‘ছি! হিন্দুর নামে কলঙ্ক আপনারা’, ইফতারি করে ট্রোলড রাহুল-প্রীতি, জবাব অভিনেত্রীর
সোমবার মধ্যরাতে ইনস্টাগ্রামের দেওয়ালে একটি রিল ভিডিয়ো পোস্ট করেন অভিনেত্রী প্রীতি বিশ্বাস। ভিডিয়োয় দেখা যায়, পরিচিতদের সঙ্গে মাটিতে বসে ইফতারি করছেন রাহুল-প্রীতি। মানে ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর শংকর আর ‘ধুলোকণা’র মিনি দিদি। প্রেক্ষাপটে বাজছে বজরঙ্গি ভাইজানের ‘ভর দো ঝোলি মেরি’ গান। দু’জনের সামনেই সাজানো নানা-রকম ফল আর জুসের গ্লাস। অভিনেত্রীর এই ভিডিয়ো অনেকেরই মন ছুঁয়ে যায়, তবে সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশের চক্ষূশূলও হয়ে ওঠেন প্রীতি। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কটূক্তির মুখে পড়েন। ধর্ম টেনে আক্রমণ শানানো হয় এই তারকা দম্পতিকে।
একজন লেখেন, ‘মুসলিমদের তো কখনও দেখি না হিন্দুদের উৎসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে, এখনই আনফলো করলাম আপনাকে’। অপর একজন লেখেন, ‘হিন্দুদের নামে কলঙ্ক, ধর্ম বদলে ফেলুন’। অনেকে আবার ঠেস দিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি মুসলিম কবে থেকে হলেন? জানা ছিল না’। লাগাতার ট্রোলিংয়ের মুখে পড়ে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে প্রীতির। ‘বালিঝড়’-এর পলি ম্যাডাম ইনস্টাগ্রাম লাইভে এসে ধুয়ে দিলেন ট্রোলারদের। প্রীতির সটান প্রশ্ন, ‘এত বাজে বাজে মন্তব্য করছেন আপনারা, আচ্ছা তাহলে ক্রিসমাসে পার্কস্ট্রিটে কেন যান আপনারা? আগে নিজেদের মানসিকতা পরিষ্কার করুন, তারপম আমাকে জাত-ধর্ম বোঝাতে আসবেন’।
অভিনেত্রী জানান, হেয়ারকাট করাতে পার্লারে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে সেই পার্লারের কাস্টমার তিনি। সন্ধ্যা ৬টা বেজে গেলে সেখানকার সকলে মিলে রোজা খুলতে বসে। সেইসময় রাহুল-প্রীতিও সেখানেই হাজির ছিলেন, একসঙ্গে বসে ইফতারি করার আমন্ত্রণ পান তাঁরা। সেই অনুরোধ ফেলতে পারেননি অভিনেত্রী, আর সেই মুহূর্তটা তাঁর যাকে খুব পবিত্র মনে হয়েছিল তাই নিজের ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন। এটা নিয়ে এত বিতর্ক দানা বাঁধতে পারে এমন ধারণাই ছিল না তাঁর। কিন্তু গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ তিনি।
প্রীতি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে বদল আনুন। আমি ওদের সঙ্গে বসে ইফতারি করেছি বলে অসুবিধাটা কোথায়? একজন লিখেছেন, আপনার দিন ঘনিয়ে এল। একটা খেজুর খেয়েছি বলে আমার জাত চলে গেল?’ যাঁরা প্রীতিকে আনফলো করার হুমকি দিয়েছেন তাঁদের উদ্দেশে অভিনেত্রী বলেন, ‘আপনাদের আমিই ব্লক করে দিয়েছি। আমার দরকার নেই। আমি চাই না এমন নোংরা মানসিকতার লোক আমার প্রোফাইলে থাকুক।’
সর্বধর্মসমন্বয়ের বার্তা দিয়ে প্রীতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ভগবান একজন। আমার শাশুড়িমা এই মালিককে মানেন। উনি গরওয়ালি রাজপুত মহিলা, ওঁনার মা মুসলিম ছিলেন। আবার এটা নিয়ে কন্ট্রোভার্সি করবেন না। তবে এটা নয়, উনি মানেন বলে আমি মানি। আমি ছোট থেকেই বিশ্বাস করি ভগবান একজন’।
লাইভ চলাকালীনও ‘মুসলিম দিদি’ থেকে শুরু করে নানা কটাক্ষ ধেয়ে আসে প্রীতির দিকে। অনেকে আবার ভরপেট খেয়ে ইফতারি করা নিয়ে খিল্লি করেন প্রীতিকে নিয়ে। যদিও তাঁদের উদ্দেশে প্রীতির সাফ বার্তা, ‘আপনাদের মানসিকতায় বদল দরকার’। জাতি-ধর্মের ঊর্ধে ওঠে, সকলকে মানবতার ধর্মের পাঠ দিলেন অভিনেত্রী।
For all the latest entertainment News Click Here