জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে ATK MB, তবু কেরালার বিরুদ্ধে পরিবর্তনের ভাবনা ফেরান্দোর
টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড করে ফেলেছে এটিকে মোহনবাগান। ১৫ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার দুইয়ে থাকলেও, আইএসএল টেবলের শীর্ষে থাকা হায়দরাবাদ এফসি-র ঘাড়ে কার্যত নিঃশ্বাস ফেলছে তারা। প্রসঙ্গত এক ম্যাচ বেশি খেলে হায়দরাবাদের পয়েন্ট ২৯। তবু বাড়তি সতর্ক সবুজ-মেরুনের স্প্যানিশ কোচ জুয়ান ফেরান্দো।
আসলে আজ শনিবারের ম্যাচে সামনে কঠিন প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স। যারা এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে এই ম্যাচে খেলতে নামবেন। অথচ কেরালার বিরুদ্ধে নামার আগে টিম গড়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছে এটিকে মোহনবাগানের কোচ। এই ম্যাচেও তিনি পুরো দল পাবেন কিনা, নিশ্চিত নন। তবে এই ম্যাচের আগে একদিন বাড়তি সময় পেয়ে যাওয়ায় দল গঠনে রদবদল করছেন তিনি।
ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যা বললেন ফেরান্দো:
১১ ম্যাচে অপরাজিত থাকার পর কালকের ম্যাচে জেতার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
প্রতিটা ম্যাচ নিয়ে আলাদা করে ভাবছি। নজির, রেকর্ড নিয়ে ভাবছিই না। আমরা লিগ ও ট্রফি জিততে চাই। সে জন্য প্রতি ম্যাচে জিততে হবে আমাদের। এর মধ্যে কোনও কঠিন দলের বিরুদ্ধে হারলে বা ড্র করলে হয়তো আর একটা সুযোগ পাব। তবে কেরালার বিরুদ্ধে ম্যাচ জিততেই হবে। এই ম্যাচটা আমাদের কাছে আপাতত ফইনালের মতো। কারণ, দুই দলেরই ট্রফি জয়ের সুযোগ আছে। হায়দরাবাদ, জামশেদপুর, মুম্বইয়ের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি কথাটা।
কেরালা ব্লাস্টার্সের শক্তি কোথায় কোথায় এবং কে ওদের সবচেয়ে বিপজ্জনক তারকা?
সবাই জানে পেরেইরা, লুনা, ভাস্কেজরা কেমন দুর্দান্ত ফুটবলার। ওরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দল। ওরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে। ওদের ম্যাচগুলোতে প্রায় একই রকম স্কোর থাকে। গত তিন-চারটে ম্যাচে ওরা তেমন ভাল খেলতে পারেনি। তবে আমরা ওদের যথেষ্ট সমীহ করি।
গত ম্যাচে আমরা দেখেছি, দলের প্লেয়াররা বিপক্ষের মিডফিল্ডারদের কোনও জায়গা দেননি। পরের ম্যাচেও কি সে রকমই কিছু দেখা যাবে?
সব ম্যাচে তো এক রকম খেলা যায় না। প্রতি ম্যাচ আলাদা এবং প্রতি ম্যাচে পরিকল্পনাও অন্য রকম থাকে। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে যা খেলেছি আমরা, তাতে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমরা প্রস্তুতির জন্য মাত্র এক দিন সময় পেয়েছিলাম। কেরালার বিরুদ্ধে আমরা আরও একদিন পেয়েছি। যার ফলে কিছু ব্যাপারে পরিবর্তন আনার সুযোগ পেয়েছি। আশা করি কাল দল আরও ভাল খেলবে।
পুরো দল না খেলতে পারলেও যাঁরা খেলছেন, তাঁরা দলকে জেতাচ্ছেন। এই সাফল্য থেকে আপনারা কতটা আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন?
