‘ধর্মের জিগির তুলে রাজনৈতিক মুনাফা…’, বাংলাদেশের দুর্গাপুজোয় হিংসে নিয়ে পরমব্রত
বাংলাদেশের দুর্গাপুজোয় হিংসার ঘটনার কড়া নিন্দে হচ্ছে সর্বত্র। শুধু ওপরা বাংলা নয়, সেই রেশ ছড়িয়েছে এপার বাংলাতেও। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট চোখে পড়ছে। আর তা নিয়ে নিজের মতামত পেশ করতে গিয়েই জোরালো কটাক্ষের শিকার হলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। নিজের পোস্টে অভিনেতা সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলতে চয়েছিলেন। মুসলিমরাও যে হিন্দু ধর্মের সম্মান করে সেটা তুলে ধরাই ছিল তাঁর লক্ষ্য।
পরমব্রত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা লম্বা পোস্ট করেন বাংলাদেশের পুজোয় চলা হিংসে নিয়ে। লেখেন, ‘বাংলাদেশে কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা তুলে ধরে, বিদ্বেষ সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে এটা বলতে থাকাটা উস্কানি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয় | এই ঘটনাগুলি থেকে যদি প্রমাণ হয় যে বাংলাদেশে হিন্দুরা বিপন্ন, তাহলে ভারতে গত সাত বছরে এরকম অগুনতি ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটে চলেছে (এবং যেগুলি নিয়ে দেশনেতারা অভূতপূর্ব ভাবে চুপ থেকেছেন!) যেগুলি থেকে আরও সহজে প্রমান হয় যে ভারতে মুসলমানরা বিপন্ন!’
নিজের লেখায়, পরমব্রত উল্লেখ করেন তাঁর স্পট বয় নাসির গাজীর কথা। যে পুজোতে রোজ শুভেচ্ছা জানায় পরমকে। মনে করিয়ে দেয় সরস্বতী পুজোর দিনক্ষণ। জোর দিন ক্ষণ আমার না থাকলেও ওর মনে থাকে এবং মনে করিয়েও দেয় | বাইরে শুট করতে গিয়ে কোনো দর্শনীয় মন্দিরের সন্ধান পেলে সেটাও নাসিরই এনে দেয় অভিনেতার কাছে। কথা প্রসঙ্গে নিজের কাঠের মিস্ত্রি সানোয়ার আলীর কথাও উল্লেখ করেন। লেখেন বাংলাদেশ ও পুজো কমিটির দায়িত্বে থাকা মুসলিমদের কথা। কীভাবে তাঁরা নিষ্ঠা সহকারে সব দায়িত্ব সামলান।
আসলে পরমব্রত জানতেন, তাঁর ভাবনা একটা অংশের মনে ধরবে না। আর সেকথাও নিজের লেখায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, ‘কিছু গর্বিত তলোয়ার ধারি হিন্দু আমি নিশ্চিত এই পোস্টে এসে খিস্তোবেন … কিছু শরীয়ত আইন কায়েম ও রক্ষার দায়িত্ত্বে থাকা মুসলমানও এসে গাল পাড়বেন আমি জানি… বলে রাখি, আমি বা আমরা কিন্তু জানি, আপনারা দুজনেই আসলে একই দলের লোক। জাস্ট নাম গুলো আলাদা, আর তাই সেই সুযোগে আমাদের টুপি পরাবার তালে থাকেন।’
সকলের উদ্দেশে পরমব্রতর বার্তা, ‘বাংলাদেশে আমার সমস্ত বন্ধুদের কাছে তাই আমার একান্ত অনুরোধ, কুমিল্লা বা নোয়াখালীতে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা করুন কোনো দ্বিধা না রেখে, দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করুন। আপনাদের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে তার বক্তব্যের মাধ্যমে সুবার্তা দিয়েছেন। আপনারাও সেই মৌলবাদ বিরোধী সুর বজায় রাখুন… প্রাণের উৎসবের উপর আক্রমণ ভালো লাগে না তো বটেই, তাছাড়াও আরো বড় একটা কারণ হল, এই ঘটনাগুলি সীমানার এই পারে গোঁড়া হিন্দুত্ত্ববাদীদের বড় সুবিধে করে দেয়। তাদের আস্ফালন বাড়ে, ধর্মের জিগির তুলে, এই উদাহরণ টেনে, মানুষের মনে অন্য সম্প্রদায় সম্বন্ধে ঘেন্না জন্মিয়ে রাজনৈতিক মুনাফা তোলার পথ মসৃন হয়।’
For all the latest entertainment News Click Here