পরম ‘ফেলু’র চোখে চরম ফেলু কে? সৌমিত্র-সব্যসাচী-টোটা না ইন্দ্রনীল? জানল HT বাংলা

বেশকিছু সময় ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ‘সাবাশ ফেলুদা’। সত্যজিৎ রায়ের ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’-এর গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সিরিজ। তবে অরিন্দম শীল পরিচালিত এই সিরিজে ‘ফেলুদা’, ‘তোপসে’রা হাজির হয়েছেন আধুনিকতার মোড়কে। একসময়ের জনপ্রিয় ‘তোপসে’ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এখানে ফেলুদা। সিরিজের টিজার, ট্রেলার মুক্তি পেতেই তীব্র ট্রোলিংয়ের মুখে পড়ে ‘সাবাশ ফেলুদা’ সিরিজ, ও ‘ফেলুদা’ পরমব্রত। যদিও স্ট্রিমিং শুরু হতেই সেই ছবিতে এসেছে বদল। আসছে প্রশংসার বন্যাও। সবমিলিয়ে নানান টুকিটাকি বিষয় নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে খোলামেলা কথা বললেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

এখন ‘ফেলুদা’ কি ভীষণ ব্যস্ত?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: আমার ওয়েব সিরিজটার জন্য একটু ব্য়স্ত। ‘ভাদুড়িবাবু’র শ্যুটিং শুরু হচ্ছে।

‘সাবাশ ফেলুদা’ নিয়ে এত ট্রোলিং, এখন আবার প্রশংসাও আসছে কী বলবেন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: ফেলুদা নিয়ে ট্রোলিংয়ের ঘটনা কিন্তু এখন পুরনো। ট্রোল হচ্ছে বললে ভুল হবে। এটা আর ঘটমান বর্তমান নয়। সিরিজটার স্ক্রিনিং শুরু হওয়ার পর ছবিটা বদলেছে। এই মুহূর্তে এই ওয়েব সিরিজটিই ওই OTT-মাধ্যমের মোস্ট ওয়াচ শো। ১৭ মিলিয়ান ওয়াচিং মিনিট, আমরা তাই খুশি।

আর ট্রোলিং যে হয়েছে সেটাও স্বাভাবিক। কেউ একসময় তোপসে করেছেন, সেই ব্যক্তিই আবার ফেলুদা করছেন। এটা সাধারণত হয়না। তবে এক্ষেত্রে হয়েছে। তাই কথা হবেই। আসলে ‘ফেলুদা’, ‘ব্যোমকেশ’, ‘প্রফেসর শঙ্কু’, এগুলির সঙ্গে বাঙালি পাঠক বা দর্শকদের মনে (বিশেষ করে পাঠকদের) একটা আলাদা সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে রয়েছে। সিরিজটা না দেখে তাঁদের এটা হজম করতে সমস্যা হবে, স্বাভাবিক। তবে আমি একটুও বিচলিত নেই, বিব্রত নই, একফোঁটাও নই। যখনই ফেলুদা করব ঠিক করেছিলাম, তখন থেকেই পরিচালক, প্রযোজক, সকলেই এটা জানতাম।

<p>'ফেলুদা' পরমব্রত</p>

‘ফেলুদা’ পরমব্রত

স্ট্রিমিং শুরু পর অনেকে বলছেন, পরমব্রত একার কাঁধে সিরিজটা টেনেছেন, আবার এটাও বলছেন এখানে ফেলুদা-তোপসের সেই সংযোগটা যেন বিচ্ছিন্ন…

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: এগুলো মানুষজনের ব্যক্তিগত মতামত। লোকজন দেখে রিভিউ দিচ্ছেন, এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। কারোর ভালো লাগবে, কারোর আবার মনে হবে এটা ঠিক হচ্ছে না। রিভিউ তো ব্যক্তিগত। কারোর কিছু বেঠিক মনে হলে আমি যেমন সেটাকে চ্যালেঞ্জ করতে যাব না, তেমনই সেটাকে মান্যতা দেব কিনা, সেটা আবার আমার বিষয়।

