দ্য কাশ্মীর ফাইলসের সমালোচনার জের, ইফির জুরি প্রধানের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ
নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীর পণ্ডিতদের গণহত্যার ভয়ঙ্কর স্মৃতি রূপোলি পর্দায় ফিরিয়ে এনেছে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। নিঃসন্দেহে চলতি বছরের অন্যতম বিতর্কিত এবং ব্যবসাসফল ছবি এটি। নতুন করে চর্চায় ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’, সৌজন্য ইফির মঞ্চে এই ছবিকে ঘিরে জুরি চেয়ারম্যানের একটি বিস্ফোরক মন্তব্য।
৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া (ইফি)-র সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’কে ‘অশ্লীল’ এবং ‘প্রোপাগান্ড ছবি’ ছবি উল্লেখ করেন ইজরায়েলি পরিচালক তথা জুরি চেয়ারম্যান নাদাভ লাপিড। সেই শুরু বিতর্কের। এবার এই বিতর্কের জল গড়াল পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত। গোয়া পুলিশের কাছে নাদাভ লাপিডের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। হিন্দুদের আত্মত্যাগ এবং বলিদানকে ‘অশ্লীল’ এবং ‘প্রোপাগান্ডা’র নাম দিয়েছেন পরিচালক, দাবি অভিযোগকারী আইনজীবী বিনীত জিন্দলের। নাদাভ লাপিডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১, ১৫৩, ১৫৩-র এ এবং বি, ২৯৫, ২৯৮ এবং ৫০৫ ধারায় মামলা রুজু করবার আর্জি জানিয়েছেন আইনজীবী।
অভিযোগের প্রতিলিপিতে বলা হয়েছে, ‘মুসলিম জঙ্গিদের হাতে কাশ্মীর উপকত্যায় নির্মম গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন হিন্দু পণ্ডিতরা। সেই গল্পই উঠে এসেছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এ। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবিকে অশ্লীল এবং প্রোপাগান্ডা ছবি বলে উল্লেখ করে হিন্দুদের বলিদানকে কটাক্ষ করেছেন। ‘ভ্লগার’ এবং ‘প্রোপাগান্ডা’-র মতো শব্দবন্ধ হিন্দু গণহত্যার সঙ্গে জুড়ে নাদাভ লাপিড আমাদের দেশে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন’।
IFFI-র সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ঠিক কী বলেছিলেন লাপিড?
ইজরায়েলি পরিচালক সোমবার বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘এই উৎসবে আমরা সাতটি ছবি দেখেছি ডেবিউ কম্পিটিশনে, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিভাগের জন্য ১৫টি ছবি দেখেছি- যে বিভাগ এই ফেস্টিভ্যালের মূল আকর্ষন। ১৫টির মধ্য়ে ১৪টি ছবির মধ্যে সিনেম্যাটিক কোয়ালিটি ছিল, ত্রুটিও ছিল এবং সেই নিয়ে একটা গঠনমূলক আলোচনাও হয়েছে’। এরপর পরিচালক জোর গলায় বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকে খুব অস্বস্তিবোধ করেছি, হতবাক হয়েছি ১৫ নম্বর ছবি কাশ্মীর ফাইলস দেখে। সকলের কাছেই এটা একটা অশ্লীল প্রোপাগান্ডা ছবি বলে বিবেচ্য হয়েছে…. . আমি প্রকাশ্যেই নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিতে স্বচ্ছন্দ, আর আমার মনে হয় এই সমালোচনামূলক আলোচনাকে গ্রহণ করাই এই চলচ্চিত্র উৎসবের আসল স্পিরিট’।
এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক চাপানোতর শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতে ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত নায়োর গিলন নিজের দেশের পরিচালককে সতর্ক করে বলেন, ‘স্বাধীনভাবে ইজরায়েলের সমালোচনা করুন। কিন্তু নিজের হতাশা অন্য দেশের উপরে ঢালবেন না।’ অন্যদিকে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর সোজা কথা, ‘সত্যিটা সবসময় বিপজ্জনক’।
For all the latest entertainment News Click Here