চলন্ত ট্রেনে যৌন হেনস্থার শিকার উঠতি মডেল, গ্রেফতার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান
চলন্ত ট্রেনে যৌন হেনস্থার শিকার উঠতি মডেল। অভিযোগের তীর এসএসবি কমান্ড্যান্ট (সশস্ত্র সীমা বল) ব্যাটালিয়ন ৬৩-র এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নাম ধীরেন্দ্র কুমার মিশ্র। এ বিষয় নেটমাধ্যমের পাতায় একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন ওই মডেল।
ঠিক কী ঘটেছিল? এ বিষয় জানতে, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল ওই মডেলের সঙ্গে। ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে তিনি জানান, ২৭ জুন রাত ৯.৫৫ মিনিটে হওড়া-কালকা মেলে উঠেছিলেন তিনি। কোচ নং ছিল বি-১ এবং তাঁর সিট নম্বর ছিল ০১। দুর্গাপুরে পৌঁছোনোর সময় ছিল রাত ১১.৫৫ মিনিট।
তাঁর কথায়, ‘দুর্গাপুর নামার ঠিক ১০ মিনিট আগে আমি গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। দুর্গাপুরে আমার বাড়ি। কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকি। আমার খাবারের ব্যবসাও রয়েছে। তাই দুর্গাপুর কলকাতা যাতায়াত করতে থাকি। এর আগেও বহু বার ট্রাভেল করেছি। তবে এমন পরিস্থিতির শিকার কখনও হইনি।’
ঠিক কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে? তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কোচে ভারতীয় আধা-সামরিক বাহিনী (সশস্ত্র সীমা বল)-এর পুরো একটি ব্যাটেলিয়ান ছিল। আমি সিটে শুয়েছিলাম। ঠিক পৌঁনে বারোটা নাগাদ গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। তখন পিছন থেকে একজন ব্যক্তি খালি গায়ে (খুব সম্ভবত মদ্যপ অবস্থায়) আমাকে এসে জড়িয়ে ধরেন। চিৎকার করতেও উনি আমাকে ছাড়েননি। এরপরই আরও চিৎকার করতেই উনি আমাকে ছেড়ে দেন। এরপরই টিটি ডেকে আনি আমি। তখন ট্রেন দুর্গাপুর স্টেশন ঢোকার মুখে।’
ওই মডেল জানিয়েছেন, ‘সেই সময় ওই ব্যক্তি বাথরুমে ঢুকে দরজা লক করে দেন। উনি ভাবেন, আমি নেমে যাব! আর ছোটখাটো কী অশান্তি হবে। এরপরই আমি ওঁকে বাথরুম থেকে বের করার চেষ্টা করতেই, উনি আমাকে সজোরে একটা লাথি মারেন। সঙ্গে গালিগালাজ করেন। ট্রেনে আরপিএফ ছিলেন অন ডিউটি, তিনি এসে ওই (অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির নাম ধীরেন্দ্র কুমার মিশ্র) ব্যক্তিকে বার করেন বাথরুম থেকে। তিনি আমার বয়ানও রেকর্ড করেন। এর পরে দুর্গাপুরে না নামিয়ে তাঁকে আসানসোলে নিয়ে যাওয়া হয়।’
অভিযুক্ত ধীরেন্দ্র কুমার মিশ্র নাকি জানিয়েছেন, তিনি নিজের বাড়ি কালকা যাচ্ছিলেন। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, প্রথম জিআরপিএফের তত্ত্বাবধানে কেস লজ হয়েছে। এরপর অন্ডাল থানাতে কেস রেজিস্টার করেছেন তিনি। আসাানসোল স্টেশন থেকে ওই ব্যক্তিকে আজ অন্ডাল থানাতে নিয়ে আসা হয়েছে। থানার এফআইআর লজ এবং ২৮ জুন কোর্টে শুনানির ডেট ছিল। শুনানির তারিখ একদিন পিছিয়ে ২৯ জুন দুপুর ১টা করা হয়েছে। এখন ওই ব্যক্তি আসানসোল জেলে রয়েছেন।
ওই মডেল জানিয়েছেন, শুরু থেকেই এসি কোচে শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে ঘুরছিলেন ওই ব্যক্তি। অশালীন আচরণও করছিলেন। কোনও এক যাত্রী অভিযোগ করার পর হাফ প্যান্ট জাতীয় কিছু একটা পরেছিলেন। মডেলের বক্তব্য, ‘ঘুমের মধ্যে টের পেয়েছিলাম, কিছু ঝামেলা চলছে। বিষয়টা তখনও অত মাথা ঘামাইনি। পৌঁনে ১২টার সময় গেটের সামনে দাঁড়াতেই এই ঘটনা ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘আমি রেল মন্ত্রককে টুইট করে ঘটনাটি জানিয়েছি। ওঁর (ধীরেন্দ্র কুমার মিশ্র) উচ্চপদস্থরা আমাকে ফোন করেন। ওঁর কম্যান্ডিং অফিসারও ফোন করে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমি কেস তুলব না। উনিও (ধীরেন্দ্র কুমার মিশ্র) আমাকে বলছেন, ক্ষমা করে দিতে। ১৫ বছরে এই প্রথম ভুল করেছেন বলেও জানিয়েছেন।’ কিন্তু এখনও এই কেস থেকে পিছিয়ে আসছেন না বলেও জানিয়েছেন ওই মডেল।
For all the latest entertainment News Click Here