‘দুধেভাতে’ মিডল অর্ডার- হিট বিরাটরা, সিরাজের ম্যাজিকের পরেও RCB-র চিন্তা কমছে না

বিধ্বংসী টপ-অর্ডার, জঘন্য মিডল ও লোয়ার অর্ডার এবং ভালো বোলিং আক্রমণ – এখনও পর্যন্ত এবারের আইপিএলে সংক্ষেপে এটাই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (আরসিবি) নির্যাস। আপাতত লিগ তালিকায় আরসিবি যে পাঁচ নম্বরে সেটার পুরো কৃতিত্ব কার্যত বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু’প্লেসি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মহম্মদ সিরাজদের। বাকিরা সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। বিশেষত ব্যাটিংয়ের যা অবস্থা, তাতে তিন-চারজন (বিরাট, ফ্যাফ ও ম্যাক্সওয়েল) আউট হয়ে যাওয়ার পর আরসিবি ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দিতে পারে।

প্রথম তিনজন ছাড়া কোনও ব্যাটার নেই RCB-র!

চিরাচরিতভাবে আইপিএলে আরসিবির যে ‘রোগ’ ছিল, এবারও সেটাই রয়ে গিয়েছে। টপ-অর্ডারের তিনজন (তিন নম্বর ব্যাটার নন, ওই জায়গা নিয়ে আরসিবির পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে যাচ্ছে) দুর্দান্ত খেলছেন। বাকি ব্যাটিং লাইন-আপ (যে তালিকায় আছেন বাংলার রঞ্জি দলের তারকা শাহবাজ আহমেদও) যে পাড়ার ক্রিকেটের ভাষায় ‘দুধেভাতে’ ক্রিকেট খেলছে, তা পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

এখনও পর্যন্ত এবারের আইপিএলের রান সংগ্রাহকদের তালিকার শীর্ষে আছেন ফ্যাফ। আট ম্যাচে করেছেন ৪২২ রান। দ্বিতীয় স্থানে আছেন বিরাট কোহলি। আট ম্যাচে করেছেন ৩৩৩ রান। একাদশ স্থানে আছেনম্যাক্সওয়েল। আট ম্যাচে ২৫৮ রান করেছেন। তাঁদের পরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় যিনি আছেন, সেই দীনেশ কার্তিক আট ম্যাচে করেছেন ৮৩ রান। তাও আটটি ম্যচের মধ্যে ছ’টিই চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামের পাটা পিচে খেলেছেন (বাউন্ডারির দৈর্ঘ্যও ছোটো)।

অর্থাৎ আরসিবির বিরুদ্ধে বোলিংয়ের সময় বিপক্ষ দলের এখন একটাই কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব বিরাট, ফ্যাফ ও ম্যাক্সওয়েলকে আউট করতে হবে। ব্যস! তাহলেই আরসিবির জারিজুরি শেষ হয়ে যাবে। যে কাজটা গত ম্যাচেই কেকেআর করেছে। তাও কেকেআর যে আরসিবির মিডল ও লোয়ার অর্ডারকে ভালো বল করেছে, সেটা একেবারেই নয়। বরং যে বলগুলিতে আউট হয়েছেন আরসিবির মিডল ও লোয়ার অর্ডারের ব্যাটাররা, সেটার রিপ্লে দেখতে চাইবেন না তাঁরা।

হোম ম্যাচে ফ্লপ

এবার প্রথম আটটি ম্যাচের মধ্যে ছ’টিই চিন্নস্বামীতে খেলেছে আরসিবি। জিতেছে মাত্র তিনটি ম্যাচে। সেটাই আরসিবির কাছে প্লে-অফের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ এবার অ্যাওয়ে ম্যাচে স্বাগত জানাতে তৈরি থাকবে বিপক্ষ। সেইসব ম্যাচের উইকেট যে চিন্নস্বামীর মতো ব্যাটিং সহায়ক হবে, সেটা একেবারেই নয়। তাই ফ্যাফ, বিরাট ও ম্যাক্সওয়েলরা এখন যে ছন্দে আছেন (চিন্নস্বামীর পিচ পাটা), সেটা অ্যাওয়ে লিগ (তুলনামূলকভাবে কম ব্যাটিং সহায়ক পিচে খেলতে হতে পারে) নাও থাকতে পারে। আর সেটাই যদি হয়, তাহলে আরসিবির কপালে দুঃখ আছে। ব্যাটিং লাইন-আপ বলে কিছু থাকবে না।