সাহিত্য নির্ভর গল্প বলেই কি এত কথা?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: আসলে যেকোনও সাহিত্য নির্ভর গল্প হলেই যে এমনটা হত তা নয়। এটা হচ্ছে ‘ফেলুদা’ বলেই। আমাদের বাঙালিদের গর্বের কিছু জায়গা আছে। স্বাধীনতার পরে গর্ব করার মতো আমরা যে অনেক কিছু পেয়েছি, তেমন নয়। তবে বাছা বাছা কিছু ব্যক্তিত্বকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। কিছু সাহিত্যও তাই। তাঁদের নিয়ে তাই সংরক্ষণশীল মানসিকতা রয়েছে, সেটা স্বাভাবিক। তবে ‘বদল নিয়ে’ ক্ষণিকের এই প্রতিক্রিয়া বাইরে একটা বৃহত্তর জায়গা রয়েছে। সেটা হয় ২৫ বছর পর গিয়ে মূল্যায়িত হবে। সময়ের সঙ্গে এই সমস্ত প্রিয় চরিত্রগুলির মেজাজ অক্ষুণ্ণ রেখে সময়ের সঙ্গে বদল করার প্রয়োজন। যাতে সেটা ১০০ বছর পরও প্রাসঙ্গিক থাকে। প্রিয় চরিত্রগুলির সংরক্ষণ প্রয়োজন নাকি ব্যাপারটা খুলে দিলে এটা আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে, সেটা অবশ্য তর্ক সাপেক্ষ।

পরমব্রত তাহলে সময়ের সঙ্গে চরিত্রগুলির বদলের পক্ষে?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: সেটা আমার কথায় বোঝাই যাচ্ছে…. (হেসে)

একসময়ের ‘তোপসে’, আজকের তোপসে ঋতব্রতকে চরিত্রের জন্য কতটা হেল্প করতে পেরেছেন ?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: পেরেছি নিশ্চয় কিছুটা (হাসি)। ঋতব্রত ভালো অভিনেতা। ওঁর বয়সে আমি যখন তোপসে করেছি, তখন কিন্তু এত প্রশিক্ষিত অভিনেতা ছিলাম না। ওঁর একটা লম্বা থিয়েটারের লিনেজ আছে। স্টেজে ও যে নাটকগুলি করে, সেটা দেখে চমৎকৃত হতে হয়। ওর বয়সে এতটা পরিশীলিত ছিলাম না। একদম সত্যি কথাই বলছি। ওঁর বয়সে আমি ওঁর ধারে কাছেও আসতে পারতাম না। তাই যে খুব বেশি ওকে বলতে হয়েছে তেমন নয়।

আরও পড়ুন-শ্বাস নিতে অসুবিধা হত, হাঁপিয়ে যেতাম, মাটিতে বসলে উঠতে পারতাম না: অকপট ঋতাভরী

<p>'ফেলুদা', তোপসে 'ঋতব্রত'</p>

‘ফেলুদা’, তোপসে ‘ঋতব্রত’

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, টোটা রায়চৌধুরী ফেলুদা করেছেন, তোমার চোখে কে কেমন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: এগিয়ে অবশ্যই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ওঁর উপরে কথা হবে না। আর বেনু কাকুর (সব্যসাচী চক্রবর্তী) ফেলুদার সঙ্গে আমি তোপসে ছিলাম। ওই জুটিটা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তাই ওই ফেলুদাকে এগিয়ে রাখব। বাকি ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তে হত্যাপুরী আমার দেখা হয়ে ওঠেনি। টোটাদার ওয়েবসিরিজ কিছুটা দেখেছি, ভালোই লেগেছে।

বাংলা ছবিতে কম কাজ করছ কেন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: কম কাজ করছি অভিনেতা হিসাবে। হ্যাঁ, এটা সত্য়ি। প্যানডেমিকের পর নতুন পরিচালক প্রযোজকদের সঙ্গে কিছু ছবিতে কাজ করেছিলাম। তখন অনেক ভালো গল্প ও ভাবনার অকাল মৃত্য়ু দেখেছি। সঠিক পরিকল্পনা ও ভাবনা অভাবে। তখন থেকে একজন সৃজনশীল মানুষ হিসাবে খারাপ লেগেছে। মনে হয়েছে এটা হয়ত না করলেই পারতাম। আমি আসলে আফসোস করায় বিশ্বাস করি না। কারণ মন দিয়ে কাজ করি, তারপরেও যখন আফসোস হয়েছে, তখন ভেবেছি এভাবে কাজ করব না। যে গল্প ইন্টারেস্টিং লাগছে, তাঁদের আমার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে বলছি, তাতে যাঁরা রাজি হচ্ছেন তাঁদের সঙ্গে কাজ করছি।

যদিও সকলের জন্য এটা অবশ্য প্রযোজ্য নয়, যেমন SVF, সুরিন্দর, এসকে সহ আরও কিছু প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে, এটা ছবির ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরে রয়েছেন। ওঁরা জানেন কীভাবে কী করতে হয়।

