‘এই ছবিটা আইরাকেই উত্‍সর্গ করা’, কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন নিয়ে অকপট সৃজিত 

অতিমারী বাড়িয়েছে অপেক্ষা, অবশেষে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। প্রথমে জানা গিয়েছিল এদিন বক্স অফিসে সৃজিত বনাম সৃজিত ম্যাচ, তবে না শেষ মুহূর্তে প্ল্যান পালটেছে টিম ‘সাবাশ মিঠু’। তবে নির্দিষ্ট দিনে রুপোলি পর্দায় প্রসেনজিৎ-সৃজিতের পার্টনারশিপ আবারও দেখবার সুযোগ পাচ্ছে দর্শক। কাকাবাবুর নতুন অভিয়ানের জন্য চার বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করছে ভক্তরা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবু সমগ্রের ‘জঙ্গলের মধ্যে হোটেল’ উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এসভিএফ প্রযোজিত এই ছবি। মুক্তির আগে সূদূর মুম্বই থেকে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে টেলিফোনে আড্ডা দিলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। 

করোনা-মুক্ত হয়েই আবার কাজে ফেরা। ব্যস্ততার ফাঁকে সৃজিত মুখোপাধ্যায় কেমন আছে?




সৃজিত: এখন ভালো আছি। দুটো ছবি পোস্ট প্রোডাকশন একসঙ্গে চলছে। কাজে থাকলে আমি ভালোই থাকি। এইটুকুই বলব। 

লম্বা অপেক্ষার পর অবশেষে বড় পর্দায় কাকাবাবু আসছে, ‘কাকাবাবুর প্রত্যার্বতন’-এ বাঙালি নতুন কী চমক পাবে?

সৃজিত: এটা ট্রিলজির তৃতীয় অংশ। মরুভূমি, পাহাড় হয়ে এখন আফ্রিকার জঙ্গলে এসে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এতো বেশি জীবজন্তু নিয়ে বাংলায় অন্তত সিনেমা হয়নি। ভিএফএক্সের মাধ্যমে তৈরি নয় আমি অরিজিন্যাল জীবজন্তুর কথা বলছি কিন্তু, এটাই কাকাবাবুর প্রত্যার্বতনের ইউএসপি। যদি বাচ্চারা হলে যায় তবে তাহলে তাদের খুব ভালো লাগবে। আমি জানি না এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পরিবার সিনেমা হলে যাবেন কিনা, তবে যদি যায় তবে ছোটরা খুব আনন্দ পাবে। 

আফ্রিকার জঙ্গল নিয়ে বাঙালি বরাবরই নস্টালজিক, কতটা রোমহর্ষক ছিল জীবজন্তুর সঙ্গে শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা?

সৃজিত: কেনিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্যুটিং হয়েছে। জিরাফ, জেব্রা, সাপ, হাতি থেকে গণ্ডার, সিংহ, চিতা- সব ধরণের জীবজন্তুই রয়েছে। শ্যুটিং করা তো খুবই বিপজ্জনক ছিল, কিছু জন্তু হয় যাদের প্রশিক্ষক হয় না। যেমন গণ্ডার, হায়না। তাই আমাদের একদম বন্য জন্তু নিয়েই শ্যুটিং করতে হয়েছে। হাতি আর গণ্ডারের একটা সিকুয়েন্স আছে, বইতেও রয়েছে সেটা। ওই দৃশ্যে কাকাবাবু ও সন্তু হাতি আর গণ্ডারের মাঝে আটকা পড়েছে। একদিকে গণ্ডারের কোনও প্রশিক্ষক ছিল না, আর অন্যদিকে হাতি বেশ চার্জ করেছিল এবং ওরা বুম্বাদা আর আরিয়ানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। সেটা বেশ রোমহর্ষক ঘটনা, সাপ আর সিংহের সঙ্গে শ্যুটিংটাও খুব রোমহর্ষক। নানান ঘটনা রয়েছে, আর এই বিপজ্জনক ঘটনাগুলোই গল্পের থ্রিলিং কোশেন্ট বাড়িয়ে দেবে।

মাসাইমারা জঙ্গলে হয়েছে ছবির শ্যুটিং (সৌজন্যে এসভিএফ)
মাসাইমারা জঙ্গলে হয়েছে ছবির শ্যুটিং (সৌজন্যে এসভিএফ)

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পার্টনারশিপ নিয়ে কী বলবে?

সৃজিত: বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করা মানে বাড়ি ফিরে ডিমসেদ্ধ-আলুসেদ্ধ ভাত নিয়ে বসা। বুম্বাদা মানে চেনা কমফোর্টজোন গোছের, যেহেতু আমাদের বোঝাপড়াটা এতোটাই ভালো যে অনেককিছু রয়েছে যেটা নতুন করে একে অপরকে বলতে হয় না। সেটা আমরা বুঝে যাই। 

১২ বছর পর ফ্রাই়ডে রিলিজের আগে এখনও কী ভয় লাগে? নাকি সৃজিত মুখোপাধ্যায় এখন অনেক বেশি কনফিডেন্ট? 

