‘খুব বেশি জাজমেন্টাল নই, কে কী পরিস্থিতি কোন কাজ করছে, এপার থেকে বোঝা মুশকিল’
‘মহানন্দা’র পর ফের একবার অন্যরকম একটা চরিত্র ‘মেধা’ হয়ে পর্দায় ধরা দিয়েছেন অভিনেত্রী গার্গী রায় চৌধুরী। অতনু ঘোষ-এর ‘শেষ পাতা’য় লেখক ‘বাল্মীকি’ প্রসেনজিতের পাশে ‘মেধা’র চরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে শুধুই অভিনেত্রী হিসাবে নয়, এই ছবির জন্য গানও গেয়েছেন গার্গী। এমনই নানান টুকিটাকি বিষয় নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন, অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী গার্গী রায়চৌধুরী।
গার্গী বলেন, ‘এখানে আমি মেধা, বাল্মীকি যখন বলেন, আমি লিখতে পারি না, আমার হাত ব্যথা করে, মাথায় সবকিছু গুলিয়ে যায়। তখন মেধা যেন তাঁর কলম ও মাথা হয়ে তাঁর কাছে ফিরে আসে। অর্থাৎ বাল্মীকির জীবনে প্রবেশ করে, আর তারপরই ছবিতে নতুন কিছু শুরু হয়।’
এমন একটা চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে?
গার্গী রায়চৌধুরী: নাহ (একটু ভেবে)। আমি যে কোনও কাজ করার আগে ভাবি, বুঝি, তারপরই গ্রহণ করি। আর এটা তো গ্রহণ করেই নিয়েছি। চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, একটা দৃশ্য থেকে আরেকটা দৃশ্যে অভিনয় করার। ভাবি একটা দৃশ্যে এভাবে অভিনয় করেছি, পরেরটা আরও ভালো কিছু করতে হবে। এটাতে কোনও চাপ ছিল না, খুব নির্ভার ছিলাম। এই ছবিটা আমার কাছে একটা ম্যাজিকাল কমফোর্ট জোন। আর এর অন্যতম কারণ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও অতনু ঘোষ। ওঁর সঙ্গে এবং পরিচালকের সঙ্গে আমার একটা সুন্দর স্বচ্ছন্দ্যের জায়গা রয়েছে। তার জন্য নিয়মিত কথা বলতে হয় না। ৯-৬মাসে কথা বললেও চলে। তবে ভিতরে কোথাও একটা আমাদের বিনি সুতোর যোগ আছে।
‘শেষ পাতা’য় আপনি তো গানও গেয়েছেন?
গার্গী রায়চৌধুরী: হ্যাঁ, সিনেমাতে আমার এটাই প্রথম প্লে-ব্যাক। আসলে ব্যক্তিগত জীবনে আমার যখন রাগ হয়েছে, দুঃখ হয়েছে, তখন আমরা ওই একটা ঠাকুরের আশ্রয় নি। আমরা বলি না, নাস্তিক হই কিংবা আস্তিক, একটা ঠাকুরের পুজো আমরা বাঙালিরা করি। সেটা হলেন রবীন্দ্রনাথ। ওঁর অনেক গানকে আমি কবিতার মতো করেছি ছোট থেকে বলেছি। গীতবিতানের অনেক গান আমি কবিতার মতো করে আবৃত্তি করতাম। আর এই যে ‘আমার জ্বলেনি আলো অন্ধকার’ কত জায়গায় কোট হিসাবে ব্যবহার করেছি। তাই আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, যখন অতনু ঘোষ এসে বলেন, তোমায় দু’টো গান গাইতে হবে, তারমধ্যে এটা একটা। আমি অবাক হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম, কী গান ‘আমার জ্বলেনি আলো’! যেটা গীতা ঘটক ও দেবব্রত বিশ্বাস গেয়েছেন? অতনু ঘোষ জোর গলায় বললেন, ‘আরে হ্যাঁ।’
থিয়েটার থেকে সিরিয়াল, একসময় টেলিফিল্ম এমনকি সিনেমাতেও বিভিন্ন চরিত্রে আপনাকে পেয়েছি, ওয়েব সিরিজে কবে পাব?
গার্গী রায়চৌধুরী: আসলে অপেক্ষা করছি (হাসি), কখন ঠিক একটা পছন্দের চরিত্র পাব।
এত বেছে বেছে চরিত্র, ছবিতে কাজ কেন করেন?
গার্গী রায়চৌধুরী: যদি উল্টোটা বলি! (হাসি) আসলে এভাবেই এসেছে আমার কাছে চরিত্রগুলো।
আরও পড়ুন-আমার জীবন বা কেরিয়ারে কোনও ‘গডফাদার’ পাইনি, ‘গডমাদার’ পেয়েছি: প্রসেনজিৎ
সাম্প্রতিক সময়ে টলিউডের বেশকিছু শিল্পীর নাম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, এবিষয়ে আপনি কী বলবেন?
গার্গী রায়চৌধুরী: এই বিষয়ে আমার উপর আশীর্বাদ রয়েছে বলা যেতে পারে। এই কয়েকবছরে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা দেখেছি, তবে কোনওকিছুর সঙ্গে আমাকে জড়াতে হয়নি। আমি আসলে কখনও জাজমেন্টাল হই না, এটাই আমার স্বভাব। আমার সবসময় মনে হয়, কোন পরিস্থিতিতে পরিবেশে কে কী করছে একমাত্র তাঁরাই সেটা বুঝবেন। আমরা সেটা এ-প্রান্তে দাঁড়িয়ে বুঝব না। আবার আমার যেটা হবে, সেটা অপর প্রান্তের মানুষ নাও বুঝতে পারেন।
একটু অন্যরকম প্রশ্ন করি, অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে গার্গী রায় চৌধুরীকে চিনি। এসবের বাইরে বাড়িতে অবসরে কীভাবে সময় কাটে?
গার্গী রায়চৌধুরী: বই পড়ে। আমি পড়তে ভীষণ ভালোবাসি। আমার সঙ্গে যাঁর বিয়ে হয়েছে, তিনিও পড়তে ভালোবাসেন।
আজকালকার অভিনেতাদের মতো আপনাকে খুব বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় না…
গার্গী রায়চৌধুরী: নাহ, আমি খুব বেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকি না, তবে যখন যেটুকু পোস্ট করি নিজেই সেটা পোস্ট করি। এর জন্য আমার আলাদা করে কোনও লোক নেই।
ছবির জন্য আজকাল প্রচার একটা বড় বিষয়, এই প্রচারে আপনি কতটা বিশ্বাসী?
গার্গী রায়চৌধুরী: ছবির জন্য প্রচারের কিছুটা প্রয়োজন তো রয়েছেই। নাহলে তো মানুষ জানতেই পারবেন না। মানুষকে ছবিটা দেখাতে গেলে, তাঁদের কাছে পৌঁছতে হলে অল্প বিস্তর হলেও প্রচার প্রয়োজন বৈকি।
For all the latest entertainment News Click Here