ক্রিকেটের ফিটনেস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: ইয়ো-ইয়ো টেস্ট নিয়ে বিরক্ত সুনীল গাভাসকর
বিসিসিআই সম্প্রতি টিম ইন্ডিয়াতে নির্বাচনের জন্য ইয়ো-ইয়ো টেস্টের পাশাপাশি ডেক্সা স্ক্যান বাধ্যতামূলক করেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে বলা হয়েছে এই দুটি টেস্টেই যোগ্যতা অর্জনকারী খেলোয়াড়রাই টিম ইন্ডিয়াতে সুযোগ পাবেন। তবে বিসিসিআই-এর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলে উদীয়মান খেলোয়াড় নির্বাচনের জন্য ইয়ো-ইয়ো এবং ডেক্সা স্ক্যান ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার বিসিসিআই-এর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। এ জন্য তিনি তার উদাহরণ দিয়েছেন। গাভাসকর কটূক্তি করেছিলেন যে বিসিসিআই-এর নির্বাচক কমিটিতে বায়ো মেকানিকাল এবং বডি সায়েন্স বিশেষজ্ঞ থাকা উচিত।
আরও পড়ুন… এই পরিবেশে কাজ করতে পারবেন না আফ্রিদি- PCB-র বিরুদ্ধে রামিজের নতুন আক্রমণ
সুনীল গাভাসকর মিড-ডে-এর জন্য তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘অনেক বছর আগে, যখন শারীরিক ফিটনেস ক্রেজ শুরু হয়েছিল, আমাদের দুজন প্রাক্তন সতীর্থ ছিলেন যারা অবসর নিয়েছিলেন এবং সেই মরশুমে বিভিন্ন সিরিজের জন্য দলের ম্যানেজার হয়েছিলেন। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দুজনেই ফিট ছিলেন না। তবে তাঁরা মূলত দীর্ঘ দূরত্বের দৌড় করতে পারতেন।’
নিজের উদাহরণ টেনে সুনীল গাভাসকর আরও লিখেছেন, ‘যখন থেকে আমি স্কুলে ক্রিকেট খেলতে শুরু করি। তখন থেকে আমার পায়ের অবস্থা এমন ছিল যে, মাটিতে কয়েকটা পাক ঘুরলেই আমার পায়ের চারপাশের মাংসপেশি টানটান হয়ে যেত এবং হাঁটতেও ব্যথা হত।’ নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একটি পুরানো ঘটনা বর্ণনা করে গাভাসকর বলেছিলেন যে, ‘আমার অবস্থা জানা সত্ত্বেও, টিম ম্যানেজার আমাকে দৌড়াতে বলেছিল এবং ফলস্বরূপ আমার পা গুলো আটকে গিয়েছিল। তখন আমি তাঁকে বলেছিলাম যে সে যদি সবচেয়ে বেশি রানের ভিত্তিতে প্লেয়িং-এলেভেন বেছে নেয় তাহলে আমাকে বাদ দিন। ফিটনেস একটি ব্যক্তিগত বিষয়। ফাস্ট বোলারদের স্পিনারদের চেয়ে ভিন্ন মাত্রার ফিটনেস প্রয়োজন। উইকেটরক্ষকদের জন্য বিষয়টি আরও বেশি এবং ব্যাটসম্যানদের সম্ভবত এটি সবচেয়ে কম প্রয়োজন। ক্রিকেটের ফিটনেস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সে দিকে সকলের নজর দেওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন… জানেন সৌদি আরবের কোথায় থাকছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো? খরচ শুনলে ভিরমি খাবেন
কপিল দেব, যিনি তাঁর যুগের অন্যতম যোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন, এর আগেও এই বিষয়ে কথা বলেছেন। কপিল ৫ বছর আগে বলেছিলেন, ‘সুনীল গাভাসকর তাঁর ফিটনেস ড্রিলের অংশ হিসাবে ১৫ মিনিটের বেশি দৌড়াতে খুব কমই খুশি হতেন। তবে প্রয়োজনে তিনি ১০ দিন ব্যাট করতে পারতেন। এমনকি অনিল কুম্বলে, ভিভিএস লক্ষ্মণ এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো খেলোয়াড়রাও ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে বা নাও হতে পারে। কিন্তু তাঁরা ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের অন্যতম। প্রতিটি ক্রিকেটারের ফিটনেস নিয়ে কাজ করার আলাদা আলাদা উপায় থাকে।’
ডঃ জেনস ব্যাংসবোর সঙ্গে কথা বলেছে, তিনি একজন ডেনিশ ক্রীড়া বিজ্ঞানী যিনি ২০১৮ সালে ইয়ো-ইয়ো পরীক্ষা আবিষ্কার করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন যে এই পরীক্ষাটি কেবলমাত্র স্ট্যামিনা বাড়ানো এবং আরও ভাল প্রশিক্ষণে কার্যকর হতে পারে। এটি শুধুমাত্র এই গেমের খেলোয়াড় নির্বাচনের জন্য একটি মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। তখন তিনি বলেছিলেন, শুধুমাত্র ইয়ো-ইয়ো টেস্টের মাধ্যমে খেলোয়াড় নির্বাচনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ক্রিকেটের মতো খেলায় এটিকে নির্বাচনের মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনাকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। এই পরীক্ষাটি একজন খেলোয়াড়ের সক্ষমতা পরিমাপের একটি হাতিয়ার মাত্র। তাই এটি একই ভাবে ব্যবহার করা উচিত।
For all the latest Sports News Click Here