দেবী চৌধুরানীতে মিলে যাবে ইতিহাস-উপন্যাস, ইঙ্গিত মিলল পরিচালক শুভ্রজিতের কথায়
অভিযাত্রিক খ্যাত পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রর হাত ধরে উপন্যাসের পাতা থেকে আরও এক কালজয়ী চরিত্র এবার উঠে আসতে চলেছে পর্দায়। বহু চেনা, অথচ একদম নতুন আঙ্গিকে তিনি নিয়ে আসছেন দেবী চৌধুরানীকে। কিন্তু আচমকা দেবী চৌধুরানী কেন? নতুন ছবি নিয়ে এই সময়কে বিশেষ সাক্ষাৎকারে নানা অজানা তথ্য জানালেন তিনি।
পরিচালক জানান তিনি অভিযাত্রিক শুরুর আগেই মায়ামৃগয়া নিয়ে কাজ শুরু করে ছিলন। এরপর তিনি অভিযাত্রিক ছবিটি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সেই ছবি মুক্তির পর তিনি দু তিনটি ছবি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেন, এবং শেষ পর্যন্ত ঠিক করেন যে দেবী চৌধুরানী নিয়েই কাজ করবেন এবার। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাসী এক প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কথা এগোনোর পর ওঁরা জানালেন যে দেবী চৌধুরানী গল্পটাই বাংলা ছবিকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই সময় একদম উপযোগী ছবি।’ শুভ্রজিৎ এই বিষয়ে আরও বলেন, ‘আমারও সেটাই মনে হয়েছিল কারণ সৃজনশীল বা ক্যানভাসের দিকে দেবী চৌধুরানী অনেক বড়। অভিযাত্রিক এর থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ এটি।’
কিন্তু আচমকা জানা গল্প, যা একাধিকবার বড় ছোট পর্দায় এসেছে, সেটাকে নতুন করে বানানোর অর্থ কী? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই গল্পে মূলত তিনটি জিনিস দিয়ে সাজানো হচ্ছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আর্কাইভ রেকর্ডসকে কাজে লাগানো হচ্ছে। অর্থাৎ ১৭৭০ সাল থেকে ১৭৮০ সালের মধ্যে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর থেকে ফকির বিদ্রোহ, সন্ন্যাসী বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর উল্লেখ। ১৮৭০ সালে যখন বঙ্কিমচন্দ্র এখানে জেলাশাসক হয়ে যান তিনি যা জানতে পেরেছিলেন সেই সময়ের বিষয়ে সেটাই তিনি তাঁর লেখার তুলে ধরেছিলেন। ফলে ঐতিহাসিক তথ্য পরত নিয়ে দর্শকদের সামনে নতুন কিছু নিয়ে আসতে চাই।’ এই প্রসঙ্গে তিনি আরও একটি জরুরি কথা বলেন, ‘বাঙালি তো আত্মবিস্মৃত জাতি। তাই এই হিস্টরিকাল রিকনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া জরুরি।’
শোনা যাচ্ছে এই ছবির জন্য নাকি ওয়ার্কশপ করাতে শ্যাম কৌশলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে? এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শ্যাম জি ওঁর টিম নিয়ে শহরে আসবেন। অভিনেতা অভিনেত্রীদের ওয়ার্কশপ করাবেন অ্যাকশন দৃশ্যগুলোর।’
মুখ্য ভূমিকায় কি গুঞ্জন অনুযায়ী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাবে? এই বিষয়ে সোজাসুজি উত্তর দেন না পরিচালক। বরং ঘুরিয়ে বলেন, ‘ছবিতে কে কোন চরিত্র করবেন এখনও সেটা চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রথম সারির অভিনেতাদের দিয়েই কাজ হবে। সেই মতো কথা এগিয়ে গিয়েছে।’
তাঁর কথা থেকে এটা স্পষ্ট যে এটি একটি বড় বাজেটের ছবি হতে চলেছে। এই বিষয়ে তাঁর কী মত? শুভ্র জিৎ বলেন, ‘এখন প্রযোজকরা বাজেট নির্ধারণ করে দেন আগে। অবশ্য বাংলা ছবির ব্যবসার দিকে তাকালে ওঁদের দোষ দেওয়া যায় না। তবে পরিচালক হিসবে আমি কেবল গল্পটাই বলতে পারি। এই ছবিটা ছয়টা ভাষায় ডাবিং করে মুক্তির ভাবনা আছে। দরকারে তিন চারটে গল্প ভেবে বিনিয়োগ খুঁজতে রাজি। তবে বড় বাজেট মানেই বলিউড থেকে অভিনেতা আনা হবে এমনটা নয়। টলিউডের অভিনেতা অভিনেত্রীরা কোনও অংশে কম নন। এই ছবিতে বাঙালি শিল্পীরাই কাজ করবেন কারণ চরিত্রগুলো বাঙালি।’
For all the latest entertainment News Click Here