বলিউড ও টলিউড দুই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, পার্থক্য কোথায়?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: যত্নের পার্থক্য। কোথায় কোনটা বেশি এটা মুখে নিশ্চয় বলতে হবে না। উইন্ডোজ সহ বেশকিছু প্রযোজনা সংস্থা যত্ন করে কাজ করেন। তবে কয়েকটি প্রযোজনা সংস্থাকে নিয়ে তো আর ইন্ডাস্ট্রি নয়। যদি বাংলা ছবিকে ট্র্য়াকে ফেরাতে হয়, তাহলে আরও যত্ন ও পরিকল্পনার দরকার।

সাম্প্রতিক সময়ে বক্স অফিসে বাংলা ছবির রেকর্ড খারাপ

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: সাম্প্রতিক নয় অনেকদিন ধরেই নেই। গোটা ১০০টা ছবি মুক্তি পেলে তার মধ্যে ৪টে হয়ত চলেছে। ওই যে বললাম যত্নের অভাব।

২০২৩-২৪-এ পরমব্রতকে কোন ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি দেখতে পাব?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: বাংলা ও হিন্দি মিশিয়ে কাজ করছি। পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা সব ভাবেই। পরিচালক, ও প্রযোজক হিসাবে ‘হাওয়া বদল-২’ ও ওয়েব সিরিজটা করছি। এছাড়াও আরও কিছু রয়েছে।

টলিউডে আর্থিক কেলেঙ্করিতে অনেকের নাম জড়িয়েছে, কী বলবেন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: আমার মনে হয় একটু সাবধানে কাজ করা ভালো। যে দলীয় বিষয়ই হোক, যে রঙের টাকাই হোক, আসলে ছবি করতে লগ্নীর প্রয়োজন। আর সেই লগ্নী কার মাধ্যমে, কোথা থেকে আসছে, সেটা আমরা অনেকেই জানি না। শুধু কলকাতাতেই নয়, সব জায়গাতেই এটা হয়। অস্বচ্ছ টাকা অন্য ইন্ডাস্ট্রিতেও আছে। তাই যতটা সম্ভব বুঝে কাজ করা উচিত। তবে সত্যিই কে, কাকে, কেন, কখন টাকা দিচ্ছেন, এত কী খোঁজ নেওয়া যায়! তবে প্রথমিভাবে যাঁদের সঙ্গে কাজ করছি, সেটা বুঝে নেওয়া উচিত।

অনেকেই আজকাল সিনেমা হলের বদলে OTT-তে রিলিজ করছেন।

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: OTT- কিন্তু বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বড় পর্দায় কোন ছবি মানুষ দেখতে যাবেন, সেটা মানুষ ঠিক বুঝে নেবেন। OTT-র ক্ষমতা সংঘাতিকত। সেটাকে অস্বীকার নয়, আলিঙ্গন করা দরকার। সেখানে অনেক ধরনের, অনেক বিষয়ে কাজ হচ্ছে, মানুষের কাজ বাড়ছে, সেটা মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।

ছবি রিলিজের আগে এই যে এত প্রচার, কোনটা গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট নাকি প্রমোশন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: প্রমোশন গুরুত্বপূর্ণ, তবে প্রমোশন সর্বস্ব হলে মুশকিল। মানুষ ঠিক বুঝে যান। প্রমোশন করলে, মানুষের মাথায় থাকে, ও হ্যাঁ, ওটা আসছে। এটা জরুরী। তবে কনটেন্ট দিয়ে এনগেজমেন্ট তৈরি না করতে পারলে, সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি না করতে পারলে কোনও লাভ নেই।

<p>শিবপুরে পরমব্রত ও স্বস্তিকা</p>

শিবপুরে পরমব্রত ও স্বস্তিকা

‘শিবপুর’ ছবিতে আপনিও একজন অভিনেতা, সেটি নিয়ে যে বিতর্ক কী বলবেন?

পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: আমার মনে হয় প্রযোজকরা ওটাকে সুন্দরভাবে সামলেছেন, স্বস্তিকার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, ওঁকে যে ইমেল পাঠানো হয়েছিল , সেটা তো প্রযোজকরা পাঠাননি। অন্য জায়গা থেকে এসেছিল। আর তাতে প্রযোজকরা আদৌ যুক্ত কিনা, সেটা নিয়ে ওরা স্বস্তিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন। ওটা মিটে গেছে। আমি ওখানে শুধুই অভিনেতা, তাই খুব বেশি কিছু বলতে চাই না। এটা ভুল বোঝাবুঝি বলেই মনে হয়।

 

 

 

For all the latest entertainment News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.