‘দম বন্ধ হয়ে আসে’, হঠাৎ কী হল চঞ্চল চৌধুরীর?
ভালো নেই দুই বাংলার অন্যতম চর্চিত এবং পছন্দের অভিনেতা, চঞ্চল চৌধুরী। নববর্ষেও তাঁর মন খারাপ বেজায়। অভিনেতা নিজেই জানালেন তাঁর গলার কাছে যেন একটা কষ্ট দলা পাকাচ্ছে। দম বন্ধ লাগছে তাঁর এই পরিবেশে। কিন্তু কী হল আচমকা? আসলে এই বছরকার দিনে তিনি তাঁর ছেলেবেলার দিনগুলোকে খুব মিস করছেন। তাঁর ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ছে। আসলে কিছু মাস আগেই তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। ফলে এই বছর তিনি প্রথম বাবাকে ছেড়ে নববর্ষ উদযাপন করলেন, তাই তাঁর মন খারাপ।
অভিনেতা জানান তিনি যখন ছোট ছিলেন তখন তাঁদের গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। তাঁকে ঘুম পাড়ানোর জন্য তাঁর বাবা মা সারারাত জেগে তাঁকে তালপাতার হাতপাখা দিয়ে হাওয়া করতেন। আর এই সব স্মৃতি যেন এই সময় তাঁর আরও বেশি করে মনে পড়ছে। অভিনেতা তাঁর পোস্টে জানান তাঁকে নাকি এখন তাঁর বাবার মতো দেখতে লাগে। তিনি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আজকাল আমার ভাইবোনেরা আমার মোটা ফ্রেমের চশমা আর ব্যাক ব্রাশ করে চুল দেখে বলে আমায় নাকি বাবার মতো দেখতে লাগে। আমি দিনদিন বাবার মতো হয়ে যাচ্ছি।’ তিনি আরও লেখেন, ‘এই বছরের প্রথম দিন পেরিয়ে গেল। প্রতিবছর এই দিনে বাবা মাকে ফোন করে শুভ নববর্ষ জানাতাম। আশীর্বাদ নিতাম। এবার আর বাবাকে পেলাম না। কয়েকমাস আগেই তিনি অনন্তলোকে চলে গিয়েছেন। আমার ভিতরে যে কী হয়, কেমন করে বাবার জন্য। আমি কাউকেই বোঝাতে পারি না।’
তিনি তাঁর পোস্টে আরও লেখেন, ‘হঠাৎ করেই যখন মনে হয় বাবা নেই, চারপাশটা অন্ধকার লাগে, দম বন্ধ হয়ে আসে। বাবা ছাড়া কয়টা মাস, কী যেন এক ঘোরের মধ্যে বাস করছি। সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে যেন বাবার চলাফেরা। আজ গরমের মধ্যে যখন বসে আছি ড্রইংরুমে, বিদ্যুৎ নেই, হঠাৎ নিজেকে দেখেই চমকে উঠলাম। সত্যিই তো, আমি তো দেখতে বাবার মতই হয়ে যাচ্ছি। বাবাকেও দেখতাম গরমের মধ্যে তালপাখা হাতে এরকম বসে থাকতে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘বাবা নেই, বাবা আমার কাছে বেশি করে আসে ইদানিং। আজ রাতেও এল এই গরমে, তালপাখা হাতে নিয়ে, আমাকে বাতাস দিয়ে ঘুম পাড়াতে।’
অভিনেতার এই পোস্ট তাঁর ভক্তদের মনে দাগ কেটেছে। তাঁরা অনেকেই তাঁকে সমবেদনা জানিয়েছেন। একজন লেখেন, ‘আপনি এতটা সহজ কীভাবে? যতবার দেখি ততবার অবাক হই। পর্দার, আর পর্দার বাইরের চঞ্চল চৌধুরী সম্পূর্ণই আলাদা।’ আরেকজন লেখেন, ‘আমরা তো আদতে বাবা-মায়েরই প্রতিচ্ছবি। ওঁদের সঙ্গে আমাদের শিকড়ের সম্পর্ক। প্রাণ-পাখিটা খাঁচা ছেড়ে উড়ে গেলেই কি সেই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়?’
২০২২ -এর ডিসেম্বরে মারা যান অভিনেতার বাবা। তিনি সেরিব্র্যালে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন। এতগুলো মাস কেটে যাওয়ার পর বাবাকে হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে অভিনেতার মনে।
For all the latest entertainment News Click Here