চোট পাওয়া প্লেয়ারদের নিয়ে আলাদা দল হয়ে যাবে- ম্যাচ হেরেই ভাঙা রেকর্ড ATKMB কোচের
মঙ্গলবার হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে দলের ১৮ নম্বর ম্যাচে ছ’নম্বর হারের পরও খুব একটা উত্তেজিত বা হতাশায় ভেঙে পড়তে দেখা গেল না এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ জুয়ান ফেরান্দোকে। তাঁর মতে, এই পরীক্ষায় পাস করার মতো খেলোয়াড় বা পরিকল্পনা তাঁর দলের ছিল না।
মঙ্গলবার গত বারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসি ঘরের মাঠে বাগানকে ১-০ হারিয়ে দুই নম্বরে থাকা নিশ্চিত করে ফেলেছে। অর্থাৎ তারা সরাসরি সেমিফাইনালে খেলবে। এ দিন ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য থাকার পর ৭৯তম মিনিটে মাঠে নামা নাইজেরীয় তারকা বার্থোলোমিউ ওগবেচের দূরপাল্লার শটে গোল হয়। সেই সঙ্গে জয় ছিনিয়ে নেয় হায়দরাবাদ। ১৮ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট পেয়ে দুই নম্বর জায়গাটা পাকা করে ফেলল তারা।
টানা তিনটি ম্যাচে জয়হীন থাকার পরে কোচ ফেরান্দো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের এত জন খেলোয়াড় চোট-আঘাতে জর্জরিত যে, পরিকল্পনা বদলাতে হয়। হায়দরাবাদকে অভিনন্দন দ্বিতীয় স্থান সুনিশ্চিত করার জন্য। ওগবেচে সত্যিই অসাধারণ ফুটবলার। ওই সময়ে গোল খেলে ম্যাচে ফেরা কঠিন হয়ে যায়। তিন পয়েন্ট খোয়ানোটা খুবই হতাশাজনক। তবে হায়দরাবাদ যে যথেষ্ট ভালো দল, তা তো মেনে নিতেই হবে। ওরা দু’মরশুম ধরে সবাই একসঙ্গে খেলছে। ওদের মধ্য বোঝাপড়া, তালমেল সব কিছুই ভাল।’
আরও পড়ুন: ওগবেচের গোলে হার, ATKMB-র লড়াই কঠিন হল, দু’নম্বর জায়গা নিশ্চিত করল হায়দরাবাদ
নিজের দলের অবস্থা নিয়ে স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘আজ আমাদের হাতে ১৯-২০ জন খেলোয়াড় ছিল। শুভাশিস, হুগো, কার্লকে পাইনি আজ। আরও কত চোট-আঘাত আগে লেগেছে, তাও মনে করুন। চোট পাওয়া খেলোয়াড়দে নিয়ে কার্যত আরও একটি দল গড়ে ফেলা যায়। একটা দলকে নিয়ে প্রস্তুতি সারার পর ৬-৭জন চোটের জন্য যদি বসে যায়, তা হলে কার্যত অন্য দল নিয়ে খেলতে হয়। কিন্তু ফুটবল এমনই।’
টানা তিনটি ম্যাচের একটিতেও কোনও জয় নেই সবুজ-মেরুন বাহিনীর। এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি কোচ। এই প্রসঙ্গ তোলা হলে তিনি বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে আমরা আলোচনা করছিলাম যে, এখন পরবর্তী ম্যাচে মনোনিবেশ করতে হবে। আমাদের পরিস্থিতি কঠিন, আরও চারটে দল আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, এসব ভেবে শক্তিক্ষয় করার কোনও মানে হয় না। আমাদের হাতে মাত্র দু’-তিনদিন আছে। পরের ম্যাচ শনিবার। আমাদের চারিত্রিক দৃঢ়তার প্রমাণ দিতে হবে এখন। প্লে অফে উঠে ছেলেদের বড় ক্লাবের হয়ে খেলার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। (সমর্থকদের) সবাইকে আমরা হতাশ করেছি। কিছু কিছু সময় চোট-আঘাতের সমস্যার জন্য আমরা সাফল্য পাইনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এ রকম কঠিন সময়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: ফেরান্দোর পারফরম্যান্সে অখুশি ATKMB কর্তৃপক্ষ, পুরনো কোচকে ফেরানোর ভাবনা
প্লে অফে থাকতে গেলে অবশ্য পরের দুই ম্যাচে জিততে হবে এটিকে মোহনবাগানকে। তাদের সংগ্রহ এখন ১৮ ম্যাচে ২৮। সেক্ষেত্রে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৩৪। শেষ দুই ম্যাচের একটি কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে, যারা ৩১ পয়েন্ট নিয়ে তাদের উপরে রয়েছে। পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে ব্লাস্টার্সকে হারাতে পারলে তাদের টপকে যেতে পারেন ফেরান্দোরা। বেঙ্গালুরু এফসি-রও পয়েন্ট ২৮, যারা পরের ম্যাচে খেলবে লিগশিল্ডজয়ী মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও তাদের এফসি গোয়ার (২৭) বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলতে হবে। কোনওটিই সহজ হবে না সুনীল ছেত্রীদের পক্ষে।
বেঙ্গালুরু ছাড়াও এফসি গোয়া অপর ম্যাচ খেলবে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে। তুলনায় ওড়িশার (২৭) কাজটা কিছুটা হলেও সহজ। কারণ, তাদের শেষ দু’টি ম্যাচ জামশেদপুর এফসি এবং নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে, যারা লিগ টেবলের একেবারে নীচে আছে। তাই সেরা ছয়ে জায়গা পাকা করতে এখন এটিকে মোহনবাগানের শেষ দুই ম্যাচ জেতা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।
For all the latest Sports News Click Here