ওভার শেষ না করেই মাঠে ছাড়েন, তাহলে কি বড়সড় চোট লাগল? নিজেই জানালেন হার্দিক
বড়সড় কোনও চোট নয়। স্রেফ পায়ে টান ধরেছিল। তাই ওভার শেষ না করেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। এমনটাই জানালেন গুজরাট টাইটানসের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। যিনি চোটের কারণে দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। এমনকী ভারতীয় দলে নিজের জায়গা হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে গুজরাটের ‘সুপারস্টার’ হয়ে ওঠেন হার্দিক। দলের বিপদের মুখে ৫২ বলে অপরাজিত ৮৭ রান করেন। ফিল্ডিংয়ে নেমে দুর্দান্ত রান আউট করেন গুজরাটের অধিনায়ক। উইকেটও পান। মনে হচ্ছিল, বৃহস্পতিবার যাতে হাত দিচ্ছেন, তা সোনায় পরিণত হচ্ছে। সেইসবের মধ্যে হার্দিকের ফিটনেস নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
ঠিক কী হয়েছিল? কোনওরকম সমস্যা ছাড়াই ১৮ তম ওভারে তিনটি বল করেন হার্দিক। দ্বিতীয় বলে আউট করেন জিমি নিশমকে। কিন্তু চতুর্থ বল করার সময় দৌড় শুরু করেও থেমে যান। তারপর মাঠ ছেড়ে চলে যান। তাঁর ওভার শেষ করেন বিজয় শংকর। দেখা যায়, ডান পায়ের উরুর কাছে যেন অস্বস্তি হচ্ছে হার্দিকের। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট লেগেছে বলেও অনেকে আশঙ্কা করতে থাকেন। যদিও ম্যাচের শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজেই সেই উদ্বেগ দূর করেন হার্দিক। তিনি বলেন, ‘স্রেফ টান (ক্র্যাম্প) ধরেছিল। গুরুতর কোনও বিষয় নয়।’
হার্দিকের দুরন্ত পারফরম্যান্স
বৃহস্পতিবার টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন।চোটের জন্য শেষমুহূর্তে ট্রেন্ট বোল্ট ছিটকে গেলেও ভালো শুরু করেন রাজস্থানের বোলাররা। ১৫ রানে দু’উইকেট পড়ে যায় গুজরাটের। কিন্তু সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি রাজস্থান। বরং ক্রমশ আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন হার্দিক।
শুভমন গিল আউট হয়ে গেলেও নিজের ছন্দ ধরে রাখেন গুজরাটের অধিনায়ক। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কিছুটা ধরে খেললেও বৃহস্পতিবার রাজস্থানের বোলারদের রেয়াত করেননি। তাঁকে যোগ্যসংগত করেন অভিনব মনোহর (২৮ বলে ৪৩ রান) এবং ডেভিড মিলার (১৪ বলে অপরাজিত ৩১ রান)। হার্দিক নিজে ৫২ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৯২ রান তোলে গুজরাট।
(মুহূর্তের মধ্যে আইপিএলের যাবতীয় আপডেট পেতে চান? ক্লিক করুন এখানে)
রান তাড়া করতে নেমে বিধ্বংসী শুরু করেন জস বাটলার। এতটাই বিধ্বংসী ছন্দে ছিলেন যে দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে যখন দেবদূত পাডিক্কাল আউট হন, তখন রাজস্থানের স্কোর ছিল এক উইকেটে ২৮ রান। তাতে একটি মাত্র বল খেলেন পাডিক্কাল। তারপর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে পাঠায় রাজস্থান। সেই চাল খুব একটা ব্যর্থ হয়নি। এক রান করে নিয়ে বাটলারকে স্ট্রাইক দিতে থাকেন অশ্বিন। বাকি কাজটা বাটলার করতে থাকেন। সেই জুটি ভাঙেন লকি। সাত রান পরেই দুর্ধর্ষ স্লোয়ার বলে বাটলারকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) প্রাক্তন তারকা। নিজের আগের বলের থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার কম গতিবেগে বলটা করেন। বাটলার স্রেফ বুঝতেই পারেননি। তখন রাজস্থানের স্কোর ছিল ছ’ওভারে তিন উইকেটে ৬৩ রান।
সেই পরিস্থিতিতে জয়ের জন্য সঞ্জু এবং রাসি ভ্যান ডার দাসেনের দিকে তাকিয়ে ছিল রাজস্থান। কিন্তু হার্দিকের দুর্ধর্ষ থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান সঞ্জু। এমন থ্রো করেন হার্দিক যে স্টাম্পই ভেঙে যায়। সেখান থেকে ম্যাচে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে রাজস্থান। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ন’উইকেটে ১৫৫ রানের বেশি তুলতে পারেননি সঞ্জুরা।
ম্যাচের সেরা
ব্যাটে ৫২ বলে অপরাজিত ৮৭ রান, ২.৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে এক উইকেট এবং দুর্ধর্ষ রান আউটের সুবাদে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন হার্দিক। তবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন লকি। যিনি চার ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। ভালো বল করেন রশিদ খানও। কোনও উইকেট না পেলেও চার ওভারে মাত্র ২৪ রান দেন।
For all the latest Sports News Click Here