কেন ভেঙেছিল মধুবালা-দিলীপ কুমারের প্রেম সম্পর্ক? এতোদিনে মুখ খুললেন নায়িকার বোন
হাজারো পুরুষের কাঙ্খিত নারী ছিলেন তিনি। তাঁর সৌন্দর্য, মায়াবী হাসি, দাপুটে ব্যক্তিত্ব আর সংবেদনশীল অভিনয়ে মুগ্ধ ছিল কাশ্মীর থেকে কন্যা কুমারী।তিনি মধুবালা। তবে আজীবন ভালোবাসার কাঙাল থেকেছেন তিনি, তাঁর জীবন ছিল ট্র্যাজেডি-তে ভরপুর। সিনেমার গল্পকে হার মানায় মধুবালার জীবন-কাহিনি।
মাত্র ৩৬ বছর বেঁচে ছিলেন এই তারকা। অথচ এই অল্প সময়েই হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এমন ছাপ রেখে গেছেন মধুবালা, যে প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁকে জায়গা দিয়েছে মনের মনিকোঠায়। ৯৩৩ সালের ভালোবাসা দিবসে; অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে জন্মেছিলেন মমতাজ জাহান বেগম দেহলভী ওরফে মধুবালা।
মধুবালার বোন মধু ভূষণ সম্প্রতি মুখ খুলেছেন দিদির সঙ্গে প্রয়াত অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রেম সম্পর্ক নিয়ে। মৃত্যুশয্যায় থাকা মধুবালাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটেছিলেন প্রাক্তন প্রেমিক দিলীপ কুমার, ফাঁস করলেন মধুর। দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেম সম্পর্ক ছিল দুজনের, তবে পরিণতি পায়নি সেই প্রেম। পরবর্তী সময়ে দিলীপ কুমারের উপর অভিমান করেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেছিলেন মধুবালা, আমৃত্যু তিনি কিশোর কুমারের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।
‘মুঘল-এ-আজম’ ছবিতে সেলিম-আনারকলির ভূমিকায় দর্শক দেখেছিল দিলীপ-মধুবালার অসম্পূর্ণ প্রেমের উপখ্যান। বাস্তবটাও খুব বেশি আলাদা ছিল না। দিলীপ কুমার তাঁর অটো বায়োগ্রাফিতে জানিয়েছেন মধুবালার বাবা আতাউল্লা খানের জন্যই ভেঙেছিল তাঁদের সম্পর্ক।
মধুর ভূষণ ইটি টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, ‘মধুবালা কোনওদিন ওকে (দিলীপ কুমার) ভুলতে পারেনি। উনি ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালেও এসেছিলেন, যখন দিদি এক্কেবারে মৃত্যু শয্যায় ছিল। দিলীপ কুমার ওঁকে আশ্বাস দিচ্ছিল ওরা ফের একসঙ্গে কাজ করবেন। তখনও উনি বিয়ে করেননি। ওঁনার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর ওরা কোনওদিন সাক্ষাত করেনি’।
মধুবালার মৃত্যুর পর কবরস্থানে ছুটে এসেছিলেন দিলীপ কুমার। তবে মধুর জানান ততক্ষণে গোরস্থ করা হয়ে গিয়েছিল নায়িকাকে। তাই শেষবারের মতো দেখা হয়নি দুজনের। দিলীপ কুমারের পরিবারও মধুবালাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে করবস্থানে এসেছিল বলে জানান নায়িকার বোন।
মধুবালার বাবার জন্য এই প্রেম কাহিনি পূর্ণতা পায়নি, এমন অভিযোগ মানতে না-রাজ মধুর। তিনি বলেন, মধুবালা বাবার কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিল দিলীপ কুমারকে। উনি রাজি ছিলেন না। ‘নয়া দৌড়’ ছবির শ্যুটিংয়ে গোয়ালিয়ারে পৌঁছাননি মধুবালা, শোনা যায় বাবা আতাউল্লা খানের বাধার জেরেই তেমনটা ঘটেছিল। এরপর বিআর চোপড়া কোর্টে মামলা দায়ের করেন অভিনেত্রী ও তাঁর বাবার নামে। সেই মামলায় মধুবালার বিপক্ষে সাক্ষ্য দেন দিলীপ কুমার। মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন মধুবালার বাবা, এমনই অভিযোগ ছিল তাঁর। এমনকি একটা সময় মধুবালাকে পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করবার কথা বলেছিলেন দিলীপ কুমার। এরপর ১৯৫৭ সালে দীর্ঘ ৬ বছর দীর্ঘ সম্পর্ক ভেঙে দেন মধুবালা। ১৯৫১ সালে ‘তারানা’ ছবির সেটে শুরু মধুবালা-দিলীপের প্রেম কাহিনির
হৃদয়ের অসুখ ছিল মধুবালার। ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ‘মুঘল-ই-আজম’ মুক্তি পায় ১৯৬০ সালে। সেই বছরই নায়িকার শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যায়। এর মাঝেই কিশোর কুমারের বিয়ের প্রস্তাবে সায় দিয়ে গোপনে বিয়ে করেন তিনি। এরপর লন্ডনে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু তত দিনে আর করার কিছু ছিল না। বছর কয়েকের মধ্যেই শয্যাশায়ী হয়ে যান তিনি, কিশোর কুমারের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যও সুখের হয়নি। বিয়ের মাস কয়েকের মধ্যেই আলাদা থাকতে শুরু করেন দুজনে। অসুস্থ মধুবালাকে নার্সদের দায়িত্বে রেখে দিয়েছিলেন কিশোর কুমার। ভাঙা প্রেম, অসুখী দাম্পত্য জীবনের বোঝা নিয়ে ১৯৬৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি না-ফেরার দেশে পারি দেন বলিউডের সর্বকালের সেরা ‘সুন্দরী’ মধুবালা।
For all the latest entertainment News Click Here