উনি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান- সেলিম দুরানির মৃত্য়ুতে গভীর শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
ভারতীয় ক্রিকেটে ইতি হয়ে গেল একটি অধ্যায়ের। প্রয়াত সেলিম দুরানি। ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কিছু খেলোয়াড় রয়েছেন, যারা নিজেদেরকেও ছাপিয়ে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে সেলিম দুরানি অন্যতম। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সেলিম দুরানি জাতীয় দলের হয়ে প্রায় ১৪ বছর প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
৮৮ বছরের সেলিম দুরানি রবিবার সকালে তার জামনগরের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বহু দিন ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সেলিম আজিজ দুরানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, ‘সেলিম দুরানিজি একজন ক্রিকেট কিংবদন্তি ছিলেন। তিনি নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান ছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থানের পিছনে ওঁর বড় অবদান রয়েছে। মাঠের ভিতরে এবং বাইরে, তিনি তাঁর স্টাইলের জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমি ব্যথিত। তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য সমবেদনা। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।’
আরও পড়ুন: আশঙ্কা ছিলই, শেষ পর্যন্ত 2023 IPL থেকে ছিটকেই গেলেন উইলিয়ামসন, জানিয়ে দিল GT
প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাটের সঙ্গে সেলিম দুরানির দৃঢ় সম্পর্কের কথাও বলেছেন। মোদী যোগ করেছেন, ‘সেলিম দুরানিজির গুজরাটের সঙ্গে খুব পুরনো এবং দৃঢ় বন্ধন ছিল। তিনি কয়েক বছর সৌরাষ্ট্র ও গুজরাটের হয়ে খেলেছেন। গুজরাটেই নিজের বাড়ি বানিয়েছিলেন। আমি ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পেয়েছি এবং ওঁর বহুমুখী ব্যক্তিত্ব দ্বারা গভীর ভাবে প্রভাবিত হয়েছি। ওঁকে অবশ্যই মিস করব।’
সেলিম দুরানির জন্ম আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে। তিনি ১৯৩৪ সালের ১১ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে তাঁর বেড়ে ওঠা মূলত গুজরাটের জামনগরেই। এখানেই তাঁর ক্রিকেটে হাতেখড়ি। ১৯৬০ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় সেলিম দুরানির। জাতীয় দলের হয়ে ১৯৭৩ পর্যন্ত খেলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ম্যাচ টাই, সুপার ওভারে ধ্যাড়ালো নিউজিল্যান্ড, বাজিমাত লঙ্কার
বর্ণময় ক্রিকেট জীবন তাঁর। ১৯৬০ সালে মুম্বইয়ে টেস্ট অভিষেক। ১৯৬১-৬২ মরশুমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে অবদান ছিল বাঁ-হাতি স্পিনারের। শেষ ২ টেস্টে নিয়েছিলেন ১৮ উইকেট। ১৯৭১ সালে পোর্ট অফ স্পেনে ভারতের জয়েও রেখেছিলেন অবদান। আউট করেছিলেন ক্লাইভ লয়েড ও গ্যারি সোবার্সকে। তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের হাত ধরে পরের বছর মধ্যাঞ্চল দলীপ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে ফাইনালে বল হাতে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। আর ব্যাট হাতে রান তাড়া করার সময়ে নেতৃত্ব দিয়ে অপরাজিত থেকেছিলেন ৮৩ রানে। চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল, এটা দলীপ ট্রফি, নাকি দুরানি ট্রফি!
টেস্ট দলে একবার তাঁকে বাদ দেওয়ায় স্লোগান উঠেছিল, ‘নো দুরানি, নো টেস্ট’। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরের টেস্টে তাঁকে ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্বাচকেরা। এমনই ছিল তাঁর জনপ্রিয়তা। আর ছিল গ্ল্যামার। জনতার দাবিতে, ৬-৭ বার ছক্কা হাঁকানোর কথা অতীতে বহু বার বলেছিলেন দুরানি নিজেই। যা তাঁকে করে তুলেছিল বিখ্যাত। তবে তার অনেক আগে, ছয়ের দশকের গোড়াতেই প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পেয়েছিলেন অর্জুন সম্মান।
২৯ টেস্টে এক সেঞ্চুরি সহ ১২০২ রান আর ৭৫ উইকেটের পরিসংখ্যানে তাই তাঁকে মাপা শুধু কঠিনই নয়, আদতে অসম্ভবই। ক্রিকেট-চেতনায় প্রভাব ফেলার ব্যাপারটাই যে পরিসংখ্যানে অনুপস্থিত!
For all the latest Sports News Click Here