সৃজিত: ফ্রাইডে রিলিজের আগে ভয় তো লাগে না, তবে ছবি নিয়ে উত্তেজনাটা রয়েছে। নতুন ছবি মানেই তো ফের প্যাড-গ্লাভস পরে ব্যাট করতে যাওয়ার মতো। যেদিন ওই উত্তেজনাটা থাকবে না সেদিন আর ছবি বানাবো না। 

টলিউড থেকে বলিউড, ফিল্ম থেকে ওয়েব সিরিজ- সবেতেই বিরাজমান সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এতো মাল্টিটাস্কিং করছো কী করে?

সৃজিত: আমি বরাবরই ওয়ার্কোহলিক। আমি দিনে ১৮ থেকে ২০ ঘন্টা কাজ করি। আমার একটা খুব স্ট্রং, ভালো টিম আছে। তাদের সবার কম্বিনেশনে এই সব কাজগুলো হচ্ছে। খিদেটা আছে এখনও। আমার মনে হয় ভালো কাজ নিয়ে এই খিদেটা জরুরি যে কোনও মানুষের পথ চলবার জন্য। এটা যেদিন বন্ধ হয়ে যাবে সেদিন কাজ আর করব না, ওইদিন থেকে আই উইল টেক ইট ইজি।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বাড়বাড়ন্ত কি আঞ্চলিকতার বিভেদ মুছে দিচ্ছে? বাংলা ছবির পরিসর কি আরও বাড়িয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম?  

সৃজিত: একদম। এটা ওটিটি বিপ্লবের সবচেয়ে বড়দিক। আঞ্চলিকতার বিভেদ মুছেছে। সবচেয়ে বড় কথা বম্বে হয়ত বুঝতে পেরেছে বম্বের বাইরে মূলত সাউথে বেশি ভালো কাজ হচ্ছে। সাবটাইটেল পড়ে ছবি দেখবার অভ্যাস বেড়েছে। সাবটাইলেটের বাধা অতিক্রম করলে একটা বিশাল পৃথিবী আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, সেই পৃথিবীটা ভারতের নিজের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ওটিটির সুবাদে এখন স্টার-এর সংজ্ঞাটাও বদলেছে। এখন অনেক অভিনেতা যাঁরা এতদিন নিজেদের প্রাপ্য সম্মান পাননি, সেটা ওটিটির সুবাদে তাঁরা পাচ্ছেন, অনেক বেশি সমাদৃত হচ্ছেন। এটাই ওটিটি রেভেলিউশনের সবচেয়ে বড় দিক। 

কাকাবাবুর নতুন অভিযান নিয়ে কী কিছু ভাবছো? নাকি ট্রিলজিতেই শেষ?

সৃজিত: আপতত একটা ট্রিলজি শেষ। এখন একটু জিরোব। সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ালাম। প্রথমে চলে গেলাম মিশর, সেখান থেকে আল্পস, তারপর কেনিয়ার মাসাইমারার জঙ্গলে। এবার একটু রেস্ট নেব, তারপর আবার শুরু করব। 

তুমি শুরুতেই বললে এই ছবিতে ছোটদের জন্য অনেক কিছু থাকছে, ট্রেলার দেখে মেয়ে কী বলল? আইরাকে নিয়ে হলে যাবে তো? 

সৃজিত: অবশ্যই। ও তো ভীষণ এক্সাইটেড ট্রেলার দেখে। ইনফ্যাক্ট এই ছবিটা আইরাকেই উত্সর্গ করা। এবং আইরার মতো হাজার হাজার ছোট ছেলেমেয়েরা যাঁরা চাঁদের পাহাড় পড়ে এবং লায়ন কিং দেখে বড় হয়েছে এই ছবিটা তাঁদের জন্য। অবশ্যই ছবিটা ওকে দেখাতে নিয়ে যাব। 

দর্শকদের জন্য কী বার্তা দেবে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়?

সৃজিত: বাংলা ছবির নিরিখে এটা খুব দুঃসাহসিক ছবি। আমাদের খুব সীমিত রিসোর্সের মধ্যে এই ছবিটা তৈরি করা। ছবিটা আসলে ১১দিনে শ্যুট করা, আমাদের সাহিত্যের বিশাল সম্ভার থেকে যে বিশাল স্বপ্ন আমাদের লেখকরা দেখেছেন তা চিত্রিত করবার চেষ্টা করেছি, পাশে থাকলে ভালো লাগবে। 

 

 

 

For all the latest entertainment News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.