আমেরিকায় অসম্মানিত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী-জয়তীরা, চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগ
মার্কিন মুলুকে শো করতে গিয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু কে জানত গিয়েই এমন বিপদে পড়বেন। হোটেল থেকে শুরু করে খাবার, গাড়ি, সাউন্ড চেক- প্রতি পদে পদে অব্যস্থার মধ্যে পড়েন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, জয়তী চক্রবর্তীর মতো শিল্পীরা। তাঁরা বিপদে পড়লেও অন্যতম আয়োজক অভীক দাশগুপ্ত নামক এক ব্যক্তির দেখা মেলেনি। একদিকে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী যখন ক্ষুব্ধ হয়ে মেইল করেন আরেক আয়োজককে তখন অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ এসে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জয়তী। বাংলার অন্যান্য শিল্পীরা এই ঘটনা জানার পর থেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী তাঁর মেইলে লেখেন ‘আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি। যবে থেকে আমি আমেরিকায় পৌঁছেছি তবে থেকেই অত্যন্ত অসম্মানের মুখোমুখি হয়েছি। আমি জানি না ৭১ বছরে এসে কেন এই শোয়ের জন্য রাজি হলাম। অভীক দাশগুপ্ত যিনি আমাকে এই শোতে আনার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি আমি এখানে আসার পর একবার দেখা করার প্রয়োজনবোধটুকু করেননি। অসম্ভব ভুলভাল টাইমিং তো ছেড়েই দিলাম আমি ভাবিনি সেখানে আমাদের জন্য কোনও গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে না, দুপুরের খাবার আসবে বিকেল ৪টেয় তাও আমরা বাইরে থেকে খাবার কেনার পর! হোটেলের ঘরে পর্যন্ত ঢুকতে পারিনি আমরা। বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছে।’ তিনি ক্ষোভ উগড়ে আরও লেখেন, ‘যেখানে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী আমায় এত সম্মান দেন, ভারতের সব থেকে প্রবীণ শিল্পী আমি সেখানে আমায় নিয়ে গিয়ে এমন অপমান! আমি আমার প্রাপ্য টাকাটুকু পাইনি। এবার বলুন আমার কী করণীয়?’
অজয় চক্রবর্তীর মেইলের স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এটা শেয়ার করে লেখেন, ‘ভারতের সিনিয়রমোস্ট কিংবদন্তি শিল্পীকে যদি এমন চিঠি লিখতে হয়, তাহলে বেঙ্গলি কনফারেন্স করে লাভ কি? এই অসম্মানটুকু পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর প্রাপ্য বুঝি! বাঙালি আর কত নীচে নামবে?’
অন্যদিকে এদিন জয়তী চক্রবর্তী লাইভে এসে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাঁকে সাধারণত সবাই ভীষণ ঠান্ডা, চুপচাপ বলেই জানত। কিন্তু গোটা ঘটনায় তিনি এতটাই বীতশ্রদ্ধ যে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে তিনি এই লাইভ করতে বাধ্য হন। জানান ‘আমাদের ৫ তারিখ পর্যন্ত হোটেল বুকিং আছে বলে জানানো হয়েছে কিন্তু আজ সকাল (৪ জুলাই, যদিও সমস্যা শুরু তার আগে থেকে হয়েছে বলেই জানান) থেকে আমরা আমাদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। বিকেল ৪টে বেজে গেলেও আমাদের খেতে দেওয়া হয় না। এক পরিচিত কেএফসি থেকে খাবার এনে দেওয়ার পর ওঁরা খাবার দেন। আমাদের এক শিডিউল, টাইম বলে নিয়ে আসা হয়েছিল, এখানে এসে পুরোটাই চেঞ্জ করে দেওয়া হয়। আমরা অনেকেই আমাদের নিজেদের ঘরে ঢুকতে পারিনি। পরে সৌগত দা এসে আমাদের কিছু শিল্পীকে উদ্ধার করেন এই পরিস্থিতি থেকে। আমি আজ নিজের চোখে পণ্ডিতজির যে অসম্মান দেখলাম সেটা মানতে পারছি না। আমাদের যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা হয়েছিল তার দায় কে নেবে?’
আরও বহু শিল্পীই এদিন এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে আমেরিকার এই সংস্থার, এই বেঙ্গলি কনফারেন্সকে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন।
For all the latest entertainment News Click Here