নামেই বেশি রান, এবার WTC-তে বাজে ব্যাটিং বিরাটের? পরিসংখ্যানেই লুকিয়ে উত্তর
সদ্য সমাপ্ত হওয়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে ভারতের তারকা ব্যটার বিরাট কোহলি করেছেন ৯৩২ রান। এই রানের পরেও তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ক্রিকেট এমন এক ধরনের খেলা যেখানে ব্যাটারদের রানই তাদের হয়ে কথা বলে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ভারত হারার পর ক্রিকেট মহলে জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেখানে বাদ যায়নি স্বয়ং বিরাট কোহলিও।
বিরাট কোহলির এই মরশুমের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৯৩২ রান করতে লাগে ১৭টির ম্যাচ। ভারতীয় দলে বিরাট কোহলির পরই রয়েছেন চেতেশ্বর পূজারা। সম সংখ্যক ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন ৯২৮ রান। বিরাট কোহলির গড় ৩২.১৩ এবং পূজারার গড় ৩২। এই গড় ভারতের অন্যতম ক্রিকেটার ঋষভ পন্তের থেকে কিছুটা কম রয়েছে। কারণ তিনি ১২ ম্যাচে করেন ৮৬৮ রান। তাঁর গড় ৪৩.৪০। তবে ঋষভের থেকে এখনও পিছিয়ে রয়েছে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও রবীন্দ্র জাদেজাও। রোহিত গড় ৪২.১১। হিটম্যান ১১টি ম্যাচে করেন ৭৫৮ রান এবং জাদেজা করেন ১৩টি ম্যাচে ৭২১ রান। জাদেজার গড় ৪৩.৪০। উল্লেখ্য, চোটের কারণে ভারতের উইকেট কিপার ব্যাটার শেষের দিকের অনেকগুলি ম্যাচ খেলতে পারেননি।
এবারের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ওভালের পিচে ভারতীয় ব্যাটাররা ঠিকঠাক মানিয়ে নিতে পারেননি। আর সেই কারণেই তারা দুই ইনিংসে ২৯৬ এবং ২৩৫ এর বেশি রান করতে পারেনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এই পিচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে। আর সেই কারণে প্রথম ইনিংসে তারা তোলে ৪৬৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করার পর তারা ডেক্লেয়ার করে দেয়। ভারতের হারের পিছনে শুধু পিচই নয় ব্যাটিং অর্ডারের ব্যর্থতাও রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বিরাট কোহলি ও রাহানে চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
ভারতীয় টপ অর্ডার ব্যাটাররা যে শুধুমাত্র ফাইনাল ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছে তা নয়। ভারতের শুরুর দিকের ব্যাটিং লাইনআপ গত বছর ধরে ১৫ বার ১০০ রানের নিচে আউট হয়ে গিয়েছে। পন্ত, জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অক্ষর প্যাটেলদের লড়াই ভারতীয় দলকে সম্মানজনক রানে পৌঁছে দিয়েছে বারবার। তবে এইবার যদি ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয় তাহলে দেখা যাবে ওপেনিং পজিশনে রোহিত শর্মাদের গড় রান ৩৫।সেখানে ভারতের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ ওপেনারদের গড় ৩০.৪।
৩ নম্বরের ক্ষেত্রে যদি দেখা হয় যেখানে পূজারা বেশির ভাগ ব্যাট করেন সেখানে ভারতের গড় ৩১.৬৮। এই একই পজিশনে বিপক্ষদের গড় ৩০.৭৯। টেস্টের এক নম্বর ব্যাটার অস্ট্রেলিয়ার ল্যাবুশান এই তিন নম্বর পজিশনেই ব্যাট করেন। তাহলে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে তিন নম্বরে অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভালো ব্যাট করেছে ভারত। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন উঠবে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের শুরুতে ভালো করলেও খারাপ বলা হচ্ছে কেন?
এরপরের পজিশন চার নম্বরেই যত সমস্যা দানা বেধেছে। চার নম্বর জায়গাতে ভারতীয় দলের হয়ে ব্যাট করেন বিরাট কোহলি। এই পজিশনে ভারতীয় দলের গড় রান ৩১.৯৬। বিপক্ষ দলের চার নম্বর পজিশনে গড় ৪৫.৫৮ রান। এই পজিশনে ভারতীয় দলের ১৩.৬২ গড় রানের পার্থক্যই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সোহম সরখেলের শেয়ার করা এই তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সমর্থকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
সরখেল আরও যোগ করেছেন যে কোহলির সঙ্গে জড়িত টেস্টে, তাঁর ৪ নম্বর প্রতিপক্ষ ৪৯.৫১ গড়ে ১৩৩৭ রান করেছিলেন। যেখানে কোহলি ৩২ গড়ে মাত্র ৯৩২ রান করতে পেরেছেন। কোহলি এখন কিছুটা রানের মধ্যে থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁর অফ ফর্ম বেশ ভুগিয়েছে ভারতকে। ধীরে ধীরে তিনি তাঁর ফর্মে ফিরে আসছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ জো রুট এবং স্টিভ স্মিথের থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। ভারতীয় সমর্থক এবং দলের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে মনে করছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
For all the latest Sports News Click Here