‘পদার্থবিদ্যা ও অঙ্কে ফেল করা ছাত্রী’! মাধ্যমিকে বাংলায় কত পেয়েছিলেন স্বস্তিকা?

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় মাধ্যমিকে বাংলায় পেয়েছিলেন ৮৯ নম্বর। ভাবছেন, বাংলাতে এত নম্বর? হ্যাঁ, ঠিক এতটাই পেয়েছিলেন স্বস্তিকা। সৌজন্যে তাঁর মাস্টার মশাই আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ইংরাজি মাধ্যমে পড়লেও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের বাংলাটাও কিন্তু তিনি মন্দ জানেন না। বরং মাতৃভাষায় বেশ ভালো দক্ষতা রয়েছে স্বস্তিকার। অভিনেত্রী নিজেই জানিয়েছেন, যে তিনি মায়ের মাস্টার মশাইয়ের কাছেই বাংলা পড়তে যেতেন। তবে সাহিত্যে ভালো হলেও নিজেকে পদার্থবিদ্যা আর গণিতে ফেল করা ছাত্রীর তকমা দিয়েছেন স্বস্তিকা।

গড়িয়াতে মায়ের মাস্টারমশাইয়ের কাছে বাংলা পড়তে যাওয়া, রবীন্দ্রনাথের গানের লাইন ব্যবহার করে বাংলা লেখা, এসব নিয়েই নিজের ফেসবুকে পাতায় লম্বা পোস্ট করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ঠিক কী লিখেছেন তিনি?

স্বস্তিকা লিখেছেন, ‘আমি বেশ উঁচু ক্লাস অবধি মায়ের মাস্টার মশাইয়ের কাছে বাংলা আর ইংরেজী পড়তাম। এই মাস্টারমশাই আমার মা এবং মায়ের বাকি সব দাদা/ভাই/ বোনদের ও মাস্টারমশাই। সব মিলিয়ে একই বাড়িতে প্রায় ৮ জন। আমার সব চেয়ে ছোট মাসি ছাড়া সবাই বাংলা মিডিয়াম। আমার মায়ের বাংলা অনার্স ও। বাবার ইচ্ছে ছিল আমিও বাংলা মিডিয়ামেই পড়ি, মা সেটা করতে দেয়নি, কিন্তু তাই বলে বাংলা জানবো না এটা হতে দেওয়া যায়না তাই দক্ষতা বাড়াতে মায়ের সেই মাস্টারমশাইয়ের দারস্থ হলাম। ওনার অনেক বয়েস, গড়িয়াতে থাকতেন তাই আমি যেতাম, প্রায় প্রত্যেক দিন। আগে একা পড়তাম, ক্লাস বাড়তে আরো অনেকের সঙ্গে।’

আরও পড়ুন-‘কখনও কোনও লবিতে ছিলাম না, তাই যৌন হেনস্থার ঘটনাতেও কাউকে পাশে পাইনি’, ফের সরব স্বস্তিকা

আরও পড়ুন-‘রান্নাটা বিশেষ পারি না, তবে বাসন মাজতে বেশ ভালোবাসি’, অকপট স্বস্তিকা

পরীক্ষায় বাংলা প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে কীভাবে রবীন্দ্রনাথের সাহায্যে নিয়েছিলেন সেকথাও লিখেছেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, ‘W.B বোর্ডে বাংলা পেপারে Essay আসতো দুটো। ২০ নম্বর করে। মোট ৪০ নম্বর। তাতে অন্তত ৩৫ পেতে হবেই। মাস্টারমশাই বললেন একটাই মক্ষম উপায়, কবিতা/গান দিয়ে শুরু, কবিতা/গান দিয়ে শেষ। আমার বাড়িতে সারা জীবন গান বাজনার চল, গরমের ছুটিতে গীতবিতান থেকে ৩-৪ গান শিখতেই হবে। তাই স্টক ছিল প্রচুর।পরে W.B বোর্ড পাল্টে আইসিএসই বোর্ডে গেলাম। মাস্টারমশাই তখন স্বর্গে গেছেন। ক্লাস 9 থেকে 10-এ ওঠার ফাইনালে বাংলা essay/প্রবন্ধ লেখার দুটো চয়েস ছিল।একটি গ্রীষ্মের মধ্যাহ্ন -এইটা আমি choose করি। অন্যটা কি ছিল এখন আর মনে নেই। আমার পাশের বান্ধবী ফিশফিশ করে বললো, একটা দুপুর নিয়ে ২০ নম্বর কি লিখবি? রিস্ক নিস না। হয়তো তখন থেকেই আমার ঝুঁকি নেওয়ার অভ্যেস।আমি শুরু করেছিলাম – প্রখর তপন তাপে – এই গান টার চারটে লাইন লিখে। আর শেষ করেছিলাম ‘দারুণ অগ্নিবাণে রে, হৃদয় তৃষায় হানে রে॥ রজনী নিদ্রাহীন, দীর্ঘ দগ্ধ দিন/আরাম নাহি যে জানে রে॥’ আর এভাবেই তিনি বাংলায় পেয়েছিলেন ৮৯ নম্বর। স্বস্তিকার কথায়,২০ তে ১৮ পেয়েছিলাম, আর ক্লাস ১০ এর বোর্ডে বাংলায় পেয়েছিলাম ৮৯। আমদের বাংলা মিসকে আমরা দিদি মজুমদার বোলে ডাকতাম, ওনার তালিকায় আমি হয়ে গেছিলাম প্রিয় ছাত্রী।’

এখানেই শেষ নয়, সাহিত্য়ে ভালো হলেও পদার্থ বিদ্যা আর গণিতে নিজেকে ফেল করা ছাত্রীর তকমা দিয়েছেন স্বস্তিকা। লিখেছেন, ‘সারা জীবন পদার্থবিদ্যা, গণিতে ফেল করা ছাত্রী আমি। রবি ঠাকুর বারংবার বাকি গুলোতে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমি মনে করি, শুধু বাংলা নয়,পুরো দোস্তুর সমবৃদ্ধি হয়ছে আমার,আমার মতন আরোও অনেকের। বড়ো হয় উনি হয়ছেন আমার সুখ-দুখের সাথি। ওনাকে আঁকরে কত শত অনভূতির আভাস পেয়েছি, ভালো অভিনেত্রী হতে পেরেছি, মাটিতে পা রেখে চলতে শিখেছি। ভাগ্যিস মা রবি ঠাকুর কে এমন ভাবে আঁকরে ধরতে শিখিয়ে ছিল।’

আর স্বস্তিকা এতকথা লিখেছেন, পরমার একটা পোস্ট দেখে, যেখানে রবীন্দ্রনাথের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার বেশকিছু লাইন তুলে লেখা হয়েছে। সবশেষে পরমার উদ্যেশ্যে স্বস্তিকা লিখেছেন, ‘তোমার লেখাটা পরে আজ কত কোটি বছর পর মাষ্টারমশাই এর কথা মনে পড়ল। কত মানুষের অবদান রয়ে যায় আমাদের জীবনে। একটাই আপসোস আমার মা এর সঙ্গে তোমার দেখা হল না পরমা, হলে তুমি হতে মা-এর favourite’।

 

 

For all the latest entertainment News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.