি জানান। তাঁর মনে হচ্ছিল, অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সে সময়ে তিনি হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্ম সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কার কাছ থেকে শিখবেন, তা তিনি জানতেন না। তাই ইন্টারনেটে সার্চ করতে থাকেন।
এর পরেই নানা কারণে তাঁর মধ্যে বিভ্রান্তি শুরু হয়। শ্রুতি নামাজ পড়া শুরু করেন এবং একবার নিজের মাকে মারধরও করেন। কারণ তাঁর চোখে তাঁর মা ছিলেন কাফের। শ্রুতি বলেছেন, ‘আমি নামাজ পড়তে যাচ্ছিলাম এবং আণার মা আমার পছন্দের খাবার নিয়ে আসেন। সে সময়ে আমি রেগে গিয়ে তাঁর পেটে আঘাত করি।
শ্রুতি বলেছিলেন, সে সময়ে তাঁর মন এতটাই বদলে গিয়েছিল যে, তিনি যা করতেন, সেটিই তাঁর কাছে সঠিক বলে মনে হত।
‘দ্য কেরালা স্টোরি’র গল্পের সঙ্গে এর কিছুটা মিল রয়েছে। ছবিটি শালিনী ও তার বন্ধুদের গল্প বলে। সেখানো হয়েছে কীভাবে কিছু কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়। তার পরে তাঁদের পরিবার থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্ররোচিত করা হয়, গর্ভধারণ করানো হয়, এবং সন্ত্রাসবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।
শালিনীর নাম হয় ফাতিমা। সে আইএসআইএস নামক জঙ্গী সংগঠনে যোগ দেয়। ধরা পড়লে সে এই যাবতীয় ঘটনা শোনায়।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup
For all the latest entertainment News Click Here