কোচিং স্টাফ ম্যাচের জন্য তৈরি হতে দলের সবাইকে সাহায্য করছে। সন্দেশ, প্রবীরদের তৈরি করছে ওরাই। কিন্তু আমার খারাপ লাগছে যে পারফরম্যান্স মাঝে মাঝে একশো শতাংশয় পৌঁছচ্ছে না। যদিও এটা সব দলেরই সমস্যা। কোভিড-কোয়ারান্টাইনে খুব ক্ষতি করে দিয়েছে। শারীরিক সক্ষমতার দিক থেকে খেলোয়াড়রা একশো শতাংশে নেই। গত মাসে সব দলেরই কঠিন সময় কেটেছে। তবে এখন সে সব সামলে নিয়ে পারফরম্যান্স ভাল করতেই হবে।
রয়, ডেভিড, হুগো কার্লদের চোটের এখন কী অবস্থা?
ওরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে ওদের যে চোট লেগেছে, সেগুলো বেশ গুরুতর ছিল। তবে এখন যে রকম দ্রুত সেরে উঠছে, তাতে আমি খুশি। এখন ওরা একশো শতাংশ সেরে উঠে দলকে সাহায্য করার অপেক্ষায় আছি। তার পরে হয়তো আমাদের সেরা মুহূর্তগুলো আসবে।
পরের ম্যাচে কার্ড সমস্যার জন্য দীপক টাঙরি খেলতে পারবেন না। ওঁর জায়গায় কাকে ভেবে রেখেছেন?
সেটা ম্যাচের আগে ভাবব। পরিকল্পনা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। দীপককে পাব না ঠিকই। তবে যেহেতু সেটা গত ম্যাচের পরই জেনেছি, তাই সেই পরিস্থিতি অনুযায়ীই পরিকল্পনা করেছি। টাঙরি না খেললে সাহিল, বিদ্যানন্দ, অভিষেক রয়েছে দলকে সাহায্য করার জন্য।
আপনি এটিকে মোহনবাগানে যোগ দেওয়ার পর জনি কাউকোকে অন্য চেহারায় পাওয়া যাচ্ছে। এই ব্যাপারে কী বলবেন?
কারণ একটাই। দলের প্রত্যেকেই নিজের সেরাটা দিতে চায়। প্রত্যেকেরই লক্ষ্য রয়েছে। জনির ব্যাপারে আমি খুশি। ওর পারফরম্যান্স এখন ভাল। যখন বেঞ্চে ছিল, তখন পাঁচ, দশ বা কুড়ি মিনিটের জন্য খেলেও দলকে সাহায্য করেছে। ও খুব পেশাদার। ম্যাচের পরের দিনই অনুশীলনে নেমে পড়ে। ওর মতো খেলোয়াড়কে দলে পাওয়া খুবই আনন্দের। কারণ, দলের বাকিরা ওকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়।
গত ম্যাচে লিস্টন কোলাসোকে শেষ দিকে দেখে মনে হচ্ছিল অস্বস্তিতে ছিলেন। তিনি কি এই ম্যাচে শুরু থেকে খেলতে পারবেন?
সেটা জানার জন্য ম্যাচের আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে অনেক কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে ওকে। তার পরে বোঝা যাবে ও ম্যাচে নামার জন্য কতটা তৈরি।
অনেক দিন পর আপনারা ‘ক্লিন শিট’ রাখতে সমর্থ হলেন। একে কি রক্ষণের সাফল্য বলবেন?
আমি আগের মতোই একই কথা বলব। আমরা তিন পয়েন্ট পেতে চাই। সে যদি ৩-১, ২-১ হলেও কোনও অসুবিধা নেই। বুঝতে পারি যে সমর্থকেরা ২-০, ৩-০-য় জিতলে খুব খুশি হন, সবার প্রশংসা পাওয়া যায়। ফুটবলে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল কেন জিতলাম বা কেন হারলাম। ধরা যাক, আমরা ১-০-য় জিতলাম। কিন্তু বিপক্ষ ৬-৭টা সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে নিল। এটা কিন্তু ভাল নয়। ‘ক্লিন শিট’ হল, না কি হল না, সেটা বড় কথা নয়। আমাদের পয়েন্ট কম হল কি না, ম্যাচে আমরা ঠিকমতো ওঠা-নামা করতে পারছি কি না, এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ, এগুলোই আমাদের গুরুতর সমস্যা।
For all the latest Sports News Click Here