ক্লাবের উন্নতির জন্য টাকা দিচ্ছেন ৮৩ বছরের সমর্থক, আবেগের দাম দিতে পারবে EB?
৮৩ বছরের সমরেশ রায়। ক্লাব অন্ত প্রাণ তিনি। ইস্টবেঙ্গলের প্রতি তাদের সমর্থনের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক অনুদানও যেন বংশগত পরম্পরা। ৭০ বছর আগে ক্লাবের প্রিয় ফুটবলারকে রেখে দিতে সেই সময় এক বাক্যে হাজার দুয়েক টাকা লাল হলুদ শিবিরকে অনুদান দেন সমরেশ বাবুর বাবা সুবোধ চন্দ্র রায়। সেই পরম্পরা বজায় রেখে এবার এগিয়ে এলেন তাঁর ছেলে সমরেশ রায়। ক্লাবের প্রতি এই ভালোবাসা থেকেই প্রিয় ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দিতে তখনও পিছিয়ে আসেনি এই ব্যবসায়ী রায় পরিবার। বর্তমানে সেই প্রথার ব্যতিক্রম হলো না। খারাপ সময়ে ক্লাবকে কিভাবে টাকা দেওয়া যায় সেই বিষয়ে কথা বলতে শিবিরে পৌঁছে গেলেন সুবোধ চন্দ্র রায়ের পুত্র সমরেশ রায়।
ইস্টবেঙ্গলের তৈরি ক্রাউড ফান্ডিংয়ের আর্থিক অনুদান দিতে ক্লাবে পৌঁছে যান ব্যবসায়ী রায় পরিবারের এই সদস্য। কিভাবে প্রিয় ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দেওয়া যায় তার পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। সংবাদ প্রতিদিনে প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্লাবের সঙ্গে দেখা করেন ওই ব্যক্তি। ক্লাবের তাঁবুতে বসেই সংবাদ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আমাদের প্রাণের সঙ্গে জড়িত। এটা একদম অন্তরের বিষয়। এই ক্লাবের সঙ্গে শুধু আমি নয় আমাদের পুরো পরিবার জড়িত। ক্লাবের পাশে থাকা আমাদের কাছে খুব স্বাভাবিক বিষয়। আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দিতে চাই। সেই পথ খুঁজতেই আজকে এখানে এসেছি।’
সমরেশ বাবুর বাবা সুভাষচন্দ্র রায় ক্লাবের প্রায় জন্ম লগ্ন থেকে জড়িত। সেই সময় তার বাবা বিভিন্নভাবে ক্লাবকে সাহায্য করেছেন এবং একনিষ্ঠভাবে সমর্থন জানিয়ে গিয়েছেন। সেই আবেগের কথা বলতে গিয়ে এই সমরেশ বাবু বলেন, ‘আমরা মূলত পূর্ববঙ্গের লোক। ১৯২৫-২৬ সাল থেকেই বাবা ক্লাবের খেলা দেখতে আসতেন। বাবার মুখে শুনেছি ইস্টবেঙ্গল কোনও ম্যাচ হেরে গেলে বাড়ি ফেরা বেশ দুষ্কর হয়ে উঠতো। বিভিন্ন ব্যঙ্গ বিদ্যুৎ শুনতে হতো তাদের।’ স্বাভাবিকভাবেই বাবার পথ অনুসরণ করে ইস্টবেঙ্গলের প্রেমে পড়েন সমরেশবাবু। তারপর দীর্ঘ সময় পার হয়েছে। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। তবে ক্লাবের প্রতি সমর্থন এবং ভালোবাসা কমেনি বরং তা আরও দ্বিগুণ হয়েছে। সমরেশের কথায়, ‘১৯৪৯ সালে বাবার সঙ্গে প্রথমবার ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখতে আসি। সেই ম্যাচে বিপক্ষ দল ছিল মহামেডান। আমরা ম্যাচটি ছয় গোলে জিতে যায়। তাই ওই ম্যাচটা আমার কাছে সারা জীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এইবারের মতো ১৯৫৩ সালে এক ফুটবলারকে ধরে রাখতে অনেকে ক্লাবকে আর্থিক অনুদান দেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৫৩ সালে রোমানিয়া থেকে ঘুরে আসার পর ভেঙ্কটেশকে দলে রাখতে চেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাকে নিতে মরিয়া হয়ে ঝাঁপায় মোহনবাগানে। তবে সেই সময় আর্থিক অবস্থা ক্লাবের খুব একটা ভালো ছিলনা। তখন বাবা ২০০০ টাকা ক্রাউড ফান্ডিং দেওয়া হয়।’ এখনও টাকা দিতে চায় প্রায় পরিবার। সেই বিষয়ে ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ‘ক্লাবের বহু সদস্য সমর্থক এইভাবে ক্লাবের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এইভাবে আরও অনেককে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত করা।’
For all the latest Sports News Click Here