দু’জনেই ছিলেন ক্রিকেট কোচ, স্বামীর মৃত্যুর ২৩দিনের মাথায় প্রয়াত স্ত্রীও
ছয় বছর পর আইসিসির আসরে ফিরেই চমক দেখিয়েছিল জিম্বাবোয়ে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সিকান্দার রাজা-শন উইলিয়ামসরা প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকানোর পর সুপার টুয়েলভ পর্বে হারিয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে।
জিম্বাবোয়ের সেই দলে থাকার কথা ছিল শেফার্ড মাকুনুরার। খেলোয়াড় নয়, ফিল্ডিং কোচ হিসেবে। কিন্তু অসুস্থতার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া হয়নি তাঁর। মাঠেও আর ফেরা হয়নি। গত ১৫ ডিসেম্বর প্রয়াত হন ৪৬ বছরের মাকুনুরা।
স্বামী মাকুনুরার মৃত্যুশোক হয়তো সইতে পারেননি জিম্বাবোয়ের মেয়েদের দলের সহকারী কোচ সিনিকিউই এমপোফু। মাত্র ২৩ দিনের ব্যবধানে তিনিও প্রয়াত হলেন। গত শনিবার জিম্বাবোয়ের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মাসভিঙ্গোর নিজের বাড়িতেই অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন ৩৭ বছরের। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ওদের T20 দলে নেওয়ার প্রয়োজন নেই- কোহলি-রোহিতকে নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন নির্বাচক
মাকুনুরা-এমপোফু দম্পতি বিশ্ব ক্রিকেটে খুব পরিচিত নাম না হলেও, জিম্বাবোয়ের ক্রিকেট মহলে সকলেই চিনতেন তাঁদের। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। এই কোচ দম্পতির অকালমৃত্যুতে জিম্বাবোয়ে ক্রিকেটে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জিম্বাবোয়ে ক্রিকেটের (জেডসি) ম্যানেজিং ডিরেক্টর গিভমোর মাকোনি এক শোকবার্তায় বলেছেন, ‘স্বামীর কয়েক সপ্তাহ পরেই স্ত্রীও মারা গেলেন। তাঁরা দু’জনেই আমাদের কোচিং স্টাফের সদস্য ছিলেন। তাঁদের ছোট্ট দুই সন্তান, পরিবার, বন্ধু এবং পুরো ক্রিকেট–সমাজের জন্য সময়টা ভীষণ কঠিন এবং বেদনাদায়ক। সবাইকে আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’
কোচিং পেশায় নাম লেখানোর আগে খেলোয়াড় ছিলেন সিনিকিউই এমপোফু। বলা যায়, জিম্বাবোয়ের নারী ক্রিকেট ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্তের অংশ হয়ে আছেন তিনি। ২০০৬ সালে জিম্বাবোয়ের মেয়েদের দলের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের সদস্য তিনি। ২০১১ সালে বাংলাদেশে আইসিসি নারী বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের বেশ কয়েকটি ম্যাচও খেলেছেন।
আরও পড়ুন: T20I থেকে সরে দাঁড়াবেন? লঙ্কার বিরুদ্ধে ODI-এ ওপেনার কে? সোজাসাপ্টা জবাব রোহিতের
এমপোফুই জিম্বাবোয়ে প্রথম পেশাদার মহিলা ক্রিকেটার, যিনি পরবর্তী সময়ে কোচ হয়েছেন। জাতীয় নারী দলের প্রধান কোচ গ্যারি ব্রেন্টের সহকারী হিসেবে কাজ শুরুর আগে, তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু স্বামী মাকুনুরার অসুস্থতার কারণে ছুটিতে ছিলেন।
মাকুনুরা অবশ্য কখনও জাতীয় দলে খেলেননি। তবে কোচ হিসেবে তাঁর বেশ নাম ছিল। ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন জিম্বাবোয়ের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ। ২০১৮ সালে পান ‘এ’ দলের দায়িত্ব। এর পর জিম্বাবোয়ের প্রধান দলের ফিল্ডিং কোচের দায়িত্ব পান। কিন্তু শারীরিক জটিলতার কারণে অকালে প্রয়াত হন তিনি।
অসুস্থতার কারণে মাকুনুরা মারা গেলেও, তাঁর স্ত্রী এমপোফুর মৃত্যু অনেকের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। জেডসি অবশ্য এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলে রহস্য উন্মোচিত হবে এবং মৃত্যুর আসল কারণ জানানো হবে।
For all the latest Sports News Click Here