                                         সেরা আবিষ্কার

১) মহম্মদ সিরাজ 

এতদিন আরসিবির ‘দুর্বল’ জায়গা ছিলেন। সেই সিরাজই ২০২৩ সালে এক অন্য বোলার হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এবারের আইপিএলে ছ’টি ম্যাচেই পাওয়ার প্লে’তে উইকেট নিয়েছেন (কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ ছাড়া)। প্রথম ছ’ওভারে পুরোপুরি টেস্ট ম্যাচের লাইন-লেংথে বল করছেন। ব্যাটারদের মস্তিষ্কের সঙ্গে খেলছেন। বিশেষত সিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে তো বেতাজ বাদশা হয়ে উঠেছে (যে প্রমাণ পেয়েছেন জস বাটলার)। আবার নিখুঁত ইয়র্কারও করছেন (যে ইয়র্কারের শিকার হয়েছেন আন্দ্রে রাসেল)।

তাতেই ম্যাজিকের মতো ফল মিলেছে। এখনও পর্যন্ত ২০২৩ সালের আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে আছেন সিরাজ। আট ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ টি উইকেট। ন’টি উইকেট এসেছে পেসারদের বধ্যভূমি চিন্নস্বামী থেকে। যা বোলার হিসেবে সিরাজের দক্ষতার আরও পরিচয় দিচ্ছে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বিপক্ষের ওপেনাররা নামার আগে নিশ্চিতভাবে ভাবছেন যে সিরাজের স্পেলটা যেন ভালোয়-ভালোয় কেটে যায়। 

আরও পড়ুন: RCB vs KKR: ‘RCB আইপিএল না জিতলে স্কুলে ভরতি হব না’, ভাইরাল খুদের পোস্টার, চিন্তিত নেটপাড়া!

২) বিজয়কুমার বিশাক: ২০২৩ সালে দ্বিতীয় হার্ষাল প্যাটেল পেয়ে গিয়েছে আরসিবি। যেদিন ছন্দে থাকছেন, সেদিন মিডল ও পরবর্তীতে ভালো বল করছেন। বলের গতির হেরফের ঘটিয়ে বিপক্ষের ব্যাটারদের ধোঁকা দিচ্ছেন। পাঁচটি ম্যাচে ইতিমধ্যে ছ’টি উইকেট পেয়েছেন। তবে আপাতত ইকোনমি রেট ১০-র বেশি আছে। তবে তাঁকে এটা নিশ্চিত করতে হবে, যেদিন ছন্দে থাকবেন, সেদিন দুর্দান্ত তো করবেনই। সেইসঙ্গে যেদিন ছন্দে না থাকবেন, সেদিন যেন বেশি বোঝা বইতে না হয়। 

অনেক ইতিবাচক দিকও আছে RCB-র

১) অন্যবার আরসিবির বোলিং অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জস হেজেলউড না থাকলেও এবার পেস বোলিং বিভাগ যথেষ্ট ভালো করেছে। সিরাজ, ডেভিড উইলিরা ভালো শুরু করেছেন। মাঝের ওভার এবং ডেথ ওভারে বিশাক ও হার্ষাল প্যাটেলও ভালো বল করে যাচ্ছেন। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও ছন্দ পেয়েছেন।

আরও পড়ুন: RCB vs KKR, IPL 2023: ঘরের মাঠে দল হারলেও, অর্ধশতরান করে চিন্নাস্বামীতে বিশ্বরেকর্ড কোহলির

২) এখনও পর্যন্ত যে শুধুমাত্র আইপিএলের টপ-অর্ডার রান পেয়েছে, তাতে একটি আশার আলোও দেখতে পারে আরসিবি। শুধুমাত্র তিনজন রান পাওয়ার পরেও স্কোরবোর্ডে বড় রান উঠেছে। তাহলে মিডল ও লোয়ার অর্ডার রান পেলে তো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে। সেটার জন্য অবশ্য আরসিবিকে তিন নম্বরের ব্যাটার খুঁজতে হবে। যে জায়গায় কে নামবেন, তা নিয়ে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে আরসিবি।

প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা

এবার আইপিএলে একেবারে সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই হচ্ছে। কয়েকটি দল যে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে, সেটা মোটেও হয়নি। দলগুলির মধ্যে ব্যবধান এতটাই কম যে একটি ম্যাচ জিতলেই লিগ তালিকার হেরফের হয়ে যাচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আপাতত আট ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে থাকলেও হতাশ হবে না আরসিবি। কারণ প্রথম তিনটি দলের (রাজস্থান রয়্যালস, গুজরাট টাইটানস এবং চেন্নাই সুপার কিংস) পয়েন্ট ১০। গুজরাট একটি ম্যাচ কম খেলেছে। আর চার নম্বরে আছে লখনউ সুপার জায়েন্টস (সাত ম্যাচে আট পয়েন্ট)। অর্থাৎ প্লে-অফে ওঠার দৌড়ে প্রবলভাবে আছে আরসিবি।

(IPL 2023: আইপিএল সংক্রান্ত যাবতীয় টাটকা খবর ও আপডেটের জন্য হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার স্পেশাল পেজে – ক্লিক করুন এখানে, তাহলেই প্রবেশ করবেন আইপিএলের দুনিয়ায়)

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.