‘তারারাও যত…’ চোখের জল নয়, মহীনের ঘোড়াগুলির বাপিদাকে বিদায় তাঁরই গানের সুরে
‘ফিরব বললেই ফেরা যায় নাকি…’ কেবল ছোটবেলা থেকে নয়, একবার এই জগতের মায়া কাটিয়ে অন্য জগতের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার পরও বোধহয় ফেরা যায় না আর! ২৫ জুন এই গানের অন্যতম স্রষ্টা, মহীনের ঘোড়াগুলির শেষ স্তম্ভ, তাপস দাস ওরফে বাপিদা চলে গেলেন মহাজীবনের পথে। তবে যেতে যেতে রেখে গেলেন এক অনন্য দৃশ্য।
বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলি। ‘তোমায় দিলাম আজ’ থেকে ‘পৃথিবীটা নাকি’, ‘ধাঁধার থেকেও জটিল তুমি’, ‘প্রিয়া ক্যাফে’ সহ একাধিক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছে এই ব্যান্ড। গানের মধ্যেই বিপ্লবের কথা শুনিয়ে গিয়েছে এই ব্যান্ড।
সময়ের সঙ্গে নিয়ম মেনে একে একে বিদায় নিয়েছেন ব্যান্ডের সকল সদস্যরাই। শেষ পর্যন্ত একাই লড়ছিলেন বাপিদা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও হাল ছেড়ে দিলেন।
এদিন তাঁকে চিরবিদায় জানানোর জন্য জড়ো হয়েছিল তাঁর অগুনতি ভক্ত। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই গানে গানে রাজপথ ধরে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গড়িয়া আদি শ্মশানে। রাজপথেই তাঁর ভক্তরা সমস্বরে তাঁরই গান গাইতে গাইতে এগোন। গানের ভাষায় বাস্তব উঠে আসে যেন। ‘তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে, তারও দূরে তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে।’ শব গাড়িতে ফুল মালায় সজ্জিত হয়ে আগে আগে চলেছেন তিনি। আর তাঁর পিছনে যাঁদের রেখে গেলেন তাঁর গান দিয়ে তাঁরা চলেছেন তাঁরই পিছু পিছু।
এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য, এদিন যাঁরা রাজপথে সামিল হয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই হয়তো মহীনের ঘোড়াগুলির লাইভ শো দেখেননি। কেবল গানই শুনেছেন। আর সেই গানগুলো শুনে শুনেই এই ব্যান্ড তাঁদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছে।
দীর্ঘদিন লাং ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। মাঝে তাঁর পরিবার চিকিৎসার খরচ জোগাতে পর্যন্ত পারছিল না। অবশেষে এই বাংলার সমকালের ব্যান্ড এবং মেম্বারদের তাগিদে তাঁর জন্য ক্রাউড ফান্ডিং শুরু হয় বছরের শুরুতে। তারপর যদিও রাজ্য সরকার তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু সেই লড়াই বেশিদিন চলল না। ২৫ জুন চিরঘুমে শায়িত হলেন তাপস দাস। রেখে গেলেন বহু গান, বহু ভক্ত। এবং বিপ্লব আনার স্বপ্ন।
For all the latest entertainment News Click Here