দলে ধারাবাহিকতার অভাব- মেনে নিয়ে দশে থাকা জামশেদপুরকে বাড়তি গুরুত্ব EB কোচের
একটা ম্যাচে জয়, তো পরের ম্যাচেই হার। জয়ে ইস্য় অনেক সময় লেগে যাওয়া। এই ব্যাপারগুলো যে একটা দলের কোচ ভালো ভাবে নেবেন না, এটাই স্বাভাবিক। স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সে রকমই। গত ম্যাচে ওড়িশা এফসি-র কাছে ফের হারতে হয়েছে লাল-হলুদ বাহিনীকে। তাই এখন কনস্ট্যান্টাইন তাকিয়ে, জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচের দিকে।
শুক্রবার ঘরের মাঠে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে নামবে ইস্টবেঙ্গল, যে জামশেদপুর এখন লিগ তালিকার দশ নম্বরে রয়েছে। এই দলকেই জামশেদপুরে গিয়ে ৩-১ গোলে হারিয়ে এসেছিল লাল-হলুদ। এ বার ঘরের মাঠে সেই দলকে হারিয়ে লিগের প্রথম ছয়ে থাকার ক্ষীণ আশাটুুকু বাঁচিয়ে রাখতে চাইবে কনস্ট্যান্টাইনের টিম। তবে এই ম্যাচ কঠিন হবে বলেই মনে করছেন ব্রিটিশ কোচ।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘কোনও ম্যাচই সোজা নয়। যে কোনও দিন যে কোনও দল, অন্য দলকে হারাতে পারে। জামশেদপুরে গিয়ে আমরা পুরো পয়েন্ট নিয়ে এসেছিলাম। এ বার নিশ্চয়ই ওরা প্রস্তুত হয়েই এসেছে। তাই ম্যাচটা কঠিনই হবে বলে মনে হয়। লিগ টেবলের নীচের দিকে থাকলেও, ওরা ভাল দল। আমাদের লড়াই করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফের ট্রান্সফার ব্যানের কবলে ইস্টবেঙ্গল, নতুন ফুটবলার সই করানো নিয়ে জটিলতা
গত ম্যাচে শুরুটা ভাল করেও ১-৩-এ হেরে যায় ইস্টবেঙ্গল। অনেকে বলছেন, রক্ষণের ভুলেই এমন হয়েছে। কিন্তু কনস্ট্যান্টাইন তা মানতে রাজি নন। বলেছেন, ‘আমার মনে হয় রক্ষণকে দোষারোপ করে লাভ নেই। জিতলে যেমন দল জেতে, তেমন হারলেও দলই হারে। এটা ঠিকই যে, আমাদের ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। একটা ম্যাচে জিতছি তো, পরের দুটো ম্যাচে হারছি। কিন্তু আমরা উন্নতির চেষ্টা করছি। পরিশ্রম করছে ছেলেরা। বল-সহ ও বল ছাড়া আমাদের আরও ভালো করতে হবে। ওঠা-নামাতেও আরও গতি আনতে হবে।’
চোট আঘাত সমস্যা নিয়েও বেশ জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল শিবির। তরুণ ফরোয়ার্ড হীমাংশু জাংরা এই মরশুমে আর মাঠে নামতে পারবেন কি না, তা যেমন অনিশ্চিত, তেমনই ক্লেটন সিলভার খেলা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই ব্যাপারে কোচ বলেছেন, ‘হীমাংশুকে অন্তত দু’সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে। চোট সারিয়ে ফিরে আসার পরেও ও কতটা সাহায্য করতে পারবে দলকে, তাও সন্দেহ আছে। সারা মরশুমেও হয়তো ওকে আমরা নাও পেতে পারি। ক্লেটন ঠিকই আছে। তবে ওর বয়স এবং শারীরিক অবস্থা যে রকম, তাতে ওর চোট নিয়ে আমাদের আরও ধৈর্য্যশীল হতে হবে। ও নিজেও বড় মাপের পেশাদার। জানে নিজেকে ঠিক রাখতে কী করতে হয়। তাই ওকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও ভাবতে হবে।’
আরও পড়ুন: অলৌকিক কিছু না ঘটলে সেরা ছয়ে থাকা যাবে না- ওড়িশার কাছে হেরে মেনে নিলেন EB কোচ
দলের তরুণ উইঙ্গার নাওরেম মহেশ সিং মাঝে কয়েকটি ম্যাচে যথেষ্ট ভাল খেললেও, ইদানীং নিজের সেরাটা দিতে পারছেন না। এই ব্যাপারে মহেশকে যে মোটেই সমর্থন জানাতে রাজি নন তিনি, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে কোচ বলে দেন, ‘গত তিন-চারটে ম্যাচে ও মোটেই ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি। ওকে বুঝতে হবে লিগটা কুড়ি ম্যাচের, তিনটে ম্যাচের নয়। যে সুযোগ পেয়েছে, তাতে ও ভাল খেলেছে ঠিকই। তিন-চারটে ম্যাচে অসাধারণ খেলেছে। কিন্তু তার পরের তিন-চার ম্যাচে ভাল খেলতে পারেনি। সেটা যথেষ্ট নয়। ওকে ধারাবাহিক হতে হবে। ও ভাল খেলোয়াড়, পরিশ্রম করে। কিন্তু তিন-চারটে ম্যাচে ভাল খেলে কখনও ভাল খেলোয়াড় হওয়া যায় না। ওর কাছ থেকে এখনও অনেক কিছু পাওয়ার আছে।’
দলের মাঝমাঠে সমস্যা হচ্ছে এবং তাঁর দল গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠলেও তা স্বীকার করতে রাজি নন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না কোনও সমস্যা আছে। অনেক সুযোগই আমরা তৈরি করেছি। সারা মরশুমেই প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি আমরা। হয়তো সেগুলো থেকে বেশি গোল করতে পারিনি। কিন্তু, খেয়াল রাখবেন, লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরে আমাদেরই একজন খেলোয়াড়। ক্লেটন আট গোল করেছে। ও যদি আরও সাহায্য পেত, তা হলে আরও তিন-চারটে গোল পেত। ওকে সাহায্য করার জন্য লোক আনব আমরা। তা হলে ওকে আর কেউ ডাবল মার্কিং করবে না হয়তো। আরও জায়গা পাবে ও এবং অন্য স্ট্রাইকার গোল করার সুযোগ পাবে। আমাদের প্রতিপক্ষরা যত সুযোগ পাচ্ছে বা তৈরি করছে, তা থেকে অনেক বেশি গোল করছে, যেটা আমরা পারছি না। তাই হারছি।’
For all the latest Sports News Click Here