‘তখন আগুন জ্বলছে, ১৬মাসের মেয়ে আর হুইলচেয়ারে বসা বাবাকে নিয়ে সেখানে আমি একা…’
অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছে ১৬ মাসের একরত্তি মেয়ে। আর একটু হলেই ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে যেতেই পারত! অগ্নিকাণ্ডের সেই রাতের কথা এখন কল্পনা করতেও চাইছেন না টেলি অভিনেত্রী রুচিকা কাপুর। ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন রুচিকা। ভয়াবহ সেই রাতকে ‘দীর্ঘতম রাত’ হিসাবে তুলে ধরেছেন তিনি। ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি স্বামী শাহির ও দমকলকর্মীদের।
ঠিক কী ঘটেছিল ২৫ জানুয়ারি?
রুচিকা লিখেছেন, ‘রাত তখন দেড়টা, ফোন পেয়ে ঘুম ভেঙে যায়। জানতে পারি বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে। সামনে দরজা খুলেই দেখি কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছ। আমাদের পক্ষে তখন সেখান থেকে বের হয়ে আসা প্রয় অসম্ভব ছিল। আমি জানতাম আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। তবে সেটা কতক্ষণ বুঝতে পারছিলাম না। শাহিরকে ফোন করে পুরো বিষয়টা জানাই। কথা বলার সময় আমি যে আতঙ্কিত তা প্রকাশ করি নি। কারণ, জানতাম, তাতে শাহির আরও দুশ্চিন্তা করবে।
আমার বাবা অসুস্থ, উনি হুইলচেয়ার ব্যবহার করেন, আর আমার মাত্র ১৬ মাসের মেয়ে। তাই ১৫ তলা থেকে আমাদের নেমে আসাটা মোটেও সহজ ছিল না। একটা ভিজে তোয়ালে দরজার নিচে রাখি যাতে কালো ধোঁয়া ভিতরে না ঢুকতে পারে। এক দমকল কর্মী জানান, যতক্ষণ না তাঁদের বের করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে নাকের কাছে ভিজে ন্যাপকিন রাখতে যাতে অন্তত মরে না যাই। এরপর শাহির এবং আরও কয়েকজন ছেলে এসে ঠেলে ঠেলে নিচের পার্কিং থেকে গাড়ি সরায়, ফায়ার ইঞ্জিনের জন্য রাস্তা পরিষ্কার করে। এধরনের ঘটনার কথা কেউই কল্পনা করেননি, তই বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে ওভাবেই গাড়িগুলো রাখা ছিল। শাহির অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়, যতক্ষণ না সেখানে দমকলকর্মীরা এসে পৌঁছেছিলেন।এরপর কয়েকঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিভে গেল। শেষপর্যন্ত ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ শাহির ও ৪ জন দমকলকর্মী আমার ফ্ল্যাটে এসে পৌঁছলেন। এপর সর্বপ্রথম আমাদের ১৬ মাসের মেয়ে আনায়া আর আমার মাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাই, দমকলকর্মীরা পরে বাবাকেও নিচে নামিয়ে নিয়ে যান। শেষপর্যন্ত ভোর ৫টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’ নিজের দদীর্ধ পোস্টে দমকলকর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি রুচিকা কাপুর।
ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দমকলকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছন অভিনেতা শাহির শেখ। যদিও তিনিও এদিন সিনেমার নায়কের মতোই সকলের জীবন রক্ষার কাজে হাত লাগিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত শাহির ও রুচিকা থাকেন মুম্বইয়ের আন্ধেরি পশ্চিমের শাস্ত্রীনগরের একটি আবাসনে। সেখানেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল ২৫ জানুয়ারি। মুম্বই তখন ‘পাঠান’ ঝড়ে কাবু। ২০২০-তে লকডাউনের সময় আইনি বিয়ে সারেন রুচিকা ও শাহির। ২০২১-এর ৯ সেপ্টেম্বর তাঁদের জীবনে আসে কন্যা সন্তান আনায়া।
For all the latest entertainment News Click Here