ছক্কার রেকর্ড আইরিশদের, শেষে ODI-তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় বাংলাদেশের
কাজে এল না হ্যারি টেক্টরের দুরন্ত ইনিংস। নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিমের হাত ধরে নিজেদের একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতল বাংলাদেশ। শুক্রবার তিন বল বাকি থাকতেই আয়ারল্যান্ডকে তিন উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ জিতলেন তামিম ইকবাল, শাকিব আল হাসানরা। সেইসঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন (প্রথম ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছিল)। ৯৩ বলে ১১৭ রানের দুরন্ত ইনিংসের সুবাদে ব্যাটের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন শান্ত।
শুক্রবার চেমসফোর্ডে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরে খেলা শুরু হওয়ায় ৪৫ ওভারের ম্যাচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর মেঘলা আকাশের নীচে বোলিংয়ের পুরো ফায়দা নিয়ে শুরুতেই আয়ারল্যান্ডকে চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান পল স্টার্লিং। সপ্তম ওভারে সাজঘরে ফিরে যান স্টিফেন ডোহেনি। ৬.১ ওভারে ১৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে আয়ারল্যান্ড।
সেই পরিস্থিতি থেকে আইরিশদের টেনে বের করেন অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি এবং টেক্টর। দীর্ঘদিন ছন্দে না থাকলেও চাপের মুখে ৫৭ বলে ৪২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন বালবার্নি। তৃতীয় উইকেটে টেক্টরের সঙ্গে ৯৮ রান যোগ করেন। কিন্তু ২৪ তম ওভারে বালবার্নি আউট হওয়ার ফলে ফের চাপে পড়ে যায় আয়ারল্যান্ড। টেক্টরের সঙ্গ দিতে পারেননি লরকান টাকার এবং কুর্তিস ক্যাম্পফার। তবে তাঁদের ব্যর্থতা ভুলিয়ে দেন জর্জ ডকরেল। টেক্টরও সঙ্গী পেয়ে বেধড়ক মারতে থাকেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৬৮ বলে ১১৫ রান যোগ করেন তাঁরা। সেই জুটির সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ৩১৯ রান তোলে আয়ারল্যান্ড।
ট্যাক্টর ১১৩ বলে ১৪০ রান করেন। মারেন সাতটি চার এবং ১০ টি ছক্কা। সেইসঙ্গে রেকর্ডও গড়েন। আয়ারল্যান্ডের হয়ে একটি ইনিংসে সর্বাধিক ছক্কা মারার নিরিখে বালবার্নিকে ছাপিয়ে যান। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আটটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন বালবার্নি। সার্বিকভাবে শুক্রবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৬ টি ছক্কা মারে আয়ারল্যান্ড। যা দলগত রেকর্ডও বটে। অন্যদিকে, ৪৭ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন ডকরেল। আট বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন মার্ক এডের।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভাসল বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ, কপাল খুলল প্রোটিয়াদের, সরাসরি ODI WC খেলবেন বাভুমারা
তবে আয়ারল্যান্ড যে ৩১৯ রান তোলে, সেটার দায়ভার বাংলাদেশের ফিল্ডারদের নেওয়া উচিত। একেবার হতাশাজনক ফিল্ডিং করেন তাঁরা। ২৩ রানে টেক্টরের ক্যাচ ফেলেন অধিনায়ক তামিম। ৫৯ রানে ডকরেল সহজ ক্যাচ ফস্কে দেন শাকিব। আর ফিল্ডিংয়ের সেই ব্যর্থতার বল ভুগতে হয় বোলারদের। বেধড়ক মার খান শরিফুল ইসলাম। নয় ওভারে ৮৩ রান দিয়ে দু’উইকেট নেন। তাজিজুল ইসলাম সাত ওভারে ৫৯ রান দিয়ে এক উইকেট নেন। তারইমধ্যে ভালো বোলিং করেন হাসান মেহমুদ। নয় ওভারে ৪৮ রান দিয়ে দু’উইকেট নেন।
সেই রান তাড়া করতে নেমে একেবারেই ভালো শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯.১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় দুই উইকেটে ৪০ রান। ২১ বলে ২১ রান করেন লিটন দাস। ১৩ বলে সাত রান করেন তামিম। তৃতীয় উইকেটে শাকিব আল হাসানের সঙ্গে কিছুটা খেলায় ফেরার চেষ্টা করেন শান্ত। ৪৭ বলে ৬১ রান যোগ করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ICC proposed revenue model: ICC-র আয়ের প্রায় ৪০% পাবে ভারত, বহু পিছনে বাকিরা, কমল বাংলাদেশ ও পাকের বরাদ্দ
তারপর চতুর্থ উইকেটে তোহিদ হৃদয়ের সঙ্গে চতুর্থ বড় জুটি গড়েন শান্ত। ১০২ বলে ১৩১ রানে সেই জুটির সুবাদেই ম্যাচ জেতার আশায় বুক বাঁধতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু তোহিদ (৫৮ বলে ৬৮ রান) এবং শান্ত পরপর আউট হয়ে যাওয়ায় আবারও চাপে পড়ে যান ‘টাইগার’-রা। শেষপর্যন্ত নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিন বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশকে জিতিয়ে দেন মুশফিকুর। ২৮ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তবে তাঁর কাজ কিছুটা সহজ করে দেন এডেন। চার বলে চার রান বাকি অবস্থায় নো বল করেন। ফলে বাড়তি চাপটাই তৈরি হয়নি।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)
For all the latest Sports News Click Here