‘আরও বেশি লোক আমায় চিনবেন’, ফের শেষ বলে KKR-কে জিতিয়ে ট্রোলিংয়ের জবাব রিঙ্কুর
শেষ বলে জেতাতে হবে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (কেকেআর)? ‘রিঙ্কু সিং হ্যাঁ না।’ এবার আইপিএলে যেন সেটাই লিখিত নিয়ম হয়ে গিয়েছে। সোমবার ইডেন গার্ডেন্সেও সেটার ব্যতিক্রম হল না। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে শেষ বলে কেকেআরকে জেতালেন ‘আলিগড়ের বাদশা’ রিঙ্কু (১০ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকলেন)। সেইসঙ্গে আইপিএলে নাইট ব্রিগেডের আশা বাঁচিয়ে রাখলেন। আর সেই ম্যাচে জেতানোর পর একেবারে প্রণোচ্ছ্বল হাসি লেগে থাকল রিঙ্কুর মুখে। যে ছেলেটাকে গতবারও ট্রোলিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল, ‘ওয়াটারম্যান’ বলে কটাক্ষ করা হত, সেই সহজ-সরল ছেলেটা সোমবার ম্যাচের শেষে হাসিমুখে বললেন, ‘ম্যাচের আগে বলেছিলাম যে মানুষ আমায় কিছুটা চিনে গিয়েছেন। ম্যাচ জেতার (জেতানো বলা উচিত ছিল রিঙ্কু, জেতানো বলা উচিত ছিল) পর আরও বেশি লোক চিনে যাবেন।’
সোমবার পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ১৮০ রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় রীতিমতো চাপে ছিল কেকেআর। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে কেকেআরের জয়ের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দেন নাইট অধিনায়ক নীতীশ রানা। তারপর পঞ্চম উইকেটে আন্দ্রে রাসেল এবং রিঙ্কুর জুটিতে ম্যাচে ঘুরে যায়। বিশেষত ১৯ তম ওভারে ২০ রান তুলে ম্যাচটা নিজেদের দিকে নিয়ে চলে আসে কেকেআর। স্যাম কারানের ওই ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন রাসেল।
সেই পরিস্থিতিতে জয়ের জন্য শেষ ওভারে কেকেআরের দরকার ছিল ছয় রান। কিন্তু বাউন্ডারি আসছিল না। তারইমধ্যে পঞ্চম বলে রান-আউট হয়ে যান রাসেল (২৩ বলে ৪২ রান)। অর্থাৎ প্রথম বলে কোনও রান হয়নি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে এক রান হয়। চতুর্থ বলে দু’রান হয়। পঞ্চম বলটা ব্যাটে ঠেকাতে পারেননি রাসেল। তাও এক রান চুরি করে নিতে গিয়ে রান-আউট হয়ে যান।
আরও পড়ুন: KKR vs PBKS: ফের সুপারহিট RRR, শেষ বলে চার মেরে কলকাতাকে ম্যাচ জেতালেন রিঙ্কু
রাসেল আউট হয়ে যাওয়ার ফলে শেষ বলে দু’রান বাকি ছিল কেকেআরের। সেই অবস্থায় একেবার ‘কুল’ রিঙ্কু চার মেরে কেকেআরকে জিতিয়ে দেন। ডিপ ফাইন লেগ এবং ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ারের লেগের মাঝখান দিয়ে বলটা বাউন্ডারিতে চলে যায়। পাঁচ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় কেকেআর। তারপরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন রিঙ্কু। যিনি এবারের মরশুমে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছেন। জেতাচ্ছেন কেকেআরকে। গুজরাট টাইটানসের বিরুদ্ধে তো শেষ পাঁচটি বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে জিতিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: KKR vs PBKS: ‘সমর্থকদের রিঙ্কু-রিঙ্কু বলে চিৎকার করতে শুনে গর্ব হয়’, বারবার ম্যাচ জেতানো ‘ছোট ভাইকে’ কুর্নিশ রানার
রিঙ্কু সিংয়ের পুরো সাক্ষাৎকার
– হর্ষ ভোগলে: শেষ বলের আগে কি তোমার মাথায় এটা ছিল যে এখানে বল এলে এখানে মারব, ওখানে বল এলে ওখানে মারব?
– রিঙ্কু সিং: না, না, স্যার, এরকরম কোনও বিষয় ছিল না। এরকম কিছু ভাবিনি। যেরকম বল ছিল, সেরকমই খেলেছি। যখন পাঁচটি ছক্কা মেরেছিলাম, তখন যেমন চিন্তাভাবনা ছিল, এবারও সেরকম ছিল।
– হর্ষ: একটা দারুণ বিষয় ছিল। আন্দ্রে রাসেল যে বলে রান-আউট হল, তখন কি তোমায় স্ট্রাইক দেওয়ার জন্য রানটা নেওয়া হয়েছিল? কারণ অন্যপ্রান্তে ও রাসেল বড় শট মারছিল। এতটা ভরসা ছিল তোমার উপর।
– রিঙ্কু: না, না, (লাজুকভাবে)। আমায় মাথায় এটা ছিল যে বলটা উইকেটে না লাগলে ম্যাচ টাই হয়ে যেত। তাই এক রান নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাসেল কিছুটা দেরিতে দৌড় শুরু করে। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমি এই কাজটা করতে পারব। বলটা আসার আগেও সেটাই ভাবছিলাম যে আমি এই ম্যাচটা শেষ করতে পারব। এরকম ম্যাচ আমি আগেও শেষ করেছি।
– হর্ষ: রিঙ্কু সিংয়ের কি কখনও এটা মনে হয় যে রানটা বেশি আছে। সময় কম আছে (বল কম আছে)। আজকাল এরকম লাগে কখনও?
– রিঙ্কু (লাজুক হাসি): না, না, এখন তো অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। কারণ এরকম জায়গায় ব্যাট করতে নেমে থাকি – পাঁচ, ছয় বা সাত নম্বরে। কখনও আগে ব্যাট করতে নামি। ওরকমভাবেই অনুশীলন করি।
– হর্ষ: কীভাবে (জয়) উদযাপন কর?
– রিঙ্কু: স্পেশাল কিছু নয় স্যার। যেরকম থাকি, সেরকমই করি।
– হর্ষ: না, না, সত্যিটাই বলে দাও। এটা তো বিশাল বড় ম্যাচ ছিল। শেষ বল পর্যন্ত ম্যাচ গড়িয়েছিল।
– রিঙ্কু (হাসতে-হাসতে): আপনি তো দেখেছেন। শুধু দৌড়াতে থাকি। বড়সড় কিছু উচ্ছ্বাস প্রকাশ করি না।
– হর্ষ: আর একটা বিষয়। আজ তো তুমি দারুণ খেলেছ। কিন্তু আগামিদিনে তোমায় দেখে অনেকেই প্রেরণা জোগাবে যে তারাও এভাবে খেলবে।
– রিঙ্কু: একদম, একদম। আমি এটাই বলতে চাই যে কঠিন পরিশ্রম করে যাও। সাফল্য মিলবে।
(IPL 2023: আইপিএল সংক্রান্ত যাবতীয় টাটকা খবর ও আপডেটের জন্য হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার স্পেশাল পেজে – ক্লিক করুন এখানে, তাহলেই প্রবেশ করবেন আইপিএলের দুনিয়ায়)
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)
For all the latest Sports News Click Here