তামিলনাড়ুর হলে কেন চলছে না ‘দ্য কেরালা স্টোরি’? সুপ্রিম কোর্টকে জবাব সরকারের
পশ্চিমবঙ্গই দেশের একমাত্র রাজ্য যা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই ছবির প্রদর্শনের উপর বাংলা সরকারের ব্যান লাগানোর সমালোচনা সবমহলে। তবে বাংলার পাশাপাশি তামিলনাড়ুর কোনও হলেও প্রদর্শিত হচ্ছে না ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। স্ট্যালিন সরকার এই ছবির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি, তবে তামিলনাড়ু থিয়েটার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করা হয় গত ৭ই মে। অর্থাৎ বাংলায় নিষেধাজ্ঞা জারির ঠিক আগেরদিন।
একদিকে যেমন মমতা সরকার যেন ছবির উপর থেকে ব্যান তুলে নেয় সেই আর্জি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র নির্মাতারা, তেমনই তামিলনাড়ু সরকারও যেন এই ছবির উপর জারি ‘ডি-ফ্যাক্টো ব্যান’ তুলে নেয়। রাজ্যের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে এই ছবি চালাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্ব নিক সরকার, আবেদন নির্মাতাদের। সেই মর্মে দুই রাজ্যকে গত সপ্তাহে নোটিশ ধরিয়েছিল দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার (আগামিকাল) এই মামলার পরবর্তী শুনানি, তার আগে শীর্ষ আদালতে নিজেদের পক্ষ রাখল তামিলনাড়ু সরকার।
স্ট্যালিন সরকার স্পষ্ট জানায়, নির্মাতারা ইচ্ছাকৃতাবে আদালতে ‘বিকৃত বক্তব্য’ পেশ করেছে। সরকার ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র উপর কোনওরকম ‘প্রছন্ন নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেনি। হলফনামায় তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, ‘এক্সিবিটররা এই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করেছে কারণ দর্শক এই ছবি দেখতে হলমুখী হচ্ছিল না, ছবির প্রতি দর্শকদের আগ্রহ তৈরি করতে সরকারের কিছু করার থাকতে পারে না। সিনেমাহলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবশ্যই সরকার করতে পারে’।
এই ছবিতে বড় কোনও তারকা না থাকায় হলে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে লোক আসছে না, তাই বাধ্য হয়ে হল মালিকরা এই ছবিকে হল থেকে নামিয়ে দিয়েছে। জানায় রাজ্য সরকার। তাঁরা আরও বলে, হল মালিকদের এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের কোনও হাত নেই, বা রাজ্য এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেনি। হলফনামাও স্টালিন সরকার আরও জানায়, মাত্র ১৯টি মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। নির্মাতারা এমন কোনও তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি যা প্রমাণ করে রাজ্য সরকার এই ছবির স্ক্রিনিং-এ বাধা দিয়েছে। এমনকি ওই ১৯টি মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে উপযুক্ত পরিমাণ পুলিশ মজুত রাখা হয়েছিল কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠ রাখতে ওই সকল সিনেমাহলের বাইরে মোট ৯৬৫জন পুলিশ আধিকারিককে মোতায়েন করা হয়েছিল, যার মধ্যেই ছিলেন ২৫জন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার।
পশ্চিমবঙ্গ এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় আগেই সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার শিকার হয়েছে। প্রধান বিচারপতি শুনানি চলাকালীন মমতা সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘দেশের অন্যান্য অংশেও এই ছবি মুক্তি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তাদের চেয়ে আলাদা নয়….তাহলে কি এটা অন্যত্র মুক্তি পেত? পশ্চিমবঙ্গের যা ডেমোগ্রাফিক প্রোফাইল সেই একই প্রোফাইলের সমস্ত রাজ্যে এই ছবি নির্বিঘ্নে প্রদর্শিত হচ্ছে। এর সঙ্গে সিনেম্যাটিক ভ্য়ালুর কোনও লেনাদেনাই নেই, ছবি তো ভালো-খারাপ হতেই পারে’।
বাংলা সরকার সুপ্রিম কোর্টের নোটিশের কী জবাব দেয়, এখন সেইদিকেই তাকিয়েই সকলে।
For all the latest entertainment News Click Here